শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বিজ্ঞানের যত কথা

ফসফরাস
শিক্ষা জগৎ ডেস্ক য়
  ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

ফসফরাস একটি মৌল, এর প্রতীক চ এবং পারমাণবিক সংখ্যা ১৫।

আবিষ্কার : ফসফরাস আবিষ্কৃত মৌলগুলোর মধ্যে ১৫তম। বিস্ফোরক, বিষ ও নার্ভ অ্যাজেন্ট তৈরিতে এটি ব্যবহারের কারণে একে প্রায়ই 'শয়তানের মৌল' নামে ডাকা হয়। ফসফরাস আবিষ্কারের কৃতিত্ব জার্মান রসায়নবিদ হেনিখ ব্র্যান্ডকে দেওয়া হয়, যিনি ১৬৬৯ সালে এটি আবিষ্কার করেন। ব্র্যান্ড মূত্র নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছিলেন, যাতে বেশকিছু পরিমাণ দ্রবীভূত বিপাকীয় ফসফেট ছিল। হামবুর্গে কাজ করার সময় ব্র্যান্ড মূত্রকে পাতন করে কিছু লবণ তৈরির মাধ্যমে পৌরাণিক কাহিনির ফিলসফার্স স্টোন তৈরির চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু পরিবর্তে এমন একটি পদার্থ পেলেন, যা অন্ধকারে জ্বলে আর চমৎকারভাবে পোড়ে। এই পদার্থের নাম দেওয়া হলো ফসফরাস মিরাবিলিস বা অলৌকিক আলোর ধারক।

যৌগসমূহ : ফসফরাস প্রকৃতিতে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। কিন্তু এটি অনেক খনিজ পদার্থে প্রচুর পরিমাণে পাওয়া যায়, বিশেষ করে ফসফেট। অজৈব ফসফেট রক আংশিকভাবে অ্যাপাটাইট দিয়ে তৈরি। এটাই এখন প্রধান উৎস ফসফরাসের।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপের (ইউএসজিএস) মতে, প্রায় পঞ্চাশ শতাংশ ফসফরাস মধ্যপ্রাচ্যে আছে। বৃহৎ অঙ্কের অ্যাপাটাইটগুলো চিহ্নিত করা হয়েছে চীন, রাশিয়া, মরক্কো, ফ্লোরিডা ইত্যাদি স্থানে। যুক্তরাজ্যের অষনৎরমযঃ ধহফ ডরষংড়হ এবং নায়াগ্রা জলপ্রপাতেও প্রচুর পরিমাণে আকরিক বিদ্যমান।

মূত্র: মানবদেহে উৎপন্ন মূত্র বেশিরভাগ ঘচক (নাইট্রোজেন-ফসফরাস-পটাসিয়াম) ধারণ করে। মূত্রকে সার হিসেবে ব্যবহারের সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতিগুলো নির্ভরশীল অতিরিক্ত নাইট্রোজেন দ্বারা সৃষ্ট বিভব এবং বৃক্কীয় পদ্ধতি দ্বারা সৃষ্ট অজৈব লবণ, যেমন- সোডিয়াম ক্লোরাইডের ওপর। মূত্রে নাইট্রোজেনের পরিমাণ ৭০% এবং অর্ধেকেরও বেশি ফসফরাস ও পটাসিয়াম পাওয়া গেছে প্রাচীন অব্যবহৃত জলপ্রপাতগুলোতে।

উৎপাদন : যৌগসহ ফসফরাসের বেশির ভাগ উৎপাদিত হয় সার হিসেবে ব্যবহার করার জন্য। এই উদ্দেশ্যে ফসফেট আকরিককে ফসফরিক এসিডে রূপান্তরিত করা হয়। প্রথমে ফসফেট আকরিককে সালফিউরিক এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটানো হয়। এভাবে নিচু মানের ফসফরাসের উৎস থেকে সাদা ফসফরাস উৎপাদন করা যায়। তারপর, সাদা ফসফরাসকে ফসফরিক এসিডের সঙ্গে বিক্রিয়া ঘটিয়ে বিশুদ্ধ ফসফরাস উৎপাদন করা হয়। সাদা ফসফরাস থেকে উৎপাদিত ফসফরিক এসিড ডিটারজেন্ট ও অন্যান্য কাজে ব্যবহারের মূল উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।

উৎস : ফসফরাস খুবই সক্রিয় মৌল তাই প্রকৃতিতে এটিকে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায় না। ফসফরাসের তিনটি উৎস হলো- ১। ফসফরাইট ২। ফ্লোর অ্যাপাটাইট ৩। ক্লোর অ্যাপাটাইট।

রূপভেদ : ফসফরাস একটি বহুরূপী মৌল, এর দুটি প্রধান রূপ হলো- লোহিত ফসফরাস শ্বেত ফসফরাস। এ ছাড়া কালো ফসফরাস নামক আরেকটি রূপভেদ আছে। সব অবস্থায় লোহিত ফসফরাস অধিক সুস্থিত বা স্থায়ী

ফসফরাস জীবনধারণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের জীবনধারণের অত্যাবশ্যকীয় উপাদান উঘঅ, জঘঅ ও অঞচ-এর কম্পোনেন্ট হিসেবে কাজ করে ফসফেট। আবার কোষ ঝিলিস্নর অন্যতম উপাদান ফসফোলিপিড হিসেবেও এটির গুরুত্ব অপরিসীম। জীবন ও ফসফরাসের মধ্যে সংযোগ খুঁজতে গিয়ে সর্বপ্রথম এটি ইউরিনে পাওয়া যায়। এক সময় হাড়ের ভস্ম ছিল গুরুত্বপূর্ণ ফসফেটের উৎস।

ফসফেট খনিজগুলো মূলত জীবাশ্ম। গাণিতিকভাবে বলা যায়, সুবিশাল ফসফেট যৌগের বেশির ভাগই সার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ফসফরাসকে অপসারিত করতে ফসফেটের প্রয়োজন যা উদ্ভিদ মাটি থেকে অপসারণ করে আর এর বার্ষিক চাহিদা জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দ্বিগুণ হয়ে যাচ্ছে। এটি ডিটারজেন্ট, কীটনাশক তৈরিতে ও স্নায়ুর প্রতিনিধি হিসেবেও কাজ করে।

ফসফরাস সাধারণত দুইভাবে পাওয়া যায়- ১) সাদা ফসফরাস ২) লাল ফসফরাস এটির আরেকটি গঠন হলো স্কারলেট ফসফরাস। এটি প্র্রখর সূর্যালোকের উপস্থিতিতে শ্বেত ফসফরাস ও কার্বন ডাইসালফাইড সংযুক্ত করে উৎপন্ন করা হয়। কালোথফসফরাসও উৎপন্ন হয় শ্বেত ফসফরাসকে প্রখর তাপে রেখে। আরেকটি গঠন হলো- ডাই ফসফরাস যা খুবই সক্রিয়।

ব্যবহার : ঘর্ষণ দিয়াশলাই প্রস্তুতিতে শ্বেত ফসফরাস ব্যবহার করা হয়। যুদ্ধকালে ধূম্রজাল, হাতবোমা ও আগুনে বোমা তৈরিতে শ্বেত ফসফরাস ব্যবহার করা হয়। ফসফর ব্রোঞ্জ নামক সংকর ধাতু ও কীটনাশক তৈরিতে ফসফরাস ব্যবহার করা হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<113466 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1