সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবাজারে আগুন

কার্যকর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০০:০০

অগ্নিকান্ডের মতো ঘটনা কতটা ভয়াবহ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সম্প্রতি আবারও ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটল। প্রকাশিত খবরের তথ্য মতে, ভয়াবহ আগুনে পুড়ে গেছে দেশের অন্যতম বড় কাপড়ের মার্কেট রাজধানী ঢাকার বঙ্গবাজার। এ প্রসঙ্গে উলেস্নখ্য, ফায়ার সার্ভিসের একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সকাল ৬টা ১০ মিনিটে ওই মার্কেটে আগুন লাগার খবর পান তারা। এছাড়া ফায়ার সার্ভিসের ৫০টি ইউনিটের পাশাপাশি সেনাবাহিনী ও বিমানবাহিনীর দুটি দল প্রায় সাড়ে ছয় ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। তবে এ সময়ের মধ্যে বঙ্গবাজার মার্কেট, মহানগর মার্কেট, আদর্শ মার্কেট ও গুলিস্তান মার্কেট পুরোপুরি ভস্মীভূত হয় বলে খবরে উঠে এসেছে। পাশের এনেক্সকো টাওয়ার এবং আরও কিছু ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় আগুনে। জানা গেছে, বঙ্গবাজারের পাশেই ফায়ার সার্ভিস সদর দপ্তর বলে খবর পাওয়ার দুই মিনিটের মধ্যেই সেখানে প্রথম ইউনিট পৌঁছায়। এরপর ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে ইউনিটের সংখ্যা কিন্তু বাতাসের মধ্যে ঘিঞ্জি ওই মার্কেটের আগুন ছড়িয়ে পড়তে থাকে।

আমরা বলতে চাই, এই ঘটনাটি কতটা ভয়ানক তা সংশ্লিষ্টদের আমলে নিতে হবে। এটাও স্মর্তব্য যে, এর আগেও বিভিন্ন সময়ে হৃদয়বিদারক এবং ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সামগ্রিকভাবে অগ্নিকান্ডের মতো ভয়াবহ ঘটনাগুলো আমলে নিতে হবে এবং পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সব ধরনের উদ্যোগ অব্যাহত রাখতে হবে। যদি একের পর এক অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটতে থাকে, তবে তা কতটা ভয়ানক ও আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকে স্পষ্ট করে তা বলাই বাহুল্য। এবারের অগ্নিকান্ডের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জানা যাচ্ছে, টিন ও কাঠ দিয়ে নির্মিত শত শত দোকান নিয়ে বঙ্গবাজার। ঈদ সামনে রেখে সব দোকানেই প্রচুর নতুন পণ্য তোলা হয়েছিল। কিন্তু কীভাবে সেখানে আগুন লাগল তা এখনো স্পষ্ট নয়। অগ্নিকান্ডের ঘটনায় ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মীদের কাউকে কাউকে মরিয়া হয়ে মালামাল সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। এছাড়া অনেকেই অসহায়ভাবে কাঁদছিলেন। আমরা মনে করি, সামগ্রিকভাবে ঘটনাটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এবং করণীয় নির্ধারণ ও তার যথাযথ বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিতে হবে।

এ কথাও বলা দরকার, বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুধু আর্থিক ক্ষতি নয়, অনেক মানুষ চলে গেছে না ফেরার দেশে। পত্রপত্রিকায় এর আগে এমন বিষয়ও আলোচনায় এসেছিল যে, নানা কারণেই বিভিন্ন সময়ে অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। গত কয়েক বছরে শুধু কেমিক্যালের কারণে অনেকগুলো অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। বস্তিতেও অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। কেমিক্যাল গোডাউন, আধুনিক বহুতল, শপিংমলসহ বিভিন্ন ধরনের স্থাপনায় অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। সংশ্লিষ্টদের এটা আমলে নেওয়া দরকার। বিশ্লেষকরা বলছেন, অতীতে ঘটে যাওয়া বড় বড় অগ্নিদুর্ঘটনা থেকে শিক্ষা গ্রহণ ও সতর্ক না হওয়ায় অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। আমরা মনে করি, এই বিষয়গুলোকে আমলে নিতে হবে। করণীয় নির্ধারণ সাপেক্ষে তার বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।

সর্বোপরি বলতে চাই, বঙ্গবাজারের অগ্নিকান্ডের ঘটনাটি আমলে নিন। একইসঙ্গে এই ধরনের ভয়াবহ অগ্নিকান্ডের ঘটনা একের পর এক কেন ঘটছে সেটাও এড়ানো যাবে না। মার্কেটই শুধু নয়, পস্নাস্টিক কারখানা, কেমিক্যাল গোডাউন থেকে শুরু করে আধুনিক বহুতল ভবন, কারখানা, বস্তিসহ বিভিন্নভাবে অগ্নিকান্ডের যে ঘটনা ঘটেছে- প্রত্যেকটি ঘটনা আমলে নিয়ে যথাযথ পদক্ষেপ নিশ্চিত করতে হবে। অগ্নিদুর্ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে- এর চেয়ে ভয়ানক আর কীবা হতে পারে! যখন গ্রাম থেকে শহর, বস্তি থেকে শুরু করে আবাসিক ও বাণিজ্যিক বহুতল ভবন, দোকানপাট, গুদাম, মার্কেট কোনো কিছুই আগুনের লেলিহান গ্রাস থেকে মুক্ত নয়- তখন এই প্রশ্নও অযৌক্তিক নয় যে, অগ্নিকান্ডের পুনরাবৃত্তি রোধ করা যাচ্ছে না কেন! সার্বিক পরিস্থিতি আমলে নিয়ে যে কোনো ধরনের অগ্নিদুর্ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে এমনটি কাম্য।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে