শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সরকারি মেডিকেলে এবার আসন প্রতি প্রার্থী ২৮ জন

মেডিকেলে ভর্তি আবেদন সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর
আমানুর রহমান
  ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০০:০০

আগামী ২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশের সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোর ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষা। এবার ভর্তি আবেদন পড়েছে বিগত বছরের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ। গত বছর আবেদন পড়েছিল ৭২ হাজার ৩২৮টি, এবার (বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টা পর্যন্ত) ভর্তি পরীক্ষার জন্য আবেদন করেছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৩৭৫ জন। অন-লাইনে আবেদনের বেঁধে দেওয়া সময়সীমা শেষ হবে ১ মার্চ রাত ১২টায়। আগামী কয়েক ঘণ্টায় আরও কিছু আবেদন পড়তে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। আবেদন বেশি হওয়ার কারণে ভর্তি পরীক্ষার ভেনু্য বাড়াতে হয়েছে বলে যায়াযায়দিন'কে জানিয়ে স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (চিকিৎসা শিক্ষা ও স্বাস্থ্য জনশক্তি উন্নয়ন) অধ্যাপক ডা. এ কে এম আহসান হাবিব বলেন, ভর্তি কমিটির সঙ্গে আলাপ করেই এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার ভর্তির আবেদন বেশি পড়েছে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, এবার ভর্তির আবেদনকারীর সংখ্যা বাড়তে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকেই ১ লাখ ২১ হাজার পরীক্ষার্থীর ভর্তি পরীক্ষা নেওয়ার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। পরে এ সংখ্যা বাড়িয়ে ১ লাখ ৩৫ হাজার করা হয়েছে। তবে ২ মার্চের আগ পর্যন্ত আবেদনকারীদের চূড়ান্ত সংখ্যা জানা যাবে না। কেন্দ্র সংখ্যা না বাড়িয়ে ভেনু্য সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে, অতিরিক্ত চাপ সামাল দেয়ার জন্য।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত যে আবেদন জমা পড়েছে, সে পরিসংখ্যান অনুসারে ভর্তি যোগ্য প্রতিটি

\হআসনের বিপরীতে মোট ২৮ জন শিক্ষার্র্থী সরকারি মেডিকেলে ভর্তির জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। দেশের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ আসন হচ্ছে যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৫০টি ও ৫৪৫টি। গত ১১ ফেব্রম্নয়ারি থেকে শুরু হওয়া অন-লাইন আবেদন আগামীকাল পহেলা মার্চ শেষ হবে।

মহামারি করোনার সংক্রমণের আশঙ্কায় এ বছর এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়নি। এইচএসসি পরীক্ষার্থীদের জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের মূল্যায়নের ভিত্তিতে অটোপাস দেওয়া হয়েছে। এ কারণে পাসের হার শতভাগ এবং জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীর সংখ্যাও গত বছরের চেয়ে দ্বিগুণ হওয়ায় মেডিকেল কলেজগুলোতে ভর্তিচ্ছু পরীক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। তাই ভর্তিচ্ছুদের পরীক্ষা নিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে অধিদপ্তরকে।

স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. আহসান হাবিব শনিবার বিকালে যায়াযায়দিনকে বলেন, এ বছর আবেদন বেশি পড়তে পারে, এমন সম্ভাবনা থেকেই প্রথমে এক লাখ ২১ হাজার পরীক্ষার্থী হতে পারে অনুমিত পরিসংখ্যান ধরে নিয়ে ৩৭টি সরকারি মেডিকেল কলেজের কোনটিতে কতজন আবেদন করতে পারবেন তা নির্ধারণ করে দেন। কিন্তু শুরু দিকে আবেদনকারীর সংখ্যা বেশি হওয়ায় আসন সংখ্যা বাড়িয়ে এক লাখ ৩৫ হাজার করে পরীক্ষার আসন বিন্যাস করা হয়েছে।

অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে আবেদনের জন্য মেডিকেল কলেজগুলোতে যে আসন সংখ্যা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল, তা পূর্ণ হয়ে গেছে। আবেদন বেশি হওয়ায় এখন আসন বৃদ্ধি করা হয়েছে বিভিন্ন কেন্দ্রে। এজন্য কেন্দ্র না বাড়িয়ে কেন্দ্রের অধীনে ভেনু্য বাড়ানো হয়েছে। এবার যে ১১টি মেডিকেল কলেজে পরীক্ষার আসন বণ্টন করা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে- ঢাকা মেডিকেল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী, স্যার সলিমুলস্নাহ মিটফোর্ড, মুগদা, ঢাকা ডেন্টাল, বরিশাল, রংপুর, কুমিলস্না, খুলনা, দিনাজপুর ও পাবনা।

অধিদপ্তর সূত্রে বলা হয়েছে, দেশে সরকারিভাবে পরিচালিত ৩৭টি মেডিকেল কলেজে আসন সংখ্যা ৪ হাজার ৩৫০টি। মোট আসনের মধ্যে সাধারণ কোটায় ৪ হাজার ২৩০টি, মুক্তিযোদ্ধা কোটায় (২ শতাংশ) ৮৭টি, উপজাতি কোটায় নয়টি, অ-উপজাতি কোটায় তিনটি এবং অন্যান্য জেলার উপজাতি ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের জন্য আটটি আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে।

দেশের সরকারি ও বেসরকারি মেডিকেল কলেজের এমবিবিএস এবং ডেন্টাল কলেজ ও ইউনিটগুলোর বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষা স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অধীনে কেন্দ্রীয়ভাবে অনুষ্ঠিত হবে। বরাবরের মতো সারাদেশের সব সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল ও ডেন্টালের জন্য একটিই গুচ্ছভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

স্ব্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, সারাদেশের সরকারি মেডিকেল কলেজ হচ্ছে, (এ বছর যুক্ত হওয়া একটিসহ) ৩৭টি। সরকারি ডেন্টাল কলেজ হচ্ছে ১টি, এবং ডেন্টাল ইউনিট হচ্ছে ৯টি। অপরদিকে, বেসরকারি মেডিকেল কলেজের সংখ্যা হচ্ছে ৭০টি। বেসরকারি ডেন্টাল কলেজ হচ্ছে ১২টি আর ইউনিট হচ্ছে ১৪টি। মেধারভিত্তিতে আসনওয়ারী ভর্তি সুযোগ পাবেন আগে সরকারি কলেজগুলোতে পরে বেসরকারিতে। কেউ চাইলে সরকারিতে না হয়ে বেসরকারি মেডিকেলেও ভর্তি হতে পারবেন। দেশের সরকারি মেডিকেল ও ডেন্টাল কলেজ আসন হচ্ছে যথাক্রমে ৪ হাজার ৩৫০টি ও ৫৪৫টি। বেসরকারিতে ৬ হাজার ৩৪০টি ও ১ হাজার ৪০৫টি। # #

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে