শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বাল্যবিয়ে রোধে মা-বাবার মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন

করোনাকালে সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপে গ্রাম ও শহরে অনেক কিশোরী অসচ্ছল পরিবারগুলোর কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরি হারিয়ে অনেক পরিবারের অভিভাবকরা পরিবারের একজন সদস্য কমাতে বাল্যবিয়ে দিচ্ছেন। এর বাইরে এই বিষয়ে সাধারণের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব আছে। মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিতদের সঙ্গে কথোপকথন থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়েও অনেকে কম বয়সে বিয়ে করছে। অর্থাৎ সবকিছুই বাল্যবিয়ে বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এ পরিস্থিতি অবশ্যই আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। বাল্যবিয়ে থামাতে সরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু নীতিমালা থাকলেও গ্রামীণ পর্যায়ে এখনো এ বিষয়টি সেভাবে সচেতনতা তৈরি করতে পারেনি। অনেক সময় দেখা যায়, ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সে যে বিয়েগুলো হচ্ছে সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত হয়ে সেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে সাহায্য করছেন।
আর কে চৌধুরী
  ২৪ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

সাম্প্রতিক সময়ে বাল্যবিয়ে বেড়েই চলেছে। অবশ্য কোভিড পরবর্তী সময়ে এ প্রবণতা যে বাড়বে এমন আশঙ্কা করে আসছিলেন বিশেষজ্ঞরা। বাল্যবিয়ে রোধে ২০১৭ সালে পাস হওয়া আইন অনুযায়ী কোনো মেয়ে ১৮ বছরের আগে এবং ছেলে ২১ বছরের আগে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হলে বিবাহসংশ্লিষ্টদের জেল-জরিমানা করা হবে। বাল্যবিয়ে নামের অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করার কাজটি যে খুব কঠিন তা বলাই বাহুল্য। সমাজের অত্যন্ত গভীরে বাসা বেঁধে আছে এ ব্যাধি। তা ছাড়া আইনকানুন ও প্রশাসনিক দুর্বলতাও অনস্বীকার্য। পারিবারিক বাধা পর্বতপ্রমাণ। বস্তুত বাল্যবিয়ের মূল কারণ নিহিত রয়েছে সামাজিক পরিবেশের বাস্তবতায়। বখাটেদের ভয়ে কৈশোর পেরোনোর আগেই মেয়েকে বিয়ে দেওয়ার তোড়জোড় শুরু হয় গরিব ঘরের মা-বাবার মধ্যে। করোনাকালে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকাকালে টাঙ্গাইল সদর উপজেলার একটি স্কুলের ৬০ শিক্ষার্থী বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে। চরাঞ্চলের হুগড়া হাবিব কাদের উচ্চ বিদ্যালয়ের বাল্যবিয়ের শিকার ওই শিক্ষার্থীরা আর স্কুলে আসছে না। বাল্যবিয়ের কারণে এ অঞ্চলের অনেক শিক্ষার্থী স্কুল থেকে ঝরে গেছে। এ ছাড়া প্রায় ৩০ ছাত্র দারিদ্র্যের কারণে বিভিন্ন জায়গায় কাজ নিয়েছে। এলাকাটিতে বাল্যবিয়ের প্রবণতা আগে থেকেই ছিল। বাল্যবিয়ের দিক দিয়ে বিশ্বে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। ইউনিসেফের তথ্যানুযায়ী এ দেশে ৫৯ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৮ বছরের আগেই। আর ২২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৫ বছরের আগে। এর কারণ দরিদ্র পরিবারের অর্থনৈতিক সংকট ও কিশোরীর নিরাপত্তাহীনতা। করোনা পরিস্থিতিতে নতুন নতুন অসংখ্য সমস্যার মধ্যে বাল্যবিয়ে সম্পর্কে প্রশাসনের মনোযোগ কিছুটা সরে গেছে বলে মনে হয়। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা মাসে অন্তত এক দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পরিদর্শন করলে শিক্ষার্থীদের আত্মবিশ্বাস বাড়বে। সামাজিক নিরাপত্তা পেলে বাল্যবিয়ের আপদ বিদায় নিতে বাধ্য হবে।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণের প্রভাবে বাল্যবিয়ের হার আরো বেড়ে গেছে। বিষয়টি উদ্বেগের। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে প্রশাসন উদ্যোগ নিচ্ছে। সেই সঙ্গে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। সচেতন হতে হবে। বাল্যবিয়ের কারণ হিসেবে দরিদ্রতা, অর্থনৈতিক অসচ্ছলতা, নিরাপত্তাহীনতা ইত্যাদি বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়; করোনা মহামারির সময় এ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। এর দায় যেমন রাষ্ট্রের, তেমনি সমাজেরও। করোনায় স্কুল বন্ধ, মা-বাবা চাকরি হারাচ্ছেন, লকডাউনে বাড়ছে সহিংসতা আর ধর্ষণ। এসব কারণে মেয়ের নিরাপত্তার কথা ভেবে মা-বাবা তাদের নাবালক মেয়েদের জোর করে বিয়ে দিচ্ছেন। গতকাল একটি জাতীয় দৈনিকের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুড়িগ্রাম, নাটোর, যশোর, কুষ্টিয়া, নরসিংদী ও ঝালকাঠি জেলায় বাল্যবিয়ে বেড়ে গেছে আশঙ্কাজনক হারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে মেয়েদের ওপর। অভিভাবকদের কর্মহীনতা, সন্তানের স্কুল খোলার নিশ্চয়তা না থাকা এবং নিরাপত্তাবোধ থেকে দেশে বেড়ে গেছে বাল্যবিয়ের হার। দেশে আগের তুলনায় বাল্যবিয়ে বেড়েছে ১৩ শতাংশ। বিগত ২৫ বছরের মধ্যে এবারই এ হার সবচেয়ে বেশি। বৈশ্বিক পরিসংখ্যান বলছে, সংঘাত, দুর্যোগ কিংবা মহামারির সময় বাল্যবিয়ের সংখ্যা বাড়ে। আমাদের দেশের ২০ শতাংশ মানুষ এখন দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, করোনার কারণে আরো ২০ শতাংশ দারিদ্র্যসীমার নিচে চলে যেতে পারে। বাল্যবিয়ের ঝুঁকি এসব পরিবারেই বেশি।

তথ্যমতে, বাংলাদেশে ৫৯ শতাংশ মেয়ের ১৮ আর ২২ শতাংশ মেয়ের বিয়ে হয় ১৫ বছরের আগে। বাল্যবিবাহে বাংলাদেশের অবস্থান চতুর্থ। ওই গবেষণায় স্পষ্ট হয়েছে, করোনাকালে অভিভাবকের কাজকর্ম না থাকায় ভবিষ্যৎ দুশ্চিন্তার কারণে ৮৫ শতাংশ, সন্তানের স্কুল খোলার অনিশ্চয়তায় ৭১ শতাংশ এবং করোনা মহামারি দীর্ঘস্থায়ী হওয়ার আশঙ্কায় অনিরাপত্তা বোধ এবং বিদেশ থেকে আসা ছেলে হাতের কাছে পাওয়ায় ৬২ শতাংশ বেড়েছে বাল্যবিয়ে। গত বছরের অক্টোবরে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটিতে উত্থাপিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, করোনাকালে প্রথম তিন মাস অর্থাৎ এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত সারাদেশে ২৩১টি বাল্যবিয়ে হয়েছে এবং ২৬৬টি বাল্যবিয়ে ঠেকানো সম্ভব হয়েছে। সবচেয়ে বেশিসংখ্যক বাল্যবিয়ে হয়েছে কুড়িগ্রাম, নাটোর, যশোর ও কুষ্টিয়া জেলায় মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের তথ্য মতে, গেল মাসে ৪৬২টি কন্যা শিশু বাল্যবিয়ের শিকার হয় এর মধ্যে প্রশাসন ও সচেতন মানুষের উদ্যোগে ২০৭টি বিয়ে বন্ধ করা সম্ভব হয়।

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের এক জরিপে বলা হয়, করোনাকালে দেশে বাল্যবিয়ে হয়েছে ১৩ হাজার ৮৮৬টি। গত বছরের এপ্রিল থেকে অক্টোবর পর্যন্ত এই সাত মাসে দেশের ২১টি জেলার ৮৪ উপজেলায় ১৩ হাজার ৮৮৬টি বাল্যবিয়ে হয়েছে। এ সময় দিনে গড়ে ১ দশমিক ৭টি বাল্যবিয়ের ঘটনা ঘটেছে। জরিপ থেকে জানা যায়, যেসব মেয়ে বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছে, তাদের মধ্যে শতকরা ৫০ দশমিক ৬ জনের বিয়ে হয়েছে ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। শতকরা ৪৭ দশমিক ৭ জনের বিয়ে হয়েছে ১৩ থেকে ১৫ এর মধ্যে। শতকরা ১ দশমিক ৭ জনের বিয়ে হয়েছে ১০ থেকে ১২ বছর বয়সে। দেশে সবচেয়ে বেশি বাল্যবিয়ে হয়েছে বরগুনাতে ১৫১২টি, কুড়িগ্রামে ১২৭২টি, নীলফামারীতে ১২২২টি, লক্ষ্ণীপুরে ১০৪১টি এবং কুষ্টিয়াতে ৮৮৪টি। আর বাল্যবিয়ের উদ্যোগ যারা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে শতকরা ৭৮ জনই ভুক্তভোগীর বাবা-মা। সংস্থাটির আরেক হিসাব বলছে, দেশের ৫৯% মেয়েকে ১৮ বছর বয়সের আগেই বিয়ে দেওয়া হয়, আর ২২% মেয়েকে তাদের ১৫তম জন্মদিনের আগে বিয়ে দেওয়া হয়।

উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড ডাইভারসিটি বিভাগ ২০২০ সালে সারাদেশের ১১টি জেলায় নারী ও কিশোর-কিশোরীদের ওপর কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব বিস্তারের ভিত্তিতে একটি জরিপ পরিচালনা করে। জরিপে দেখা যায়, মহামারির কারণে দেশে বাল্যবিয়ের হার আগের চেয়ে ১৩% বৃদ্ধি পেয়েছে। এটি গত ২৫ বছরে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের সর্বোচ্চ হার। আবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশে বাল্যবিয়ের হার সবচেয়ে বেশি। বাল্যবিয়ের হার বেশি, বিশ্বের এরকম ১০টা দেশের তালিকায় আছে বাংলাদেশ। ইউনিসেফের সাম্প্রতিক এক রিপোর্ট বলছে, অনেক উন্নতির পরও বাংলাদেশ বাল্যবিয়েতে চতুর্থ স্থানে ছিল। করোনাভাইরাস লাখ লাখ কন্যাশিশুকে নতুন বাস্তবতার সামনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে। স্কুল বন্ধ, বন্ধু ও সাপোর্ট নেটওয়ার্ক থেকে বিচ্ছিন্নতা, ক্রমবর্ধমান অভাব এই মেয়েদের বিয়ের ঝুঁকিতে ফেলে দিয়েছে।

সমাজসেবা অধিদপ্তরের আওতায় এবং ইউনিসেফের সহযোগিতায় চাইল্ড হেল্পলাইন ১০৯৮ সারাদেশে বিপদে পড়া শিশুদের সাহায্য করে থাকে। এই চাইল্ড হেল্পলাইনের প্রতিটি উপজেলায় মোবাইল টিম আছে। ইউনিয়ন পর্যায়েও সংস্থাটির কর্মীরা কাজ করছেন। এ ছাড়া সরকারি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এই হেল্পলাইনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বাল্যবিয়ে রোধে কাজ করছে।

করোনাকালে সামাজিক ও অর্থনৈতিক চাপে গ্রাম ও শহরে অনেক কিশোরী অসচ্ছল পরিবারগুলোর কাছে বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। চাকরি হারিয়ে অনেক পরিবারের অভিভাবকরা পরিবারের একজন সদস্য কমাতে বাল্যবিয়ে দিচ্ছেন। এর বাইরে এই বিষয়ে সাধারণের মধ্যে এখনো সচেতনতার অভাব আছে। মোবাইল ফোনে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপরিচিতদের সঙ্গে কথোপকথন থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়েও অনেকে কম বয়সে বিয়ে করছে। অর্থাৎ সবকিছুই বাল্যবিয়ে বৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখছে। এ পরিস্থিতি অবশ্যই আমাদের জন্য উদ্বেগজনক। বাল্যবিয়ে থামাতে সরকারি পর্যায়ে বেশ কিছু নীতিমালা থাকলেও গ্রামীণ পর্যায়ে এখনো এ বিষয়টি সেভাবে সচেতনতা তৈরি করতে পারেনি। অনেক সময় দেখা যায়, ১৬ থেকে ১৭ বছর বয়সে যে বিয়েগুলো হচ্ছে সেখানে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরাও যুক্ত হয়ে সেই বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারতে সাহায্য করছেন।

বাংলাদেশ এখনো বাল্যবিয়ের উচ্চহারের দেশের তালিকায় রয়েছে। বাল্যবিয়ের কারণে অনেক মেয়ে শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। একমাত্র বাল্যবিয়ের কারণেই মাধ্যমিকের গন্ডি পার হওয়ার আগেই ঝরে পড়ে অনেক কিশোরীর শিক্ষা জীবন। অথচ তারা সমাজের অন্য মেয়েদের মতো শিক্ষিত, স্বাবলম্বী হতে পারত। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, বাল্যবিয়ে বন্ধ করার জন্য অভিভাবকদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতা সৃষ্টির বিশেষ কর্মসূচি নিতে হবে। প্রশাসন, জনপ্রতিনিধি, শিক্ষক ও সমাজের অগ্রসর নাগরিকদের অংশগ্রহণের ভিত্তিতে বাল্যবিয়ে রোধে পরিকল্পিত উদ্যোগ নিতে হবে। জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) অনুযায়ী, ২০৩০ সালের মধ্যে দেশে বাল্যবিয়ে বন্ধ করতে হবে। আর জাতীয় লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী, বাল্যবিয়ে নির্মূল করতে হবে ২০৪১ সালের মধ্যে। বাল্যবিয়ে রোধে অনেক বছর ধরেই সরকার সচেষ্ট। নানা পদক্ষেপ গ্রহণসহ সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনে সাজা ও জরিমানা বাড়ানো হয়েছে। তবে এক্ষেত্রে আইন প্রয়োগের দায়িত্ব যাদের, সেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, ইউপি চেয়ারম্যান-মেম্বার, উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান এমনকি সংসদ সদস্যদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে সুফল পাওয়া যাবে। সরকারের পাশাপাশি আমাদেরও দায়িত্ব রয়েছে। বাল্যবিয়ে রোধে প্রাথমিকভাবে মা-বাবাদের মধ্যে সচেতনতা তৈরি করা প্রয়োজন। বাল্যবিয়ে রোধের জন্য প্রতিটি উপজেলায় যে কমিটিগুলো আছে, তা খুব বেশি সচল করতে হবে।

আর কে চৌধুরী : মুক্তিযোদ্ধা ও শিক্ষাবিদ, সাবেক চেয়ারম্যান রাজউক, উপদেষ্টা, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরাম, প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি আর কে চৌধুরী বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে