সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
শিক্ষক-শিক্ষার্থী অভিভাবকদের মধ্যে ক্ষোভ

বাঁশখালীতে খেলার পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে ফলাফল ঘোষণা

বাঁশখালী (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
  ১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে ৫২টি স্কুল-মাদ্রাসার গ্রীষ্মকালীন ৫০তম জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় (খেলা ছাড়া) শিক্ষার্থীদের পরিবর্তে লটারির মাধ্যমে শিক্ষকদের জয়ী করার অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামুনের বিরুদ্ধে। ফুটবল, হ্যান্ডবল, দাবা, কাবাডি, সাঁতার ৫টি ইভেন্টের খেলায় এই রকম সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় পুরো বাঁশখালী জুড়ে শিক্ষার্থী, শিক্ষক, অভিভাবক ও ক্রীড়া সংগঠকদের মধ্যে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা। এ ছাড়া অধিকাংশ শিক্ষার্থী খেলায় অংশগ্রহণ করতে না পেরে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।

তবে এই শিক্ষা কর্মকর্তার এমন কর্মকান্ডের ঘটনার খবর জানেন না খোদ জাতীয় ক্রীড়া কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার ও পৃষ্ঠপোষক উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী।

জানা যায়, বাঁশখালী উপজেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ৫২টি স্কুল মাদ্রাসা রয়েছে। তার মধ্যে ২৭টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২৩টি মাদ্রাসা ও ২টি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। তবে এসব প্রতিষ্ঠান থেকে জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সম্পন্ন করার কথা বলে প্রতিষ্ঠান প্রতি ৫০০ টাকা করে ২৬ হাজার টাকা চাঁদা তোলা হয়। এদিকে চাঁদা তোলার পরও উপজেলার ৭২ হাজার ৬৩৬ জন শিক্ষার্থীর উলিস্নখিত খেলায় কোনো ধরনের প্রতিযোগিতা হয়নি। এ নিয়ে কথা উঠলে গত ৮ সেপ্টেম্বর শুধু সাঁতার প্রতিযোগিতাটা সম্পন্ন করেছে। অন্যদিকে হ্যান্ডবল, দাবা ও কাবাডি খেলায় উপস্থিত শিক্ষকদের মধ্যে লটারি করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে। ফুটবল খেলায় লটারিও হয়নি, খেলাও হয়নি।

বাঁশখালী উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা নুরুল হুদা বলেন, 'মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন ঠিকমতো অফিস করেন না। জাতীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার বিষয় আমাদের জানানওনি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন বলেন, 'বাংলাদেশের কোনো উপজেলায় একশ' ভাগ খেলাধুলা হয় না। আমি অন্তত লটারি দিয়ে হলেও খেলা টিকিয়ে রেখেছি। প্রতি প্রতিষ্ঠান থেকে যে ৫০০ টাকা করে নিয়েছি তা খেলাধুলার কাজে ব্যবহার করেছি। চাঁদা নেওয়া টাকা শিক্ষার্থীদেরর উপহার দিয়েছি এবং ক্রীড়া শিক্ষকদের পারিশ্রমিক দিয়েছি।'

জাতীয় ক্রীড়া কমিটির সভাপতি বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন আক্তার বলেন, 'শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন আমাকে কেন বিষয়টি জানালেন না, তার খোঁজ নিচ্ছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের কাজ হতে দেওয়া হবে না।

বাঁশখালী উপজেলা জাতীয় ক্রীড়া কমিটির পৃষ্ঠপোষক উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী মোহাম্মদ গালিব সাদলী বলেন, 'আমি যে ওই খেলার পৃষ্ঠপোষক তিনি ওই বিষয়টি উপস্থাপন করেননি। স্কুল-মাদ্রাসার শিক্ষার্থীদের নিয়ে এ ধরনের কাজ করে উনি ঠিক করেননি।'

এ বিষয়ে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা উত্তম খীসা বলেন, 'লটারির মাধ্যমে বিজয়ী করার কোনো নিয়ম নেই। শিক্ষক নয়, এমনকি শিক্ষার্থীদেরও করার নিয়ম নেই। খেলায় শিক্ষার্থীদের বাধ্যতামূলক অংশগ্রহণ করে খেলায় জিততে হবে। বিষয়টি আমি তদন্ত করে দেখব। এদিকে শিক্ষা কর্মকর্তা মামুন যে নিয়মিত অফিস করেন না তা তার জানা নেই বলে জানান।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে