সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
সা ক্ষা ৎ কা র

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশেই রাজনীতিতে আসা

ফেরদৌস আহমেদ- প্রথমের্ যাম্প মডেল। এরপর পা রাখেন চিত্রজগতে। ১৯৯৭ সালে ঢাকাই সিনেমার হার্টথ্রব নায়ক সালমান শাহের অসমাপ্ত কাজ 'বুকের ভিতর আগুন' দিয়ে প্রথম অভিনয় করেন। তবে তার প্রথম সিনেমা মুক্তি পায় ওই বছরই গাজী মাজহারুল আনোয়ারের 'পৃথিবী আমারে চায় না'। পরের বছরই ১৯৯৮ সালে কলকাতা থেকে নির্মিত 'হঠাৎ বৃষ্টি'ই তাকে রাতারাতি তারকা খ্যাতি এনে দেয়। সেই থেকে তিনি ঢাকার পাশাপাশি কলকাতা ও বলিউডের সিনেমায় অভিনয় করে নিজের তারকা খ্যাতিকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী করে তোলেন। তার স্বীকৃতিস্বরূপ ঢাকাই ইন্ডাস্ট্রি থেকে প্রথমবারের মতো একজন নায়ক হিসেবে ঢাকা-১০ আসন থেকে জাতীয় সংসদে লড়তে যাচ্ছেন তিনি। এ অভিনেতার নির্বাচনসহ সিনেমা নিয়ে সাক্ষাৎকার নিয়েছেন মাতিয়ার রাফায়েল
নতুনধারা
  ২৮ নভেম্বর ২০২৩, ০০:০০
ফেরদৌস আহমেদ

বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী চাইলে নির্বাচনে লড়বেন-

সেই টিকিট পেয়ে কেমন লাগছে?

বলার অপেক্ষা রাখে না- এ যে কত আনন্দের, কত যে ভালো লাগার; কোনোভাবেই বর্ণনা করা যাবে না এর অনুভূতিকে। আমি সর্বপ্রথমেই কৃতজ্ঞতা জানাই মহান আলস্নাহতালার প্রতি। এরপরই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি। যিনি আমাকে এই মহান দায়িত্ব পালন করার জন্য মনোনীত করেছেন। আমার রাজনীতিতেও আসা হয়েছে তার নির্দেশেই। আমি আমার সর্বোচ্চটা দিয়ে চেষ্টা করব এই দায়িত্ব পালন করার। প্রার্থী হিসেবে যে কেউই প্রত্যাশা করেন জয়ী হওয়ার ব্যাপারে। আমি শুধু জয়ী হওয়াই নয়, আশা আছে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হওয়ার। বাকিটা সবার সহযোগিতা এবং উপরওয়ালার ইচ্ছা।

সিনেমায় নতুন কী কাজ করছেন?

নতুন একটি সিনেমায় কাজ করছি। সম্প্রতি চট্টগ্রামে এর প্রথম লটের শুটিং করেছি। সরকারি অনুদানে রিফাত মোস্তফার পরিচালনায় এই ছবিটির নাম 'যুদ্ধ জীবন'। এ ছাড়া অন্য কাজ নেই এই মুহূর্তে। কথাবার্তা চলছে, সামনে হয়ত নতুন কাজে হাত দিতে পারি।

ছবিটি কি মুক্তিযুদ্ধের ওপর- গল্পটি কেমন?

সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের নয়। এটা যুদ্ধ পরবর্তী অন্য জীবনের গল্প। একেবারেই ডিফারেন্ট ছবি হবে এটা। ছবিটিতে একজন আর্মি অফিসারের ভূমিকায় অভিনয় করছি আমি। বাংলাদেশে আর্মির ওপর আগে কোনো সিনেমা হয়নি। ছবিতে আমাকে একেবারে নতুন লুকে দেখা যাবে। এতে আমার বিপরীতে আছেন নাবিলা। তবে গল্পটি ডিসক্লোজ করা যাবে না। ডিরেক্টরের বারণ আছে। আর্মির ওপর প্রথম সিনেমা তো তাই এটা এখনই প্রকাশ করতে চান না ওরা।

'দামপাড়া'সহ আপনার আরও কয়টি সিনেমা

মুক্তি পাওয়ার কথা ছিল- কী হলো?

আমি জানি না, 'দামপাড়া' সিনেমাটি এ বছর মুক্তি দেওয়া হলো না। তবে এখন যেরকম রাজনৈতিক পরিস্থিতি চলছে তাতে করে এ বছর আমার কোনো সিনেমা মুক্তি পাবে না। আগামী বছর মুক্তি পাবে।

ইন্ডিয়ান সিনেমায় ঢাকার অনেক অভিনেত্রী কাজ

পেলেও অভিনেতারা কেন পাচ্ছেন না?

এটা আমি কি করে বলব। আমি তো কলকাতার ইন্ডাস্ট্রিতে ভালোই জায়গা তৈরি করে নিয়েছিলাম। বলিউডেও কাজ করেছি। বাকিরা কেন পারছে না সেটা তো তাদেরই ব্যর্থতা।

যেসব নায়িকা ঢাকাতেই প্রমাণ করতে পারেননি-

তারাও তো ওখানে সুযোগ পাচ্ছেন?

কলকাতার সিনেমা আসলে মধ্যবিত্ত বেইজড সিনেমা। ওখানকার সিনেমা আসলে নায়ক ডমিনেটেড তো তাই তারা নতুন নায়িকা যে কোনো দেশ থেকেই নিতে পারে। তবে যিনি মেইন প্রোটাগনিস্ট, যাকে দিয়ে সিনেমাটা চলবে তার সঙ্গে অন্য যাকে গ্রহণযোগ্য মনে করবে তাকে তারা নিতেই পারেন। তো, আমি যখন কলকাতায় কাজ করি তখন আমার সব সিনেমাই ওখানে হিট হয়েছে। চলচ্চিত্রের কাজ তো নির্ভর করে অনেক কিছুর সফলতার ওপরে। যিনি সফল তাকে নিয়েই পথ চলে। সেই অর্থে আরও যারা কলকাতায় গেছেন সেই সফলতা তারা পাননি। হয়ত ভবিষ্যতে পাবে। আমি তো তাদেরই মনে করতাম। ওরাও আমাকে তাদেরই মনে করতেন। সে জায়গাতে আমি নিজেকে নিয়ে যেতে পেরেছি বলেই আজকে আমি কলকাতায় ৫০ থেকে ৬০টি সিনেমা করতে পেরেছি।

কেউ তো বলছেন কলকাতার সিনেমায়

কাজ করতে চান না?

(হাসি) মানে, তিনি পাননি তাই খাননি। তো, এমন ঘটনা কি কখনো হয়েছে ওখানকার কোনো সিনেমা থেকে তিনি প্রস্তাব পেয়েছেন কিন্তু কাজটি ওখানে করবেন না বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন? বা একে একে নতুন প্রস্তাব এলেও সব ছেড়ে দিয়েছেন!

আপনার একই সঙ্গে দুই বাংলায় জনপ্রিয়

হওয়াটা তো বিরাট অর্জন!

এটা সবার দোয়া ও ভালোবাসা। উপরওয়ালার ইচ্ছা। তবে এটার পুরো কৃতিত্ব দুই বাংলার দর্শকদের। দুই বাংলার মানুষই আমাকে সমান তালে ভালোবেসেছে, ভালোবাসছে, ভালোবাসবে- এটা তো আমার জীবনের সবচেয়ে বড় সফলতা।

দুই বাংলায় কাজ করতে গিয়ে ভালো সিনেমাও

কি ছাড়তে হয়নি?

কিছু পেতে হলে তো কিছু ছাড় দিতেই হয়- তাই না! একজীবনে তো একজন মানুষের পক্ষে সবকিছু পাওয়া সম্ভব না। একই সঙ্গে দুই ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে গিয়ে আমাকে এখানকার সিনেমা যেমন ছাড়তে হয়েছে কলকাতার সিনেমাও ছাড়তে হয়েছে। এ নিয়ে মাঝেমাঝে আমার কষ্টও হয়। তবে আমি কমিটমেন্টে বিশ্বাসী। একটা কমিটমেন্ট করার পর যদি দেখি আরও অনেক ভালো সিনেমা পেয়েছি- তাই বলে সেটার জন্য আগের কমিটমেন্ট ভঙ্গ করিনি। কলকাতায়ও কেউ বলতে পারবে না যে, কলকাতায় শিডিউল দিয়ে ফেরদৌস ঢাকায় চলে গেছে। এটা কেউ বলতে পারবে না। কমিটমেন্টে বিশ্বাসী বলেই আমাকে অনেক ভালো ভালো কাজ ছাড়তে হয়েছে।।

পরিচালনায় আসতে ইচ্ছে হয় না?

পরিচালনার কাজ ভীষণ কঠিন কাজ। অনেক বড় দায়িত্ব। আর আমি যেটা বিশ্বাস করি, সেটা হচ্ছে সবাই কেন সব কাজ করবে। যার যেটা করণীয় তার সেটাই করা উচিত। আমার কাজ চলচ্চিত্রে অভিনয় করা, জনমানুষের সঙ্গে কাজ করা- যেটা আমার করার সেটা করছি। পরিচালনার কাজ আমার কাছে মনে হয় অত্যন্ত দুরূহ একটা কাজ।

এখনো কি হাঁটাহাঁটি করেন?

ওই হাঁটা দিয়েই তো আমার জীবনের শুরু। আমি হাঁটতে ভালোবাসি। এখন হয়ত সেই অর্থে হয়ে ওঠে না। ওই হাঁটতে হাঁটতেই তো আমি কলকাতায় চলে গেলাম, তারপরে বোম্বে। তাই এখনো যদি কোথাও থেকে হাঁটতে ডাকা হয় সময় ও সুযোগ থাকলে তখনই রাজি হয়ে যাই। আমাকে আমার চলা শিখিয়েছের্ যাম্পই। সেই শিক্ষা আজীবন থাকবে আমার জীবনে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে