শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হবে

নতুনধারা
  ০৪ ডিসেম্বর ২০২০, ০০:০০

যতই দিন যাচ্ছে সড়ক নিরাপত্তা অনিশ্চিত হয়ে পড়ছে। সড়ক নিরাপত্তা একটি চ্যালেঞ্জ বলে উলেস্নখ করে সড়ক পরিবহণ, সেতুমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, রাজধানীর সঙ্গে পুরো দেশের যোগাযোগ নিরবচ্ছিন্ন রাখা ও সড়ক নিরাপত্তা বিধান একটি চ্যালেঞ্জ। আমরাও তাই মনে করি। তিনি যখন এ কথা বলেছেন, একই সময়ে এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিদায়ী নভেম্বর মাসে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৪৪৩টি দুর্ঘটনায় ৪৮৬ জন নিহত ও ৭৪১ জন আহত হয়েছে। একই সময় রেলপথে ৫০টি দুর্ঘটনায় ৫২ জন নিহত ও ১৩ জন আহত হয়েছে। নৌ-পথে ৬টি দুর্ঘটনায় ৩ জন নিহত ও ২০ জন আহত এবং ৪ জন নিখোঁজের সংবাদ পাওয়া গেছে। সড়ক, রেল ও নৌ-পথে সম্মিলিতভাবে ৪৪৯টি দুর্ঘটনায় ৫৩৯ জন নিহত ও ৭৭৪ জন আহত হয়েছে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। এ ঘটনা নিঃসন্দেহে উদ্বেগজনক।

পরিসংখ্যানে দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, এ মাসে মোট সংঘটিত দুর্ঘটনার ৫১ দশমিক ১ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ২২ দশমিক ৫৭ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১ দশমিক ৮৯ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়। এছাড়াও সারাদেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ২ দশমিক ৪৮ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১ দশমিক ১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরীতে ও শূন্য দশমিক ৯০ শতাংশ রেলক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়। কোনোভাবেই রোধ করা যাচ্ছে না এ দুর্ঘটনা।

ওভারটেকিং এবং বেপরোয়া গতির ফলে এবং সড়ক নিরাপত্তায় দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থাগুলোর স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম, দুর্নীতি ক্রমাগতভাবে বৃদ্ধি ও জবাবদিহিতার অভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বাড়ছে। সরকারের আন্তরিকতা ও বিগত নির্বাচনে রাজনৈতিক অঙ্গীকার থাকলেও বর্তমান সরকারের দুটি বাজেটে তার কোনো প্রতিফলন ঘটেনি। উন্নত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ট্রাফিক ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, লাইসেন্স ও গাড়ির ফিটনেস পদ্ধতি ঢেলে সাজানো ব্যতিরেকে সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব নয়। পাশাপাশি চালকদের বিশ্রামের বিষয়টিও ভেবে দেখতে হবে। অনেক চালক নেশাসক্ত, তারা সাবধানে গাড়ি চালায় না। ফলে দুর্ঘটনা বাড়ছে।

এটা সত্য, প্রতিদিনই দেশের কোনো না কোনো অঞ্চলে দুর্ঘটনায় মানুষ মারা যাচ্ছে। বিশেষ করে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃতু্যর বিভীষিকা থেকে কিছুতেই যেন রক্ষা নেই এ দেশের মানুষের। কিন্তু ভয়াবহ এ দুর্ঘটনাগুলো কেন হচ্ছে কারা এর জন্য দায়ী তা শনাক্ত করে দায়ীদের শাস্তি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মনোযোগ ও তৎপরতা চোখে পড়ছে না। দুর্ঘটনা প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করার কারণেই এর পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। যথাযথ পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই এ দেশের মানুষ আপনজন হারিয়ে চোখের পানি ঝরাচ্ছে আর নিঃস্ব হচ্ছে অসংখ্য পরিবার। অথচ কর্তৃপক্ষ এ ব্যাপারে কার্যকর উদ্যোগ নিলে দুর্ঘটনা রোধ করা সম্ভব। সরকারের পরিকল্পিত ও কার্যকর উদ্যোগই কেবল পারে সড়ক দুর্ঘটনা রোধ করতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে