শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

মাস্ক পরার ক্ষেত্রে উদাসীনতা শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে

নতুনধারা
  ১৫ জুন ২০২০, ০০:০০

সারা বিশ্বে মহামারি হয়ে ছড়িয়ে পড়া করোনাভাইরাস প্রতিরোধে লকডাউনের চেয়েও সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো মাস্ক ব্যবহার করা। কারণ করোনাভাইরাস মূলত বাতাসে ড্রপলেটস বা মুখ থেকে নিঃসৃত মিহি জলকণার মাধ্যমে ছড়ায়। আর মাস্ক ব্যবহার করলে ব্যক্তি থেকে ব্যক্তি সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় বলে নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে। ১১ জুন প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল একাডেমি অব সায়েন্সেসে এই গবেষণাবিষয়ক নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। তাতে বলা হয়েছে, গবেষকরা ইতালি ও নিউইয়র্কে করোনা রোধে মাস্ক ব্যবহার করা বাধ্যতামূলক করার আগে ও পরের করোনা সংক্রমণের হারের তুলনা করেছেন। সেখানে দেখা গেছে, দুই জায়গায়ই মানুষ বাধ্যতামূলকভাবে মাস্ক ব্যবহারের পর থেকে সংক্রমণ কমতে শুরু করেছে। মাস্ক ব্যবহারের কারণেই ইতালিতে গত ৬ এপ্রিল ও ৯ মে ৭৮ হাজারের বেশি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা গেছে। আর ১৭ এপ্রিল ও ৯ মে নিউইয়র্কে ৬৬ হাজারের বেশি করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধ করা গেছে। ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিকে করোনার বিস্তার প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হলো, ঘরের বাইরে মাস্ক ব্যবহার করা। ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত এর পাশাপাশি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা, কোয়ারেন্টিন ও কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করে কোভিড-১৯ এর প্রতিরোধে কাজ করে যেতে হবে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের হাঁচি বা কাশির মাধ্যমে সামনে থাকা মানুষের কাছে সরাসরি করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবার মানুষের হাঁচি-কাশি থেকে বের হওয়া ড্রপলেট বাতাসে ভাসতে ভাসতে নিচে পড়ে যায়। ছোট্ট এই ড্রপলেটকে বলে অ্যারোসল। এই অ্যারোসল মানুষের পায়ে পায়ে বা বাতাসে নানা জায়গায় ঘুরে বেড়ায়। পরে তা মানুষের শরীরে প্রবেশ করে। তাই মাস্ক পরা জরুরি।

দুঃখজনক বাস্তবতা হচ্ছে, আমাদের দেশের জনগণ মাস্ক পরার ব্যাপারে একেবারেই উদাসীন। সরকারি নির্দেশনা থাকা সত্ত্বেও তারা তা মানছে না। মাস্ক পরা ছাড়া যে যার মতো ঘুরে বেড়াচ্ছে। রাস্তায় বের হলেই এই ধরনের দৃশ্য চোখে পড়ে। ফলে বিপদ বাড়ছে। আমরা মনে করি সরকারকে এ ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা উচিত। যারা মাস্ক না পরে বাইরে বের হবে, তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

\হমনে রাখতে হবে বাংলাদেশ এখন সংক্রমণের শীর্ষ পর্যায়ে রয়েছে। দেশে গতকাল পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ৮৭ হাজার ৫২০ জন এবং মারা গেছে ১ হাজার ১৭১ জন। অন্যদিকে এই ভাইরাস প্রাদুর্ভাবের উৎসস্থল চীনে মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৮৪ হাজার ২২৮ জন। চীনে মারা গেছে সাড়ে চার হাজার। চীনের তুলনায় বাংলাদেশে মৃতু্যহার ৭৫ ভাগ কম হলেও আক্রান্তের দিক থেকে দুদিন আগেই চীনকে ছাড়িয়ে গেছে। চীনে প্রাদুর্ভাবের তিন মাস পর বাংলাদেশে নতুন করোনাভাইরাসের প্রথম রোগী ধরা পড়েছিল ৮ মার্চ, তার ১০ দিনের মাথায় প্রথম মৃতু্যর খবর আসে।

দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে ভারত ও পাকিস্তানে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা বাংলাদেশের বেশি। বৈশ্বিক তালিকায় চতুর্থ স্থানে থাকা ভারতে ৩ লাখের বেশি আক্রান্তের মধ্যে মারা গেছে প্রায় ৯ হাজার জন। পাকিস্তানে আক্রান্ত ১ লাখ ৩২ হাজারের মধ্যে মৃতু্য হয়েছে আড়াই হাজার জনের। বাংলাদেশে আক্রান্ত বিবেচনায় মৃতের হার ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ। আমরা যদি আক্রান্ত ও মৃতু্য কমিয়ে আনতে চাই তা হলে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। পাশাপাশি মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে হবে। এ ছাড়া অন্য বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<102474 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1