সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আরেক দফা বাড়ছে চিনির দাম ভোক্তা স্বার্থ সংরক্ষণ করতে হবে

নতুনধারা
  ২৮ জানুয়ারি ২০২৩, ০০:০০

নিত্যপণ্যের বাজার কোনোভাবেই স্বাভাবিক হচ্ছে না। একেক সময় একেক অজুহাত তুলে বিক্রেতারা পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। আসন্ন রমজানে আগের মতো দাম বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, বাজারে আরেক দফা বাড়ছে প্যাকেটজাত ও খোলা চিনির দাম। নতুন করে দাম বাড়ানোর যে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে, তাতে প্রতি কেজি চিনির দাম বাড়বে পাঁচ টাকা করে। ফলে এক কেজি পরিশোধিত খোলা চিনি ১০৭ টাকা ও প্যাকেটজাত চিনি ১১২ টাকায় বিক্রি হবে। নতুন এ দাম আগামী ১ ফেব্রম্নয়ারি থেকে কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার এক বিজ্ঞপ্তিতে চিনির দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে চিনি পরিশোধনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মালিকদের সংগঠন বাংলাদেশ সুগার রিফাইনার্স অ্যাসোসিয়েশন। অপরিশোধিত চিনির আন্তর্জাতিক বাজারদর বৃদ্ধি, ডলারের বিনিময় হার বৃদ্ধি ও স্থানীয় পরিশোধনকারী মিলগুলোর উৎপাদন ব্যয় বেড়েছে। এসব বিষয় বিবেচনায় এনে বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনা করে নতুন এ মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

এর আগে সবশেষ গত বছরের ১৭ নভেম্বর খুচরা পর্যায়ে চিনির দাম বাড়ানো হয়েছিল। সেবার প্যাকেটজাত চিনির দাম ৯৫ টাকা থেকে ১২ টাকা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ১০৭ টাকা। আর প্রতি কেজি খোলা চিনির দাম বাড়িয়ে করা হয় ১০২ টাকা। যদিও বাজারে খোলা চিনি বিক্রি করা হয়েছে ১২০ টাকা কেজি। অনেক দোকানেই চিনি পাওয়া যায়নি। আর প্যাকেটজাত চিনির কথা তো বলাই বাহুল্য। কোথাও মেলেনি প্যাকেটজাত চিনি।

আমরা মনে করি, আসন্ন রমজানে নিত্যপণ্যের দাম সরকারের নিয়ন্ত্রণে রাখতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। এ ছাড়া নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে ও ভেজালরোধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা প্রতিবারই লক্ষ্য করি পবিত্র রমজানে নিত্যপণ্যের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার সিদ্ধান্ত হয়, চোখে পড়ার মতো কিছু উদ্যোগও নেওয়া হয়। কিন্তু ইতিবাচক কোনো ফল পরিলক্ষিত হয় না। রমজান আসার সঙ্গে সঙ্গে এ দেশের অতিমুনাফালোভী অসৎ ব্যবসায়ীরা প্রতিটি পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। প্রতি রমজানেই এই দৃশ্য আমরা প্রত্যক্ষ করি। এটা সিন্ডিকেটের কারসাজি এবং বাজার সংস্কৃতির একটি উজ্জ্বল অংশ। নিত্যপণ্যের মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাদের অজুহাতের শেষ নেই। তারা একেক সময় একেক অজুহাত দাঁড় করায়। তারা খাদ্যে ভেজালও দেয়। এই চিত্র বদলানো কঠিন।

আমরা মনে করি ব্যবসায়ীদের কাছে জিম্মি হলে চলবে না। তাদের কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ আদালতের সংখ্যা বাড়াতে হবে। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে কখনোই নজর দেয় না। এরা বাজার সন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হওয়া যায় তাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। বাজারে মূল্য তালিকা টাঙিয়ে যথাযথ তদারকির ব্যবস্থা করতে হবে। দেশের অসহায় জনগণকে জিম্মি করে তারা পকেট কাটবে এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। এর আগে তারা চাল চিনি ও তেলের বাজারে অস্থিরতা সৃষ্টি করেছিল। এবার চিনির দাম বাড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। রমজান শুরুর আগে অন্যান্য পণ্যের দাম যে বাড়বে না এর নিশ্চয়তা কোথায়?

বাজার নিয়ে অতীতে অনেক পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে, কোনো কাজ হয়নি। বিক্রেতাদের মানসিকতার কোনো পরিবর্তন হয়নি। এটা সত্যিই দুর্ভাগ্যজনক। আমরা মনে করি বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে। কেবল রমজানে নয়, সারা বছর বাজার মনিটরিং করতে হবে। এ ব্যাপারে সরকারের কার্যকর কঠোর উদ্যোগই কেবল পারে জনগণকে হয়রানি ও দুর্ভোগ থেকে মুক্তি দিতে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে