শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শীতে হতদরিদ্রদের দুর্ভোগ

কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে
নতুনধারা
  ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ০০:০০

শীতের প্রকোপে হতদরিদ্রের জীবনে নেমে এসেছে অবর্ণনীয় দুর্ভোগ। বিশেষ করে দেশের উত্তরাঞ্চলে শীত বেশ জেঁকে বসেছে। এতে করে স্বাভাবিকভাবেই বেশি দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে হতদরিদ্ররা। ঘন কুয়াশা, কনকনে শীত ও হিমেল হাওয়ায় কাহিল হয়ে পড়েছে হতদরিদ্র মানুষ- এমন খবর সামনে আসছে। আর এদের মধ্যে ছিন্নমূল-দিনমজুরও রয়েছেন। সঙ্গত কারণেই সৃষ্ট পরিস্থিতিতে করণীয় নির্ধারণ ও যথাযথ বাস্তবায়ন নিশ্চিত করা জরুরি। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না, শীতের এই সময়টাতে এমনিতেই নিম্ন আয়ের লোকজনের দুর্ভোগ বাড়ে। কেননা, শীত বস্ত্রের অভাবে খাদ্যাভাবে পর্যদুস্ত থাকে। এছাড়া বলা দরকার, এবার একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ অন্যদিকে শীতের তীব্রতা- ফলে পরিস্থিতি আরো বেশি আশঙ্কাজনক হয়ে উঠেছে। সঙ্গত কারণেই সংশ্লিস্নষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

এটাও আমলে নেওয়া সমীচীন, এমন তথ্য উঠে এসেছে যে, শীতে ঠান্ডাজনিত রোগে মৃতের সংখ্যা কম থাকলেও আক্রান্তের সংখ্যা অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে বিভিন্ন স্থানে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু বিভাগের ইনচার্জ বলেছেন, চলতি মাসের প্রথমদিন থেকে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত শীতজনিত রোগে শিশু আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এছাড়া শীতের দাপটে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছেন কর্মজীবী ও নিম্ন আয়ের মানুষ এমনটিও জানা গেছে। রাজশাহীতেও শীতের কারণে শিশু ও বৃদ্ধরাই বেশি ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে এমন তথ্য উঠে এসেছে। বিশেষ করে নিউমোনিয়া ও কোল্ড ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে অনেক রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছেন। ঠান্ডাজনিত রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে বলেও জানা যাচ্ছে।

আমরা বলতে চাই, যখন হতদরিদ্র মানুষ শীতে কাতরালেও শীতবস্ত্রের সরকারি বরাদ্দ অপ্রতুল এমন বিষয়ও সামনে আসছে, বিশেষ করে শীতবস্ত্রের অভাবে রাস্তাঘাটে পড়ে থাকা ছিন্নমূল ও চরাঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ চরমে উঠেছে- তখন সার্বিকভাবে এই পরিস্থিতি আমলে নিতে হবে। আমরা মনে করি, দেশে শীতের প্রকোপ বৃদ্ধির ফলে জীবনযাপনে যে দুর্ভোগ নেমে এসেছে- তা আমলে নিয়ে এর পরিপ্রেক্ষিতে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প থাকতে পারে না।

এটাও লক্ষণীয় যে, একদিকে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ মোকাবিলা করা, অন্যদিকে শীতার্ত জনগণের জন্য চিকিৎসাসেবাসহ সব কিছুর সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করা চ্যালেঞ্জের বিষয়। ফলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে দক্ষতার সঙ্গে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে হবে। বিশেষ করে কোভিড মহামারির এসব ভয়ংকর দিনে অতি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্টদের ত্বরিত ব্যবস্থা নিতে হবে। নতুবা নতুন একটি বিপর্যয় সামাল দিতে ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা থাকে- যা কোনোভাবেই কাম্য হতে পারে না।

প্রসঙ্গত, আমরা এটাও উলেস্নখ করতে চাই, এমন তথ্য উঠে আসছে যে, দেশে শীতের প্রকোপ আরও বাড়বে। এর কারণ ফের শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে যাচ্ছে। বুধবার সকালে এসব তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। শৈত্যপ্রবাহের ঘোষণা না দিলেও বুধবার কুড়িগ্রামের রাজারহাটে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড হয়েছে ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা মৃদু আকারে শৈত্যপ্রবাহ। এছাড়া উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের তাপমাত্রা শৈত্যপ্রবাহের কাছাকাছি রয়েছে বলেও জানা যায়। ফলে এটা স্পষ্ট যে, এসব অঞ্চলে এখনো বেশ শীত রয়েছে। শৈত্যপ্রবাহ শুরু হলে শীত আরও বেড়ে যাবে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে শীতের প্রকোপে জনজীবনের দুর্ভোগ ও ঠান্ডাজনিত রোগের বিষয়টি আমলে নিয়ে সর্বাত্মক উদ্যোগ গ্রহণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নের বিকল্প নেই। আমরা বলতে চাই, শীতের দাপট কমছে না, আর শীতের দাপট বেড়ে যাওয়ার পাশাপাশি বইয়ে চলা কনকনে ঠান্ডা বাতাসে কাঁপছে ছিন্নমূল মানুষ- এমন পরিস্থিতি এড়ানোর কোনো সুযোগ নেই। কেননা, শীতের তীব্রতায় স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে কোথাও কোথাও। কাজকর্মে নেমে এসেছে স্থবিরতা। ফলে সামগ্রিক পরিস্থিতি আমলে নেওয়া অপরিহার্য।

সর্বোপরি বলতে চাই, সৃষ্ট পরিস্থিতি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন। পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র বিতরণের পাশাপাশি ঠান্ডাজনিত রোগের ক্ষেত্রে চিকিৎসার সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনার দিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি। সামগ্রিকভাবে সৃষ্ট পরিস্থিতি মোকবিলায় সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে