শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

এক-পঞ্চমাংশ মানুষ বেশি ঝুঁকিতে

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ১৮ জুন ২০২০, ০০:০০

করোনা মহামারি সারাবিশ্বের জন্য এক ভয়ংকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে। বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা, বাড়ছে মৃত্যের সংখ্যাও। এ ছাড়া জীবন-জীবিকার প্রয়োজনে বিভিন্ন দেশে লকডাউন শিথিল করার কারণে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধির আশঙ্কাও করা হচ্ছে। এমন অবস্থায় জানা গেল, বিশ্বের প্রায় ১৭০ কোটি বা এক-পঞ্চমাংশ মানুষের অন্তত একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা আছে- যা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য যে, ব্রিটিশ এক মেডিকেল জার্নালে প্রকাশিত নিবন্ধে এসেছে এমন তথ্য। ল্যানসেট গেস্নাবাল হেলথে সোমবার প্রকাশিত ওই গবেষণায় বলা হয়েছে, ইউরোপের মতো তুলনামূলকভাবে বেশি বয়স্ক মানুষের অঞ্চলে এবং আফ্রিকার মতো এইচআইভি/এইডসের উচ্চ প্রবণতার অঞ্চলে করোনাভাইরাস মহামারির ঝুঁকি বেশি।

আমরা বলতে চাই, একদিকে হু হু করে বাড়ছে করোনার সংক্রমণ এবং এই ভাইরাসের কারণে বিশ্বের মানুষের জীবন ব্যবস্থাই বাধাগ্রস্ত হয়েছে, অন্যদিকে যখন এমন তথ্য সামনে আসছে যে, ১৭০ কোটি বা এক-পঞ্চমাংশ মানুষের অন্তত একটি দীর্ঘস্থায়ী স্বাস্থ্য সমস্যা আছে- যা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হলে তাদের গুরুতর অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বাড়িয়ে দিতে পারে- তখন এই বিষয়টি আমলে নিয়ে বিশ্ব নেতৃত্ব ও সংশ্লিষ্টদের কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। আমলে নেওয়া দরকার, জনস হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব অনুযায়ী, বিশ্বে ৮০ লাখের বেশি মানুষের মধ্যে করোনাভাইরাস শনাক্ত করা গেছে। মারা গেছে ৪ লাখ ৩৬ হাজারের বেশি। এ ছাড়া বিভিন্ন দেশের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে, মৃতদের সিংহভাগই বয়স্ক মানুষ। প্রসঙ্গত উলেস্নখ করা দরকার, ১৮৮টি দেশের উপাত্ত বিশ্লেষণ করে গবেষকরা ধারণা পেয়েছেন, বিশ্বে সত্তরোর্ধ্ব জনসংখ্যার ৬৬ শতাংশ ডায়াবেটিস, হৃদরোগ বা ফুসফুসের রোগের মতো কোনো না কোনো দীর্ঘমেয়াদি রোগে ভুগছেন। তারা নতুন করোনাভাইরাসের সংস্পর্শে এলে অনেক বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। অন্যদিকে কাজ করতে সক্ষম এমন বয়সিদের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি রোগ আছে ২৩ শতাংশের। আর ২০ বছরের কম বয়সিদের ক্ষেত্রে তা ৫ শতাংশ।

আমরা বলতে চাই, সামগ্রিকভাবে এই তথ্যগুলো পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে করোনার সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতি গ্রহণের পাশাপাশি, অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও যে কতটা জরুরি তা আমলে নেওয়া সমীচীন। বাংলাদেশে সংশ্লিষ্টদেরও বিষয়টি ভাবতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। মনে রাখা দরকার, এর আগে এমন বিষয়ও উঠে এসেছিল যে, করোনা পরিস্থিতিতে দেশে জটিল ও অন্যান্য রোগের চিকিৎসায় বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং এর পরিপ্রেক্ষিতে উদ্যোগী হতে হবে। এ ছাড়া বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ মানুষ বেশি ঝুঁকিতে আছে, এমন বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য সমস্যা থাকা মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিতে অথবা ভবিষ্যতে টিকা দেওয়ার জন্য তাদের অগ্রাধিকারের বিষয়টিও আলোচনায় আসছে। উলেস্নখ্য, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এবং যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেনের স্বাস্থ্য দপ্তরগুলো থেকে তথ্য নিয়ে গবেষকরা ১১টি ক্যাটাগরিতে দীর্ঘমেয়াদি রোগগুলোকে ফেলেছেন- যেগুলো থাকলে কোভিড-১৯-এ যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন। অটোইমিউন ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত ব্যক্তিরাও এই তালিকায় আছেন, যারা নিয়মিত ইমিউনোসাপ্রেসিভ ওষুধ খান। কেমোথেরাপির মতো চিকিৎসা নেওয়া রোগীরাও তালিকায় আছেন। আর এ গবেষণায় যে ধারণা পাওয়া গেছে, তাতে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে বিশ্বের প্রায় ৪ শতাংশ মানুষ বা প্রায় ৩৪ কোটি মানুষের হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হতে পারে।

সঙ্গত কারণেই আমরা বলতে চাই, গবেষণা ও তথ্য আমলে নিয়ে এটা স্পষ্ট যে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সমাজিক দূরত্ব নিশ্চিত করা, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলাসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসাও নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ পুরো চিকিৎসা ব্যবস্থার স্বাভাবিকতা জরুরি। আমরা মনে করি, দীর্ঘমেয়াদি রোগের যে বিষয় সামনে আসছে- যা থাকলে কোভিড-১৯ এ যে কেউ গুরুতর অসুস্থ হতে পারেন- এটি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। ফলে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে সর্বাত্মক প্রস্তুতি অব্যাহত রাখার পাশাপাশি চিকিৎসা ব্যবস্থার স্বাভাবিকতা বজায় রাখতেও সর্বাত্মক প্রচেষ্টা জারি রাখতে হবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<102810 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1