সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্ব কাঁপাচ্ছে 'বিটিএস'

জাহাঙ্গীর বিপস্নব
  ২২ জুন ২০২৩, ০০:০০
'বিটিএস' পরিবার

রাজধানীর পশ্চিম রামপুরার ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী আরশিয়া জান্নাত। ক্লাস ফোর থেকেই 'বিটিএস'-এর পাগল ভক্ত। এই দলের প্রায় প্রতিটি গানই এক প্রকার মুখস্থ তার। বর্তমানে এই ছাত্রীর মুঠোফোনে ভিডিও গ্যালারিতে কেবল জাংকুক, জিমিনদের গান। বিটিএস ব্যান্ডের দলগত গানের পাশাপাশি প্রতিটি সদস্যের কবে কোন গান প্রকাশ পাবে, তারও প্রতিনিয়ত খোঁজখবর রাখে জান্নাত। এমনকি কার কবে জন্মদিন, সেটাও তার অজানা নয়। স্কুলের অনেক শিক্ষার্থীও দলটির প্রতিটি গান ভীষণ পছন্দ করে।

শুধু রামপুরা নয়, রাজধানীসহ গোটা বাংলাদেশের কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণীর কাছে বিটিএস যেন উন্মাদনার আরেক নাম। আর দলটির ভক্তদের বলা বিটিএস আর্মি। বাংলাদেশের মতো সারা বিশ্বেই এখন আলোড়িত দক্ষিণ কোরিয়ার এই পপ ব্যান্ড দলটি। এরই মধ্যে দলটি ও দলের সদস্যরা আলাদা আলাদাভাবে গিনেস বুকসহ বিভিন্ন রেকর্ড গড়েছে। একাধিক বিশ্ব রেকর্ড থেকে বিলবোর্ড দাপট, এমনকি জাতিসংঘ অব্দি পৌঁছে গেছে তাদের উপস্থিতি।

শুধু কী তাই, গত বছর শেষ দিকেই 'মোস্ট সার্চ' তালিকা তৈরি করা বিশ্বের সর্বাধিক ব্যবহৃত সার্চ ইঞ্জিন গুগলে শীর্ষে চলে আসে 'বিটিএস'র নাম। সেখানে প্রথম দুটি স্থান দখল করেছেন দলটির দুই সদস্য ভি ও জাংকুক।

যদিও এটাকে মোটেও বিস্ময়কর মনে করেননি কেউ। কারণ বিশ্বজুড়ে 'বিটিএস'র জনপ্রিয়তা যে হারে বেড়েছে, তাতে এটাই স্বাভাবিক ছিল। বিশেষ করে চলমান ফিফা বিশ্বকাপের থিম সংয়ে কণ্ঠ দিয়ে তো গোটা দুনিয়ার মন জিতে নিয়েছেন জাংকুক। শুধু এই দুজনই নয়, তালিকায় দেখা গেছে 'বিটিএস'র সবার নাম। ষষ্ঠ স্থানে ব্যান্ডটির জিমিন, ১৪তম স্থানে সুগা, ২০তম স্থানে জিন, ২৭তম স্থানে আরএম, ২৯তম স্থানে জিসু, ৩০তম স্থানে রোজ এবং ৩৬তম স্থানে রয়েছে জে হোপ।

বিশ্ব মাতানো কোরিয়ান পপ ব্যান্ড বিটিএস গঠিত হয় ২০১০ সালে। কয়েকজন উঠতি তরুণ মিলে প্রতিষ্ঠা করে দলটি। এর তিন বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ জুন তাদের প্রথম অ্যালবাম প্রকাশ হয়। সম্প্রতি পথচলার ১০ বছর পেরিয়ে ১১ বছরে পদার্পণ করেছে বিটিএস। ১০ম বছর পূর্তি উপলক্ষে ৯ জুন 'টেক টু' শিরোনামে একটি গান প্রকাশ করে তারা। গানটির প্রযোজনায় যুক্ত রয়েছেন সুগা, সুর করেছেন আরএম ও জে হোপ। বিটিএসের অন্যতম সদস্য হিসেবে বিশ্বজুড়ে পরিচিতি পেয়েছেন গায়ক জিমিন জাংকুক। ফিফা বিশ্বকাপের অফিসিয়াল থিম সং গেয়ে নিজের শক্ত অবস্থান তৈরি করে নিয়েছেন বিটিএসের সর্বকনিষ্ঠ এই সদস্য। এবার ভক্তদের জন্য দারুণ একটি খবর জানা গেল। জাংকুক নিজের প্রথম একক অ্যালবাম নিয়ে আসছেন। জাংকুকের অ্যালবামটি আগামী ১৪ জুলাই প্রকাশিত হবে। অন্য ভাষার গানের পাশাপাশি এতে একটি ইংরেজি গানও থাকবে। বিষয়টি নিয়ে স্পষ্ট ঘোষণা না দিলেও ইঙ্গিত দিয়েছে বিটিএসের এজেন্সি বিগহিট মিউজিক। এর আগে বিটিএসের জে হোপ, জিন, আরএম, জিমিন ও সুগা একক গান ও অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। জাংকুকও এবার একক অ্যালবাম বের করার জন্য তাদের দলে যোগ দিলেন।

ব্যান্ডের এক দশক পূর্তি উপলক্ষে 'বিটিএস ফেস্ট'-এর আয়োজন করে বিটিএস। সিউলে এ আয়োজনে বিটিএসের ভক্তরাও উপস্থিত ছিলেন।

'বিটিএস'র প্রধান সদস্য কিম নামজুন। যিনি আরএম নামে ভক্তদের কাছে পরিচিত। এক দশক পূর্তিতে তিনি বলেছেন, 'এই পথচলায় অনেক ঝড়বৃষ্টি ছিল এবং ছিল ভালোবাসাও। আমরা নিজস্ব জগৎ তৈরি করেছি, যেটা অন্য কেউ সম্ভবত বুঝতে পারবে না।' ব্যান্ডটির অন্যতম সদস্য জিমিন একটি খোলা চিঠি দিয়েছেন ভক্তদের উদ্দেশে। সেখানে লিখেছেন, 'আমি তোমাদের আগেও কয়েকবার বলেছি, কোনো নির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই কাউকে ভালোবাসা এবং উৎসাহ দেওয়া সহজ নয়। এ কারণেই আমি বুঝতে পারি, আমরা কতটা তোমাদের খুশি করতে পেরেছি। তোমরা, যারা আমাদের এই উৎসাহ দিয়েছ, তোমাদেরও উচিত আনন্দ এবং ভালোবাসা গ্রহণ করা। বুঝতে পেরেছ হয়তো? আর্মি, যাদের প্রতি আমি কৃতজ্ঞ; চলো অনেক অনেক সময় ধরে আনন্দে থাকি।' আরেক সদস্য কিম তায়েয়ুং তথা ভি একটু ভিন্নভাবে শুভেচ্ছা বিনিময় করেছেন। তিনি বিটিএস'র বিভিন্ন গানের কিছু বিহাইন্ড দ্য সিন শেয়ার করেছেন। আর বললেন, 'আমাদের আত্মপ্রকাশের ১০ বছর হয়ে গেছে। ১০ বছর ধরে পাশে থাকা এবং সুন্দর স্মৃতি তৈরি করার জন্য ধন্যবাদ আমাদের সদস্যদের।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে