শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

অর্থপাচার রোধে সব দেশকে সঙ্গে চান অর্থমন্ত্রী

নতুনধারা
  ১৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে রোববার 'অর্থপাচার রোধে জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৯-২১' শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল -যাযাদি

যাযাদি রিপোর্ট

প্রত্যেকটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য অর্থপাচার সবচেয়ে বড় বাধা উলেস্নখ করে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, মুদ্রা পাচার কোনো দেশের একার সমস্যা নয়। এ সমস্যা সমাধানে কোন দেশের একক প্রচেষ্টায় ফলাফল পাওয়া সম্ভব নয়। জাতীয় স্বার্থেই বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশকে অর্থপাচার রোধে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

রোববার রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে 'অর্থপাচার রোধে জাতীয় কৌশলপত্র ২০১৯-২১' শীর্ষক সেমিনারে এসব কথা বলেন তিনি। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন অর্থমন্ত্রী। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও অর্থ মন্ত্রণালয় যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে।

অর্থমন্ত্রী বলেন, এটি একটি জাতীয় সমস্যা। এটা মানবজাতি এবং পুরো অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেয়। যেকোনোভাবে আমরা এদেশকে আর্থিক শত্রম্নমুক্ত করবোই বলে জানান মন্ত্রী।

সেমিনারে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, একটি উন্নয়নশীল দেশের জন্য সবচেয়ে বড় বাধা দুর্নীতি। তাদের মধ্যে অন্যতম হলো অর্থপাচার। অর্থপাচার রোধে প্রত্যেকটি দেশকেই সতর্ক থাকা প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। এজন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতার কোনো বিকল্প নেই।

তিনি বলেন, ধর্মীয় মূল্যবোধকে ব্যবহার করে বাংলাদেশে সন্ত্রাসে অর্থায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। প্রবাসীদের ভুলভাল বুঝিয়ে টাকাটা দেশে আনার চেষ্টা করা হয়েছিল। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মধ্যে বিশেষত সিঙ্গাপুরের সরকারের সাথে যোগাযোগ করে এই অর্থায়ন করতে সক্ষম হয়েছি আমরা। শুধু সিঙ্গাপুর নয় অর্থ পাচার রোধে বিশ্বের প্রত্যেকটি দেশকে এবং একে অপরের সহযোগিতা করা দরকার।

পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, এসব অভিজ্ঞতার পাশাপাশি কিছু সফলতার গল্পও আছে। একইভাবে সিঙ্গাপুরেও টাকা সংগ্রহ করে বাংলাদেশে জঙ্গি অর্থায়নের চেষ্টা করা হয়েছিল। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সে সমস্যার সমাধান করা গেছে। ফলে সিঙ্গাপুরে থাকা এক লাখ বাঙালি এসব থেকে সরে এসেছে।

সেমিনারে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ওভার ইনভয়েসিং এবং আন্ডার ইনভয়েসিং এর মাধ্যমেই মূলত টাকা পাচার হয়। অর্থপাচারের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দায়ী করে তিনি বলেন, এক্ষেত্রে সবাই একে অপরের সাথে তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে সহযোগিতা করে। তাই অপরাধীদের চিহ্নিত করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। এখন পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ২০৪০টি অপরাধী শনাক্ত করে তার সমাধান করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সংঘটিত অপরাধের সংখ্যা এর চেয়ে অনেকগুণ বেশি। সুতরাং এ ধরনের অপরাধ সংঘটিত হওয়ার আগেই প্রতিরোধ করার মতো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির বলেন, মানিলন্ডারিং হলো প্রাতিষ্ঠানিক অপরাধের অক্সিজেন। একটি দেশের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে হলে এটা প্রতিরোধ করা খুবই জরুরি।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সচিব আসাদুল ইসলাম বলেন, অর্থপাচার রোধ করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। আজকে প্রকাশিত এই কৌশলপত্রের মাধ্যমে অর্থপাচার প্রতিরোধ করা যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। তিনি বলেন, এজন্য বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট, বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয়, পুলিশ এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একত্রে কাজ করছে।

অনুষ্ঠানের শুরুতে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধে জাতীয় কৌশলপত্র উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের প্রধান আবু হেনা মোহাম্মদ হাসান চৌধুরী। ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত অর্থ পাচার রোধে মোট ১১টি কৌশল হাতে নেওয়া হয়েছে। যেগুলো বাস্তবায়ন করতে বাংলাদেশের বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা এবং কর্তৃপক্ষ একত্রে কাজ করবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<75996 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1