সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তায় নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আশঙ্কা জাতিসংঘের

ইউক্রেনের নোভা কাখোভকা বাঁধ ধসে বিপুল কৃষি জমি পস্নাবিত
যাযাদি ডেস্ক
  ১৪ জুন ২০২৩, ০০:০০

সোভিয়েত আমলে নির্মিত ইউক্রেনের নোভা কাখোভকা বাঁধ ধসে ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। এতে দিনিপ্রো নদীর পানি উপচে ইউক্রেনের বিপুল এলাকার কৃষি জমি পস্নাবিত হয়েছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়ে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তায় ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার জাতিসংঘের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এই বাঁধ ধসে পড়ার কারণে খাদ্যের মূল্য বৃদ্ধি পেতে পারে এবং কয়েক হাজারে মানুষ খাবার পানির তীব্র সংকটে পড়তে পারে। ওই বাঁধ গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনায় ইউক্রেন এবং রাশিয়া একে অন্যকে দোষারোপ করছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এটা জানা সম্ভব হয়নি যে, আসলেই ওই হামলার পেছনে কারা দায়ী।

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধে সোভিয়েত আমলের গুরুত্বপূর্ণ ওই বাঁধটি গত সপ্তাহে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে দিনিপ্রো নদীর পানি বেড়ে আশপাশে বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বন্যায় ইউক্রেনের বিপুল এলাকার কৃষিজমি পস্নাবিত হয়েছে। ফলে দেশটির কৃষিখাতে দীর্ঘস্থায়ী বিপর্যয় দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।

ইউক্রেনীয় কৃষি মন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ ইউক্রেনের মাঠগুলো আগামী বছরের শুরুর দিকেই 'মরুভূমিতে পরিণত হতে পারে'। কারণ

কাখোভকা জলাধারের ওপর নির্ভরশীল সেচ ব্যবস্থাগুলো আর কাজ করছে না। যুদ্ধের আগে ওই এলাকার ৩১টি সেচব্যবস্থার মাধ্যমে ৫ লাখ ৮৪ হাজার হেক্টর কৃষিজমিতে পানি সরবরাহ করা হতো। এই পানির একমাত্র উৎস ছিল কাখোভকা জলাধার।

তবে স্যাটেলাইটের বেশ কিছু ছবি থেকে বাঁধে বিস্ফোরণের মতো কিছু একটা হতে দেখা গেছে। কিন্তু সেখানে আসলে কী ঘটেছে তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।

জাতিসংঘের সহায়তা বিষয়ক প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস রয়টার্সকে বলেন, এই বাঁধ ধসে পড়ার কারণে খাদ্য নিরাপত্তার ওপর উলেস্নখযোগ্য প্রভাব পড়তে পারে। এটা শুধু ইউক্রেনের জন্য নয় বরং, পুরো বিশ্বের জন্যই গুরুত্বপূর্ণ। আমরা ইতোমধ্যেই খাদ্য নিরাপত্তা নিয়ে সংকটে আছি। আমি নিশ্চিত খাদ্যের দাম এখন আরও বাড়বে।

তিনি বলেন, এটা প্রায় অনিবার্য যে, আমরা পরবর্তী ফসল বপন, উৎপাদন এবং ফসল কাটার ক্ষেত্রে বড় ধরনের সমস্যা দেখতে যাচ্ছি। তাই আমরা যা দেখতে পাচ্ছি তাতে বিশ্বব্যাপী খাদ্য নিরাপত্তার ওপর একটি বড় প্রভাব পড়তে যাচ্ছে এবং এটাই ঘটতে চলেছে।

প্রসঙ্গত, বিশ্বের দুটি প্রধান খাদ্য উৎপাদনকারী দেশ হচ্ছে ইউক্রেন এবং রাশিয়া। গম, বার্লি, ভুট্টা, সরিষা, সরিষার তেল, সূর্যমুখীর বীজ এবং সূর্যমুখী তেলের বাজারে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশ উলেস্নখ করে গ্রিফিথ বলেন, প্রায় ৭ লাখ মানুষ পানির জন্য এই বাঁধের পেছনের জলাধারের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, বিশুদ্ধ পানি ছাড়া মানুষ রোগে আক্রান্ত হবে এবং শিশুরা এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিপূর্ণ।

তিনি আরও বলেন, বেসামরিক অবকাঠামোতে এ ধরনের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি জেনেভা কনভেনশনসহ আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের সম্পূর্ণ পরিপন্থি। যে বা যারা এটা করেছে, তারা জেনেভা কনভেনশন লঙ্ঘন করেছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে