শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

নানা সংকটে জর্জরিত জাবি চিকিৎসা কেন্দ্র

ম শিহাব উদ্দিন, জাবি
  ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০০:০০

করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) আনুষ্ঠানিকভাবে খোলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন প্রশাসন। প্রস্তুতি হিসেবে চলছে আবাসিক হল ও একাডেমিক ভবন সংস্কার ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার কাজ। শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার গুরুত্ব দেওয়ার কথা বলা হলেও অবহেলায় রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র চিকিৎসা কেন্দ্রটি।

ক্যাম্পাস খোলার পর শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে চিকিৎসা কেন্দ্রের নেই কোনো বাজেট ও সংকট নিরসনে কার্যকরী পদক্ষেপ। চিকিৎসক, নার্স, আয়া, চিকিৎসা সরঞ্জাম, উন্নত যন্ত্রপাতি, ওষুধসহ নানা সংকটে জর্জরিত চিকিৎসা কেন্দ্রটি। বারবার চিকিৎসা কেন্দ্রটি উন্নয়নের জন্য আবেদন করা হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ।

বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পর চিকিৎসা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়ার প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রধান মেডিকেল অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) ডা. মো. শামছুর রহমান যায়যায়দিনকে জানান, বিগত ১৫ বছরে শিক্ষার্থী তথা রোগীর সংখ্যা অনেকগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু সে অনুপাতে চিকিৎসকের সংখ্যা বৃদ্ধি পায়নি। চিকিৎসকের মোট ১১টি পদ থাকলেও বর্তমানে আছেন ৯ জন। তাদের মধ্যে কেউ বিশেষজ্ঞ নন, সবাই সাধারণ এমবিবিএস ডাক্তার। এখন তাদের মধ্যে ২টি পদ কমিয়ে একজনকে অস্থায়ীভাবে রাত্রিকালীন চিকিৎসক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।

তিনি আরও জানান, চিকিৎসা কেন্দ্রের জন্য কমপক্ষে ১০টি অ্যাম্বুলেন্স প্রয়োজন। আছে মাত্র তিনটি। এর মধ্যে ১টি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। ফলে আমরা জরুরি প্রয়োজনে কোনো রোগীকে নিকটস্থ হাসপাতালে সঠিক সময়ে পৌঁছাতে পারছি না। এ ছাড়া রয়েছে উন্নতমানের যন্ত্রপাতির সংকট। চিকিৎসাকেন্দ্রের নার্স ও ইমার্জেন্সি বিভাগের ইনচার্জ মাহমুদা পারভীন সুমি বলেন, এ পর্যন্ত দুইটা পিপিই পেয়েছি। গত দুই মাস ধরে হ্যান্ডগস্নাভসও দিচ্ছে না। জীবনের ঝুঁকি নিয়েই করোনা রোগীকে সেবা দিচ্ছি। প্রতিদিন প্রায় দুই শতাধিক রোগীর সেবা দেওয়া ৫ জন নার্সের পক্ষে কষ্টসাধ্য। বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও আশপাশের প্রায় ১০টি স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, কেন্দ্রীয় গো প্রজনন কেন্দ্র, শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন কেন্দ্র ও বাংলাদেশ প্রাণিসম্পদ গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধিকাংশ কর্মকর্তা ও কর্মচারী জাবি'র চিকিৎসা কেন্দ্র থেকে প্রাথমিক চিকিৎসাসেবা নিয়ে থাকেন।

তিনি আরও জানান, অক্সিজেন সিলিন্ডারের সংখ্যা বৃদ্ধি না করে ১৬টির মধ্যে ৩টি বিক্রি করা হয়েছে। চিকিৎসাসেবার জন্য অস্থায়ী শয্যা আছে ৮টি। স্থায়ী কোনো শয্যায় রোগী ভর্তির ব্যবস্থা নেই। ফলে রোগীকে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

অ্যাম্বুলেন্স চালক কামাল হোসেন বলেন, প্রতিদিন চার-পাঁচজন রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয়। করোনার খারাপ পরিস্থিতিতেও মাস্ক ছাড়া পিপিই ও গস্নাভস দেয়নি। শুধু মাস্ক পরেই করোনা রোগী নিয়ে চলাফেরা করতে হয়েছে। এখনো মাস্ক ছাড়া কিছু দেওয়া হয় না।

পরিবহণ অফিসের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অধ্যাপক আলী আজম তালুকদার বলেন, নতুন ৩টি অ্যাম্বুলেন্স কেনা হবে। আমাদের হাতে ফাইল এসেছে। ক্যাম্পাস খোলার আগেই নতুন অ্যাম্বুলেন্স আমরা পেয়ে যাব বলে আশাবাদী।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে