মঙ্গলবার, ০৬ মে ২০২৫, ২৩ বৈশাখ ১৪৩২

ঈশ্বরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
  ৩০ অক্টোবর ২০২৪, ০০:০০
ঈশ্বরগঞ্জে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ

ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে মলিস্নকপুর লক্ষ্ণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম ও সাবেক সভাপতি আবু বাহারুল আলম মজনুর বিরুদ্ধে নিয়োগের প্রলোভনে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভোগী।

জানা যায়, উপজেলার মাইজবাগ ইউনিয়নে মলিস্নকপুর লক্ষ্ণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়টি অবস্থিত। সেই বিদ্যালয়ের জমিদাতা মৃত তমিজ উদ্দিনের ছেলে ভুক্তভোগী এরশাদ মিয়া। সেই এরশাদ মিয়াকে বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেবে বলে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা দিতে বলেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম ও সাবেক সভাপতি আবু বাহারুল আলম মজনু। এদিকে বেকার এরশাদ মিয়া বাবার জমি দেওয়া বিদ্যালয়ে চাকরি পাওয়ার আশায় নিজের ৩৫ শতাংশ জমি বিক্রি করে ১২ ডিসেম্বর ২০১৩ সালে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা দেন। টাকা নেওয়ার সময় তারা ৫ মাসের মধ্যে সহকারী শিক্ষক পদে চাকরি দেবেন বলে আস্বস্ত করেন। কিন্তু নির্ধারিত সময় পার হলেও এরশাদের চাকরি না হওয়ায় তিনি আবারও তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এসময় তারা আরও কিছুদিন সময় নেন। সেই সময় পার হওয়ার পর তারা এরশাদকে চাকরি দেননি। এদিকে ভুক্তভোগী এরশাদ যখন বুঝতে পারেন তারা চাকরি দেবেন না, তখন টাকা ফেরত চান। সেই টাকা দিতে তারা নানা টালবাহানা শুরু করেন। এক পর্যায়ে টাকা দেবেন না বলে জানিয়ে দেন এবং এরশাদকে হুমকি দিতে থাকেন। এ অবস্থায় বিদ্যালয়টির নতুন পরিচালনা কমিটি গঠিত হয়। ওই কমিটির কাছেও এরশাদ তার চাকরির বিষয়টি জানান। এসময় প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম ওই নতুন কমিটিকে নিয়ে অফিস সহকারী পদে চাকরি দেবেন বলে আস্বস্ত করেন। কিন্তু সেই চাকরিও এরশাদের কপালে জোটেনি। পরে ভুক্তভোগী এরশাদ তার টাকা ফেরত দিতে বললে তার ওপর শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের হুমকি ও মানসিক নির্যাতন।

এদিকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর এরশাদ গত বুধবার ঈশ্বরগঞ্জ ইউএনও বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে অভিযোগটির অনুলিপি দেন ঈশ্বরগঞ্জ থানা, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস ও ঈশ্বরগঞ্জ প্রেস ক্লাবে। অভিযোগ পাওয়ার পর বিষয়টি নিয়ে তদন্তে নামে পুলিশ।

এরশাদ মিয়া বলেন, 'আমার পূর্বপুরুষ ওই বিদ্যালয়ের জমিদাতা। তাই আমি চাকরির জন্য তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। পরে তারা দুইজন আমাকে চাকরি দেবেন বলে টাকা চান। আমি নিজের ৩৫ শতাংশ জমি বিক্রি করে সভাপতি এবং প্রধান শিক্ষককে টাকা দিয়েছি। তারা আমাকে আর চাকরি দেননি। পরে টাকা ফেরত চাইলে তারা আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দেন। আমি এর সঠিক বিচার চাই।

বিদ্যালয়ের সাবেক সভাপতি আবু বাহারুল আলম মজনুর বাড়িতে গিয়ে তাকে পাওয়া যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। যে কারণে তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

বিষয়টি নিয়ে মলিস্নকপুর লক্ষ্ণীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম বলেন, 'অভিযোগকারী এরশাদ মিয়া আমার বাসায় গিয়েছিলেন। পরে আমি তাকে আস্বস্ত করেছি অন্য দাতা সদস্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছে। পদ খালি হলে তাকেও চাকরি দেওয়া হবে।'

ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আশরাফুল ইসলাম বলেন, 'অভিযোগের একটি অনুলিপি পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ইউএনও'র সঙ্গে আলোচনা করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

ইউএনও সারমিনা সাত্তার বলেন, 'লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে