শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
পূরবী জেনারেল ইনসু্যরেন্স

টানা বোনাস শেয়ার আর্থিক দুর্বলতার লক্ষণ

নতুনধারা
  ০৮ জুন ২০১৯, ০০:০০

যাযাদি রিপোর্ট

পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পূরবী জেনারেল ইনসু্যরেন্স ২০০৮ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে বিনিয়োগকরীদের ১০ শতাংশ বা তার বেশি লভ্যাংশ দিয়ে আসছে। তবে গত ১১ বছরে বেসরকারি এ সাধারণ বীমা কোম্পানিটি থেকে কোনো নগদ লভ্যাংশ পায়নি বিনিয়োগকারীরা।

বছরের পর বছর ধরে পূরবী জেনারেল ইনসু্যরেন্সের শুধু বোনাস শেয়ার ঘোষণাকে সন্দেহের চোখে দেখছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের মতে, লভ্যাংশ হিসেবে টানা বোনাস শেয়ার ঘোষণা আর্থিক দুর্বলতার লক্ষণ। যেহেতু দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শুধু বোনাস লাভ্যাংশই দিচ্ছে কোম্পানিটি সেহেতেু আদৌ নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা আছে কি-না সে বিষয়ে যথেষ্ট সন্দেহ থেকে যায়। বিষয়টি নিয়ন্ত্রক সংস্থার খতিয়ে দেখা উচিত।

তারা বলছেন, সাধারণত হাতে পার্যপ্ত অর্থ না থাকলে কোম্পানি বিনিয়োগকারীদের খুশি করতে লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দিয়ে থাকে। কিন্তু বোনাস শেয়ার দেয়ার ফলে কোম্পানির দায় বাড়তে থাকে। এতে ভবিষ্যতে লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা ধীরে ধীরে কমে যায়। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে শেয়ার প্রতি আয় ও সম্পদ মূল্যের ওপর। ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. বখতিয়ার হাসান বলন, লভ্যাংশ দেয়া বা না দেয়া কোম্পানির বিষয়। কোনো কোম্পানি যদি নগদ লভ্যাংশ না দেয় বা কোনো লভ্যাংশই না দেয় তাহলে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কিছু করার থাকে না।

তিনি বলেন, কোনো কোম্পানি যদি বছরের পর বছর ধরে লভ্যাংশ হিসেবে শুধু বোনাস শেয়ার দেয় তাহলে বুঝতে হবে কোম্পানিটির নগদ লভ্যাংশ দেয়ার সক্ষমতা নেই। লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়ার কারণে একদিকে কোম্পানির দায় বাড়ে, অন্যদিকে বাড়ে শেয়ার সংখ্যা। ফলে ভবিষ্যতে কোম্পানির পক্ষে নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করা আরও কঠিন হয়ে পড়ে।

তথ্য পর্যালোচনায় দেখা যায়, ২০০৮, ০৯, ১১, ১২ এবং ২০১৬ সালে পূরবী জেনারেল ইনসু্যরেন্স বিনয়োগকারীদের লভ্যাংশ হিসেবে ১০ শতাংশ করে বোনাস শেয়ার দিয়েছে। বাকি বছরগুলোর মধ্যে লভ্যাংশ হিসেবে ২০১০, ১৩ ও ১৪ সালে ১৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়। এ ছাড়া ২০১৫ এবং ২০১৭ সালের ১২ শতাংশ করে বোনাস লভাংশ দেয়া হয়।

এভাবে বছরের পর বছর লভ্যাংশ হিসেবে শুধু বোনাস শেয়ার দেয় পূরবী জেনারেল। সর্বশেষ ২০১৮ সালেও লভ্যাংশ হিসেবে ১২ শতাংশ বোনাস শেয়ার দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। এরপরও প্রায় এক মাস ধরে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বাড়ছে।

ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, গত ৩০ এপ্রিল কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ছিল ১৩ টাকা ১০ পয়সা। যা অনেকটা টানা বেড়ে ৩০ মে লেনদেন শেষে দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ৭০ পয়সায়। অর্থাৎ এক মাসে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ছয় টাকা ৬০ পয়সা বা ৫০ দশমিক ৩৮ শতাংশ। এ বিষয়ে ডিএসইর এক সদস্য বলেন, বছরের পর বছর ধরে শুধু বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দেয়া কোম্পানির শেয়ার দাম হঠাৎ এমন বাড়া অস্বাভাবিক। এই দাম বাড়ার পেছনে কোনো চক্র আছে কি-না তা সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) ক্ষতিয়ে দেখা উচিত।

তিনি আরও বলেন, লভ্যাংশ হিসেবে বোনাস শেয়ার দেয়ার বিষয়ে সম্প্রতি বিএসইসি কড়াকড়ি আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তালিকাভুক্ত কোম্পানি ব্যবসা সম্প্রসারণ, সুষমকরণ, আধুনিকীকরণ, পুনর্গঠন ও বিস্তার এবং কোম্পানির গুণগতমানের উনয়ন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ কারণ ছাড়া বোনাস শেয়ার ঘোষণা করতে পারবে না বলে কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<52519 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1