বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১
ওবায়দুল কাদেরকে আব্দুল কাদের মির্জার সতর্ক বার্তা

ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হলে ‘উনাকে’ দায়িত্ব নিতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার, নোয়াখালী
  ১২ জানুয়ারি ২০২১, ২০:৫৪
ভোট নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হলে ‘উনাকে’ দায়িত্ব নিতে হবে

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার বসুরহাট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আব্দুল কাদের মির্জা আগামী ১৬ জানুয়ারি অনুষ্ঠিতব্য নির্বাচনে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করে এ ব্যাপারে নিজ বড় ভাই দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরকে সতর্ক বার্তা দিয়েছেন। স্থানীয় সংসদ সদস্য হিসেবে পৌরসভা নির্বাচনে কোনো প্রকার অনিয়ম বা গোলযোগ হলে এর দায়দায়িত্ব ওবায়দুল কাদেরকে নিতে হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি। একই সঙ্গে কোম্পানীগঞ্জের সন্তান হিসেবে নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত হোসেনেরও দায়িত্ব এড়ানোর সুযোগ নেই বলে মন্তব্য করেন আব্দুল কাদের মির্জা। মঙ্গলবার বিকেলে পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডে অনুষ্ঠিত কর্মী সমাবেশে তিনি এই মন্তব্য করেন।

এ সময় আব্দুল কাদের মির্জা বলেন- ‘একটা কতা বলে দিয়ের (একটা কথা বলে দিচ্ছি) যদি রক্ত ঝরে, কোনো মানুষ মারা যায়, কারো বাড়িঘর জ্বালায়, ভোট নিয়ে কোনো ছিনিমিনি খেলা হয়, তাহলে এর দায়িত্ব কাকে নিতে হবে? ওবায়দুল কাদের সাব এই এলাকার মন্ত্রী-এমপি, আাঁর ভাই অইলেও (আমার ভাই হলেও) উনাকে প্রথম নিতে হবে। আমি ঝুট কথা বলি ন- ঝুট কথা বলি রাজনীতি আমি করি না, যেতে যা মনে করে উনাকে প্রথম নিতে হবে। এক নাম্বর বলি দিয়েন (জানিয়ে দেবেন)- সাবধান করি দিয়েন (সাবধান হবে বলবেন)। দুই নম্বর অইল (হচ্ছে) নির্বাচন কমিশনার শাহাদাত সাব (সাহেব)। আঁইজা আইবার কতা আছিল আইয়েন এগাইন চিন্তা করিয়েন (আজকে আসবার কথা ছিল আসেননি, এসব চিন্তা করে দেখবেন)। হেইমিয়ারে নিতে অইবো দায়িত্ব, হেইমিয়া দায়িত্ব এড়াইবার কোনো সুযোগ নাই (উনাকে নিতে হবে দায়িত্ব, উনি দায়িত্ব এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই)। তার পরে নোয়াখালীর ডিসি, এসপি, নির্বাচন অফিসার হেতাগোরে (তাদেরকে) দায়িত্ব নিতো অইবো (নিতে হবে)। ওবায়দুল কাদের নোয়াখালী-৬ (কোম্পানীগঞ্জ-কবিরহাট ও সদর পূর্বাঞ্চল) থেকে ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪, ২০১৮ সালের নির্বাচনে মোট চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।

এর আগে সকাল ১০টায় ৮ নম্বর ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন আয়োজিত কর্মী সভায় মেয়র প্রার্থী আবদুল কাদের মির্জা বলেন-‘ওবায়দুল কাদের সাহেব তার চাকরের সামনে বলে আমি না কি স্বঘোষিত মেয়র প্রার্থী। তারপর আঞ্চলিক উচ্চারণে ভাইয়ের কথার উদ্ধৃতি দেন ‘এতে তো আঁর জোরে এগাইন কয়’ (সে তো আমার জোরে এগুলো বলে)। এগুলো আপনার (ওবায়দুল কাদের) সম্মানহানি হচ্ছে।’

এ সময় তিনি বলেন- ‘ডিসি, এসপি, নির্বাচন অফিসার এরা বুকড। এখানে ১০% ভোট অনিয়ম করার সুযোগ আছে। পোলিং অফিসার প্রিজাডিং অফিসার দিয়েছে সবগুলো জামাত, বিএনপির। একটাও আওয়ামী লীগের নয় এবং হিন্দু যেটা দিয়েছে সেগুলোও হিন্দু রাজাকার। এগুলো সব পরিকল্পিতভাবে চলছে ঢাকা থেকে কিছু নেতা সহ। ওবায়দুল কাদের সাহেব কিছু বলেন না।’

এ সময় আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেনকে উদ্দেশ করে আব্দুল কাদের মির্জা বলেন- ‘সাংগঠনিক সম্পাদক, হেতে যেই কতা কইছে এইটা দলের জন্যও ক্ষতিকর। ‘যে মির্জা কাদেরতো ওবায়দুল কাদেরর ভাই হিসেবে কতা কয়, নইলে কতা কইতো হাইত্তো নি’। কইছেনি? কর্মীরা উত্তর দেয় ‘জী’। তাইলে আঁই ওবায়দুল কাদেরের ভাই হিসেবে কইছি হেইটা আঁই মাইনছি, তাইলে অইন্যরা কইতো হাইত্তো ন’? কইলে টোঁডা চিবি ধইরবো। এইটা বুঝায় ন’?

আব্দুল কাদের মির্জা আরও বলেন, ‘বিদেশে গিয়ে মদ, নারী, জুয়া এগুলো, তাদের কাজই হলো এটা। টাকা কার? পাবলিকের ট্যাক্সের টাকা। লুটপাট করে নিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর কথা বললে আমাদের বড় বড় নেতারা আঁতকে ওঠে। এটা কি রাজনীতি? তিনি বলেন- ‘শেখ হাসিনা, হামিদ সাহেব ছাড়া আর কোন কোন নেতা ভালো আছে? আর কে ভালো বলে তিনি আবার বলেন, আছেন কয়েকজন ভালো, ভালো না থাকলে চলবে কেমন করে। তবে এ দুজন ভালো। শেখ হাসিনা যা করছেন তা বিরল, ধ্বংস করে দিচ্ছে এই শালারা শেখ হাসিনার সমস্ত অর্জন।’

হামিদ সাহেব বিরোধী দল থাকতেও এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। ঠিক না? এটা খেয়াল রাখবেন। কত জনপ্রিয়তা থাকলে, কত ভালো মানুষ হলে হয়েছেন।’

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে