শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
পাঠক মত

আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে

নতুনধারা
  ১৬ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

পথশিশু শব্দটি শুনলেই আমাদের হৃদয়পটে ভেসে ওঠে রাস্তার পাশে বা রেলস্টেশনের অসহায় শিশুগুলোর কথা। আমাদের দেশে সরকারিভাবে পথশিশুদের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও বিভিন্ন খন্ডিত গবেষণা ও জরিপে দেখা যায়, তাদের সংখ্যা প্রায় আড়াই থেকে চার লাখ। আর এ সংখ্যা প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। একটি দেশে পথশিশুর সংখ্যা বৃদ্ধির পেছনে দারিদ্র্য একটি বড় কারণ তাতে কোনো সন্দেহ নেই; কিন্তু সবসময়ই কি তাই? তাহলে বর্ধিষ্ণু অর্থনীতির দেশ ব্রাজিলে কেন এত পথশিশু? পাশাপাশি পারিবারিক জীবনে পিতামাতার মধ্যে কলহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, অপরিকল্পিত জন্মদানও এর পেছনে দায়ী। আমাদের দেশের অধিকাংশ পথশিশুই খাদ্য, বস্ত্র, নিরাপদ বাসস্থানসহ প্রায় সব ধরনের মৌলিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। নিরাপত্তা না থাকার কারণে প্রায়ই শিকার হচ্ছে শারীরিক ও যৌন নির্যাতনের। দু-মুঠো ভাতের অভাবে এরা জড়িয়ে যাচ্ছে ভয়ংকর ঝুঁকিপূর্ণ শিশুশ্রমের সঙ্গে। এসডিজি লক্ষ্যমাত্রায় ২০২৫ সালের মধ্যে শতভাগ শিশুশ্রম বন্ধের কথা রয়েছে এবং সরকার সেদিকে অনেকখানি এগিয়েছেও। যা আমাদের আশার আলো দেখায়। তবে একটি জায়গায় একটু বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া উচিত বলে মনে হয়, তা হলো আমাদের দেশে যতজন শিশু ঝুঁকিপূর্ণ শ্রমের সঙ্গে যুক্ত তাদের পুনর্বাসনসহ আর কোনো শিশু যাতে না আসতে পারে সেদিকে বিশেষ নজর রাখতে হবে। পথশিশুরা খুব সীমিত টাকা-পয়সা বা বঞ্চনার মধ্য দিয়েই বেড়ে ওঠে। তাই যখনই তারা কারও থেকে একটু আন্তরিকতা, ভালোবাসা বা টাকার প্রলোভন পায়, তখন তারা যেকোনো কিছু করতে পারে। তাই কিছু স্বার্থান্বেষী মহল এদের কাজে লাগিয়ে মাদক, চোরাচালানসহ অসংখ্য অনৈতিক কাজ করিয়ে নিজেদের ফায়দা হাসিল করে নিচ্ছে। যা আগামী বাংলাদেশের জন্য খুবই ভীতিকর। তার ওপর এখন মৃদু শীতের রেষকে উপেক্ষা করে মহামারি আর শঙ্কার উত্তাপ যেন পুরো পৃথিবীকে আচ্ছন্ন করে ফেলেছে। এ মুহূর্তে শিশুরা অল্পতেই অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। আর মাত্রাতিরিক্ত দূষিত ধোঁয়া ও ধুলাবালি শিশুদের নিউমোনিয়া ও ব্রঙ্কাইটিসের মতো ভয়ঙ্কর রোগের কারণ হতে পারে। এ করোনা মহামারিতে সুস্থ থাকতে হলে স্যানেটারি সচেতনতা খুব বেশি প্রয়োজন যা পথশিশুদের মধ্যে একদমই নেই। পাশাপাশি শীতকালীন রোগ-প্রতিরোধের জন্য যথেষ্ট ফলমূল, শাক-সবজি, ও সুষম খাদ্য খাওয়া প্রয়োজন। পথশিশুদের স্বাস্থ্যঝুঁকি কমানোর জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে স্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা দরকার। বাংলাদেশ সরকারের এ ব্যাপারে যথেষ্ট সদিচ্ছা আছে। তারা ইতিমধ্যে বেশ কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে। কিন্তু সরকারের এ যাত্রায় আমাদের সাধারণ জনগণকেও এগিয়ে আসতে হবে। পথশিশুদের বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তন করতে হবে। তাহলেই আমরা ক্ষুধামুক্ত বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়ে তুলতে পারব।

রেজওয়ান আহম্মেদ

শিক্ষার্থী

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

\হ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে