শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

তলানিতে ডলার বিক্রি

যাযাদি রিপোর্ট
  ১৯ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০

গত বছরের একই সময়ে ডলারের বাজার রমরমা থাকলেও বর্তমান খুবই মন্দা। বেসরকারি খাতের বিনিয়োগ উলেস্নখযোগ্যভাবে কমে আসায় ডলারের বাজারে নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি হয়েছে। নতুন অর্থবছরের শুরু থেকে সোমবার (১৮ নভেম্বর) পর্যন্ত মাত্র ২৪ কোটি ডলার বিক্রি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সংশ্লিষ্ট তথ্যমতে, গত অর্থবছরে (২০১৮-১৯) মোট ২৩৪ কোটি ডলার বিক্রি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। বেসরকারি খাতের আমদানি কমে যাওয়ায় ডলারের চাহিদা তলানিতে পৌঁছেছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, ধারাবাহিকভাবে কমছে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধি। চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাস শেষে বার্ষিক ঋণ প্রবৃদ্ধি নেমে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। এ হার ২০১০ সালের সেপ্টেম্বরের পর সর্বনিম্ন। ওই সময়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ৬ দশমিক ০৯ শতাংশ।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, ২০১৭ সালের মাঝামাঝি বেসরকারি খাতের ঋণ হু হু করে বাড়ছিল। সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে বেসরকারি খাতে সর্বোচ্চ ১৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ ঋণ প্রবৃদ্ধি হয় ২০১৭ সালের নভেম্বরে। ফলে ঋণপ্রবাহ নিয়ন্ত্রণে ২০১৮ সালের শুরুতেই ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) কিছুটা কমিয়ে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। তারপর থেকে ঋণ প্রবৃদ্ধি কমতে থাকে। এরপর কয়েক দফা এডিআর সমন্বয়ের সীমা বাড়ানো হলেও নানা কারণে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়ছে না। নিম্নমুখীর ধারা অব্যাহত আছে। তবে সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক এডিআর হার বাড়িয়ে পূর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নিয়েছে। তাই আগামীতে ঋণ প্রবৃদ্ধি বাড়বে বলে আশা করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৮ সালের আগস্টের তুলনায় চলতি বছরের (২০১৯) আগস্টে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১০ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এর আগে আগস্ট শেষে বেসরকারি ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১০ দশমিক ৬৮ শতাংশ। তার আগের মাস জুলাইয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি ছিল ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ; জুন মাসে ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ; মে মাসে ১২ দশমিক ১৬ শতাংশ; এপ্রিলে ১২ দশমিক ০৭ শতাংশ; মার্চে ১২ দশমিক ৪২ শতাংশ; ফেব্রম্নয়ারিতে ছিল ১২ দশমিক ৫৪ শতাংশ এবং জানুয়ারিতে ১৩ দশমিক ২০ শতাংশ।

এদিকে সেপ্টেম্বর মাস শেষে বেসরকারি খাতে বিতরণ করা ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ১৬ হাজার ৬৯৭ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময় শেষে ঋণ ছিল ৯ লাখ ১৮ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এ হিসাবে এক বছরে ঋণ বেড়েছে ৯৭ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা। এর আগে আগস্ট মাসে ঋণস্থিতি ছিল ১০ লাখ ৭৩ হাজার ৯৮০ কোটি টাকা।

কেন্দ্রীয় ব্যাংকের দ্বিতীয়ার্ধের মুদ্রানীতিতে জুন নাগাদ বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন করা হয়েছিল ১৬ দশমিক ৫০ শতাংশ। কিন্তু এর বিপরীতে ঋণ প্রবৃদ্ধি হয়েছে মাত্র ১১ দশমিক ২৯ শতাংশ, যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অনেক কম। এর আগে প্রথমার্ধে গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৬ দশমিক ৮০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ধরা হলেও অর্জিত হয় মাত্র ১৩ দশমিক ৩০ শতাংশ।

অন্যদিকে উচ্চ গতিতে বাড়ছে ব্যাংক খাত থেকে সরকারি ঋণপ্রবাহ। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ব্যয় নির্বাহ করতে ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নেওয়ার হার বেড়েছে সরকারের। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী রাজস্ব আদায় না হওয়ার কারণে দিন দিন এ চাপ বাড়ছে। নতুন অর্থবছরের প্রথম চার মাসে ব্যাংকিং খাত থেকে ৩৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা ঋণ নিয়েছে সরকার। সরকারি ঋণের চাপে বেসরকারি ঋণে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে বলে মত বিশ্লেষকদের।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাসে (জুলাই-অক্টোবর) সরকার ব্যাংকিং খাত থেকে ঋণ নিয়েছে ৩৩ হাজার ৫৮৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকেই ঋণ নিয়েছে ২৬ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকা। এ সুবাদে অক্টোবর পর্যন্ত ব্যাংকিং খাত থেকে সরকারের পুঞ্জীভূত ঋণের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৪১ হাজার ৬৮৩ কোটি টাকা।

এদিকে টাকার বিপরীতে আবারও বাড়ল মার্কিন ডলারের দাম। গতকাল রোববার থেকে এক ডলারে দাম বেড়েছে ৫ পয়সা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখন বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে প্রতি ডলার বিক্রি করছে ৮৪ টাকা ৮০ পয়সা দরে, যা এক বছর আগের তুলনায় ৪ টাকা বেশি। গত বছর একই সময়ে এক ডলারের দাম ছিল ৮০ টাকা ৮০ পয়সা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<76146 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1