সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

জাল টাকার কারখানা

কঠোর পদক্ষেপ নিন
নতুনধারা
  ২৬ মে ২০২৩, ০০:০০

কিছুতেই জাল টাকার বিস্তার রোধ করা যাচ্ছে না। যারা জাল টাকা তৈরি করছে তাদের ব্যাপারে নতুন নতুন তথ্য বেরিয়ে আসছে। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, সাভারের বনগাঁও ইউনিয়নে একটি পোশাক কারখানার ভেতরে জাল টাকার কারখানার সন্ধান পেয়েছে পুলিশ। এ ঘটনায় অভিযান পরিচালনা করে তিনজনকে আটক করে কোটি টাকারও বেশি জাল টাকা উদ্ধার করা হয়। এ সময় জাল টাকা তৈরির বেশ কিছু সরঞ্জামাদি জব্দ করে পুলিশ। আটককৃতরা হলেন- বরিশাল জেলার মুলাদী থানার ডিগ্রিরচর খানবাড়ীর জয়নাল আবেদীন খানের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন খান (৪৫), শরীয়তপুর জেলার পালং থানার গয়াধর গ্রামের আল ইসলাম সরদারের ছেলে সুজন মিয়া (৩০) ও বরিশাল জেলার মুলাদী থানার বয়াতিকান্দি গ্রামের মানিক মোলস্নার ছেলে নাজমুল হোসেন (২৪)। এর মধ্যে সাখাওয়াত হোসেন কারখানার মালিক। দীর্ঘদিন থেকে কারখানাটি পরিচালনা করছেন সাখাওয়াত হোসেন খান নামের এক ব্যক্তি। তবে স্থানীয়দের কাছে কারখানাটি পোশাক কারখানা হিসেবেই বেশি পরিচিত। পোশাক কারখানার আড়ালে সেখানে জাল টাকার কারখানা রয়েছে তা আজ পুলিশের অভিযানের পর জানতে পারেন তারা।

মুদ্রা জালিয়াতির সঙ্গে জড়িতরা এই কাজে বেশ 'অভিজ্ঞ' এবং তারা গ্রেপ্তার হলে আইনের ফাঁকফোকরে জামিন নিয়ে বেরিয়ে একই কাজে ফের সম্পৃক্ত হয়। তাদের স্বপ্ন রাতারাতি বিশাল বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়া। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, যাদের আমরা গ্রেপ্তার করছি, তাদের অতীত ইতিহাস ঘেঁটে দেখা গেছে আগেও বিভিন্ন সময় গ্রেপ্তার হয়েছে, তারপর জামিনে রেবিয়ে তারা পুনরায় একই কাজে সম্পৃক্ত হচ্ছে।

মুদ্রা জাল করার সঙ্গে জড়িত অধিকাংশই জামিনে বেরিয়ে আসার বিষটি উদ্বেগজনক। জাল মুদ্রার কারবারিদের বিরুদ্ধে প্রচলিত আইনে মামলা হলেও অপরাধীদের অধিকাংশই খালাস পেয়ে যায়। বিশেষ ক্ষমতা আইনের এবং দন্ডবিধির কয়েকটি ধারায় জাল নোট তৈরি, সরবরাহ, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে মামলা হয়ে থাকে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে আসামিরা খালাস পেয়ে যায়, কারণ সাক্ষীর অভাব। যে এলাকা থেকে জাল নোটের কারবারিকে ধরা হলো সেই এলাকায় স্থানীয় কাউকে সাক্ষী করা হলো। সেই সাক্ষী দুই-একবার আদালতে সাক্ষ্য দিতে আসার পর পরবর্তী সময়ে আর আসেন না। তো দেখা গেল, সাক্ষীর অভাবে আসামি খালাস পেয়ে গেল। মুদ্রা জালকরণ, প্রস্তুত, ক্রয়-বিক্রয়সহ সংশ্লিষ্ট কাজে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইন ও দন্ডবিধি কয়েকটি ধারায় মামলা করা হলেও পুরনো আইনের 'দুর্বল ধারার' কারণে অপরাধীরা বেরিয়ে যায়।

\হআশার কথা, জাল মুদ্রা নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধে দেশে প্রথমবারের মতো একটি নতুন ও পূর্ণাঙ্গ আইন করা হচ্ছে। এতে অপরাধীদের কঠিন শাস্তির পাশাপাশি গ্রাহক হয়রানি বন্ধে রাখা হচ্ছে বেশ কিছু বিধান। পুরাতন আইনে জাল মুদ্রার কারবারি ও সংশ্লিষ্টদের বিচারের দীর্ঘসূত্রতার কারণে আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেরিয়ে যায় আসামিরা।

আমরা মনে করি, এখন নতুন যে আইন হচ্ছে সেই আইনে বিচারের পদ্ধতি যেন সহজ হয়। তিন মাসের মধ্যে এসব অপরাধের বিচার সম্পন্ন করতে পারলে অপরাধীরা সাজা পাবে এবং এই অপরাধ কমে আসবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে