সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

আবারও শিশু হত্যা এর শেষ কোথায়

নতুনধারা
  ৩১ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

যতই দিন যাচ্ছে সমাজে শিশু নির্যাতনের হার বাড়ছে। কেবল নির্যাতন নয়, শিশু হত্যার সংখ্যা বেড়েছে উদ্বেগজনক হারে। শিশু নির্যাতনের হার বেড়েছে ২০ শতাংশ। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, চট্টগ্রাম নগরের পাহাড়তলী থানা এলাকার আবিদা সুলতানা আয়নী (১০)। বিড়াল ছানার প্রতি ছিল যার প্রচন্ড লোভ। কেউ বিড়াল ছানা দেবে বলে ডাকলেই ছুটে যেত চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ুয়া শিশুটি। আর এ সুযোগই কাজে লাগান সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল (৩৫)। কৌশলে আয়নীকে ডেকে এক আত্মীয়ের বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করেন। তারপর ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গলা টিপে হত্যা করা হয় আয়নীকে।

রুবেলকে আটক ও তাকে জিজ্ঞাসাবাদের পর এসব তথ্য দিয়েছেন পুলিশ বু্যরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) কর্মকর্তারা।

২১ মার্চ বিড়াল ছানা দেবে বলে আয়নীকে দেখা করতে বলেন রুবেল। এরপর তাকে একটি ভবনের চতুর্থ তলায় নিজের ফুফুর বাসায় নিয়ে যান। বিকাল আনুমানিক ৫টার দিকে শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়। এরপর ঘটনা জানাজানি হওয়ার আশঙ্কায় আয়নীকে গলা টিপে হত্যা করেন রুবেল। এই ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক।

\হএর আগের একটি ঘটনা আরও মর্মান্তিক। গরীর ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ডের নয়ারহাট এলাকা থেকে অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে না পেয়ে তার বাবা সোহেল রানা ইপিজেড থানায় একটি নিখোঁজ ডায়রি করেন। কিন্তু কোনোভাবেই শিশুটির মা-বাবা বা অন্য কেউ ঘুণাক্ষরেও বুঝতে পারেননি যে, তাদের এই শিশু সন্তানের খুনি তাদেরই ভাড়াটিয়া আজহারুল ইসলামের ১৯ বছর বয়সি বখাটে তরুণ আবির আলী। আয়াতের বাবার কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায়ের জন্য সে অপহরণ ও খুন করে। ফুটফুটে, চঞ্চল শিশুটিকে নৃশংসভাবে খুন করা হয়। তারপর তার মরদেহ কয়েকটি টুকরা করে তা ব্যাগে ভরে সাগর ও নালার সংযোগস্থলে স্স্নুইসগেটের কাছে পানিতে ফেলে দেয়। পরে পুলিশ আয়াতের লাশের একাধিক খন্ড উদ্ধার করে। এর চেয়ে বর্বর ঘটনা আর কী হতে পারে।

বলার অপেক্ষা রাখে না, এ ধরনের বর্বরোচিত নিষ্ঠুর ঘটনা এর আগেও বেশ কয়েকটি ঘটেছে। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ না নেওয়ার কারণেই ঘটনার পুনরাবৃত্তি হচ্ছে। এ ধরনের জঘন্য প্রবণতা রোধ করতে না পারলে একদিকে যেমন সামাজিক শৃঙ্খলা ভেঙে পড়বে, অন্যদিকে, শিশুরাও থাকবে নিরাপত্তাহীনতায়। পাশাপাশি ভবিষ্যতের জন্য ভয়ংকর বিপদ ডেকে আনবে। সুতরাং, সময় থাকতেই সাবধান হওয়া সমীচীন।

এটা সত্য, সমাজের একশ্রেণির বর্বর পাষন্ড মানুষের হাতে অনেকের জীবনই বিপন্ন হয়ে পড়ছে, অবলীলায় জীবন চলে যাচ্ছে। এমনকি শিশুর জীবনও চলে যাচ্ছে। সমাজে শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা জরুরি হয়ে পড়েছে। ঠুনকো কারণে টাকার লোভে শিশুদের হত্যা করা হচ্ছে। হত্যা করা হচ্ছে অন্যকে ফাঁসানোর জন্য কিংবা প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে। এ ছাড়া প্রায়ই ধর্ষণের শিকার হচ্ছে শিশুরা। শিশু নির্যাতন তো সমাজের নৈমিত্তিক ঘটনা। অথচ শিশুর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমাজ তথা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। কারণ আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ কান্ডারি। শিশুর সুস্থ বিকাশ কীভাবে হবে, কীভাবে তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে- এ ব্যাপারে রাষ্ট্রের নতুনভাবে ভাবা উচিত। পাশাপাশি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিও নিশ্চিত করতে হবে এবং এর কোনো বিকল্প নেই।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে