শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

অনলাইন ভ্যাট নিবন্ধন হঠাৎ অ্যানালগ!

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৯, ০০:০০

ই-টিনের মতো অনলাইনে ভ্যাটের ব্যবসায় শনাক্তকরণ নম্বর (বিআইএন) পাওয়া যেত সহজেই। তবে হঠাৎ করে আগের সকল বিআইএন বাতিল করে পুনরায় সকল ব্যবসায়ীকে অনলাইনে আবেদন করতে বলেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর)। তবে অনলাইনে আবেদন করা হলেও সহসায় মিলছে না ভ্যাট সার্টিফিকেট।

যাদের ভ্যাট নিবন্ধন আছে তাদেরও নতুন করে আবার নিবন্ধন করতে হবে। নতুন নির্দেশনায় ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে নিবন্ধন করা প্রতিষ্ঠানগুলোকে পুনরায় ভ্যাট নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে বলা হয়েছিল। এরপর সময় বাড়িয়ে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত সময় বর্ধিত করা হয়। তবে ভ্যাট নিবন্ধন করতে গিয়ে গ্রাহক হয়রানির নানা খবর পাওয়া যাচ্ছে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা বলছেন, আগে অনলাইনে যে বিআইএন নিবন্ধন করলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ইমেইলে সার্টিফিকেট চলে আসত সেটা এখন আর আসছে না। দৃশ্যত ডিজিটাল সেবা হলেও ভ্যাট নিবন্ধন পেতে গ্রাহক ছুটছে অ্যানালগ অফিসে। সেখানে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। এই নিয়ে এনবিআর কার্যালয়েও অভিযোগের পাহাড় জমা হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কিছু গ্রাহক কাছে অভিযোগ করে বলেন, অনলাইনে ভ্যাট নিবন্ধন করতে হলে টিনসহ যাবতীয় কাগজপত্র আপলোড করে সাবমিট করলে আন্ডার রিভিউ করে এরপর মেইলে সার্টিফিকেট পাঠানো হয়। কিন্তু এখন অ্যাপিস্নকেশন জমা পরার পরেও তারা ফোন দেয় না।

অভিযোগকারী বলেন, আবেদন করার পর আমার যে জোনাল সেই জোনালে আবেদনটি চলে যায়। আমি ভ্যাট নিবন্ধন পাবো কিনা সেটা তারা নির্ধারণ করে। এরপর জোনাল অফিসে গেলে তারা নানান জটিলতা দেখায়। ফাইল আটকিয়ে রাখে। অনলাইনে যেসব ডকুমেন্ট সাবমিট করা হয়েছে তা আবার হার্ড কপি চায়। বাড়ি ভাড়ার কপিও চায়। যদিও আবেদনে এই কপির বিষয়ে অনলাইনে কিছু নেই। যারা ঘুষ দিচ্ছে না তাদেরটা পেন্ডিং করে রাখা হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, ভ্যাটের নিবন্ধন নিয়ে সম্প্রতি এনবিআর বেশ কিছু অভিযোগ পেয়েছে। অভিযোগগুলোর বেশির ভাগই হলো অনলাইনে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তর জন্য আবেদন করার পর ভ্যাট অনলাইন সিস্টেম থেকে প্রাপ্ত নোটিফিকেশনের অনুলিপি ও আবেদন সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র ভ্যাট কার্যালয়ে গিয়ে নিবন্ধন করানো সংক্রান্ত।

এনবিআরের ভাষায়, এটি অনভিপ্রেত ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এনবিআরের ওই নির্দেশনায় বলা হয়েছে, নিবন্ধন নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনো কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ হলে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবে এনবিআর।

এনবিআর বলছে, সব কাগজপত্র ঠিক থাকলে তিন দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে ই-মেইলে নিবন্ধন বা তালিকাভুক্তর বিষয়টি নিশ্চিত করবেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ভ্যাট অনলাইন প্রকল্পের কর্মকর্তারা। তবে আবেদন বিধিসম্মত না হলে ভ্যাট কর্মকর্তারা কারণ জানিয়ে তিন দিনের মধ্যে আবেদনকারীকে জানিয়ে দেবেন।

অনলাইনে আবেদনের পর অনুমোদন পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট ভ্যাট কার্যালয়ে সরেজমিনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই বলেও নির্দেশ দিয়েছে এনবিআর। তবে কেউ স্বেচ্ছায় ভ্যাট কার্যালয়ে গেলে কর্মকর্তারা সহযোগিতা করবেন।

নতুন ভ্যাট আইনে ইবিআইএন ছাড়া ভ্যাট রিটার্ন দেয়া যাবে না। ফলে কেউ আর পুরনো বিআইএন ব্যবহার করতে পারবেন না। নতুন ভ্যাট আইনে কোনো প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক লেনদেন ৫০ লাখ টাকার কম হলে ভ্যাট দিতে হবে না। তাই নিবন্ধনও নিতে হবে না।

এনবিআরের সর্বশেষ হিসাব অনুসারে, গত ৩০ জুন পর্যন্ত সারাদেশে ১ লাখ ৭১ হাজার ৫২৭টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ইবিআইএন নিয়েছে। এর মধ্যে ঢাকার চারটি ভ্যাট কমিশনারেটেই আছে ১ লাখের মতো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। সবচেয়ে কম ৭ হাজারের কিছু বেশি প্রতিষ্ঠান সিলেট ভ্যাট কমিশনারেটে নিবন্ধিত হয়েছে। আর চট্টগ্রাম বিভাগে আছে ১৯ হাজার ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান। পুরনো আইনের আওতায় সব মিলিয়ে সাড়ে ৮ লাখ প্রতিষ্ঠান ভ্যাট নিবন্ধন নিয়েছিল। সব মিলিয়ে বছরে গড়ে ৬০ হাজার প্রতিষ্ঠান ভ্যাট রিটার্ন দিত।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<65704 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1