সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রবাসী আয় আশা জাগাচ্ছে কার্যকর পদক্ষেপ নিন

নতুনধারা
  ১৯ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

বাংলাদেশ জনসংখ্যাবহুল দেশ। আর এই জনশক্তিকে জনসম্পদে রূপান্তর করা দেশের সার্বিক অগ্রগতির প্রশ্নেই জরুরি। এ প্রসঙ্গে বলা দরকার, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশের মানুষ সুনামের সঙ্গে কাজ করছে। ফলে দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখছে প্রবাসী আয়। যখন করোনা পরিস্থিতিতে সারা বিশ্ব দিশেহারা, দেশেও করোনার সংক্রমণ ও সংক্রমণে মৃতু্য বাড়ছিল, সেই পরিস্থিতিতেও প্রবাসী আয়ে ইতিবাচক ধারা অব্যাহত ছিল। একের পর এক রেকর্ড হয়েছে- যা আশাব্যঞ্জক।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে উঠে এসেছে যে, প্রবাসী আয় আবারও আশা জাগাচ্ছে- যা ইতিবাচক বলেই প্রতীয়মান হয়। এ ক্ষেত্রে উলেস্নখ্য, গত বছরের ডিসেম্বর মাসের তুলনায় চলতি বছরের জানুয়ারিতে প্রবাসী আয় কিছুটা বাড়বে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও। তারা বলছেন, বছরের শুরুতে যে হারে প্রবাসীরা রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন তাতে অর্থনীতির এই সংকটের সময় নতুন আশার আলো দেখা যাচ্ছে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই এটা আশাব্যঞ্জক বলেই মনে করা সঙ্গত। কেননা, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না, দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে প্রবাসী আয়ের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।

তথ্য মতে. জানুয়ারি মাসের প্রথম ১৩ দিনে ৯২ কোটি ৮৬ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি জানুয়ারি মাসের প্রথম ১৩ দিনে প্রবাসীরা সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন বেসরকারি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। অর্থাৎ এই সময়ে বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৭৭ কোটি ১৩ লাখ মার্কিন ডলারের রেমিট্যান্স। এছাড়া রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ১২ কোটি ৯২ লাখ মার্কিন ডলার, বিশেষায়িত এক ব্যাংকের মাধ্যমে দুই কোটি ৫০ লাখ ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে রেমিট্যান্স এসেছে ৩১ লাখ মার্কিন ডলার।

আমরা এটাও উলেস্নখ করতে চাই, যখন জানা যাচ্ছে- সদ্য সমাপ্ত ডিসেম্বর মাসে ১৬৯ কোটি ৯৬ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স এসেছিল। আর এই পরিমাণ ২০২১ সালের ডিসেম্বরের চেয়ে প্রায় সাত কোটি ডলার বেশি তখন এটাও বিবেচ্য। তবে সংশ্লিষ্টদের কর্তব্য হওয়া দরকার, বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা। কেননা, সম্প্রতি একজন অর্থনীতিবিদ বলেছেন যে, অর্থ পাচার ও কালো টাকা না কমলে বৈধ পথে রেমিট্যান্সও বাড়বে না। এছাড়া আলোচনায় এটাও এসেছে যে, বাংলাদেশে আইন আছে কিন্তু এর প্রয়োগ নেই। ব্যাংকে ডলারের দাম এক রকম আবার খোলা বাজারে আরেক রকম। এই পার্থক্য কমিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। ফলে আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে সামনে রেখে কার্যকর পদক্ষেপ নিশ্চিত করা জরুরি।

প্রসঙ্গত বলা দরকার, বিশ্ব পরিস্থিতির কারণে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভে টান পড়ায় অনেকটা সংকটে পড়ে দেশের অর্থনীতি। প্রকট আকার ধারণ করে ডলার সংকট। এর মধ্যে টানা কয়েক মাস প্রবাসী আয় নিম্নমুখী থাকায় সেই সংকট আরও ঘনীভূত হয়। সঙ্গত কারণেই যখন এমন প্রেক্ষাপটে নতুন বছর রেমিট্যান্স প্রবাহে স্বাভাবিক গতি দেখা যাচ্ছে তখন তা সামগ্রিক অর্থেই ইতিবাচক। এটা মনে রাখতে হবে- বাংলাদেশের অর্থনীতি যে কয়টি ভিতের ওপর দাঁড়িয়ে আছে তার মধ্য রেমিট্যান্স বা প্রবাসী আয় উলেস্নখযোগ্য। ফলে এই খাতের অগ্রগতির ধারা অব্যাহত রাখতে করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নেও সংশ্লিষ্টদের কাজ করতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, টানা কয়েক মাস প্রবাসী আয় নিম্নমুখী থাকার পর যখন, আবার আশা জাগাচ্ছে প্রবাসী আয়- তখন এই ইতিবাচক দিককে সামনে রেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। ভুলে যাওয়া যাবে না, প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক। আর বৈধ পথে রেমিট্যান্স বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রবাসীদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠানোর ব্যাপারে আরও উৎসাহিত করতে হবে। প্রবাসী আয়ের বিষয়টিকে সামনে রেখে কার্যকর উদ্যোগ অব্যাহত রাখার পাশাপাশি নতুন নতুন শ্রমবাজার খুঁজে বের করা এবং দক্ষ জনশক্তি নিশ্চিত করাও আবশ্যক। আর সেই লক্ষ্যে বাড়াতে হবে প্রশিক্ষণের পরিধিও।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে