সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ

দেবিদ্বার রণক্ষেত্র সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ২৫ জন আহত

স্টাফ রিপোর্টার, কুমিলস্না ও দেবিদ্বার প্রতিনিধি
  ১৭ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

কুমিলস্নার দেবিদ্বারের মাশিকাড়া স্কুলের প্রধান শিক্ষক কর্তৃক এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে ক্ষুব্ধ শিক্ষার্থী-এলাকাবাসীর সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে পুলিশসহ ২৫ জন আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়েছেন সাতজন। এদিকে বুধবার এ ঘটনার পর বৃহস্পতিবার দুপুরে দেবিদ্বার থানায় পৃথক দু'টি মামলায় প্রায় ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মোকতল হোসেনসহ ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে বৃহস্পতিবার বিকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

জানা গেছে, বুধবার দেবিদ্বারের মাশিকাড়া উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তার অফিস কক্ষে দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে তার শ্লীলতাহানি করেন। ওই ঘটনার পর ছাত্রীর সহপাঠীরা ভুক্তভোগীকে বাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার বাবার কাছে ঘটনার বর্ণনা দেয়।

এদিকে ঘটনাটি এলাকায় জানাজানির পর বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও বিপুলসংখ্যক এলাকাবাসী বিকালের দিকে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয় ঘেরাও করে তাকে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো. হুমায়ুন কবির, বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতিসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সহযোগিতায়ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসেনি।

স্থানীয় সূত্রগুলো জানায়, পরে বিক্ষুব্ধ জনতা প্রধান শিক্ষককে স্কুল মাঠে এনে বিচারের দাবি জানায়। সন্ধ্যায় বৈদু্যতিক সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে প্রধান শিক্ষককে রক্ষায় তার পক্ষে বহিরাগত কিছু লোক এসে শিক্ষার্থীদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। এ হামলায় অন্তত ২৫ জন শিক্ষার্থী আহত হয়। আহতরা সবাই ওই বিদ্যালয়ের নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র। রাতে ছাত্রদের ওপর হামলার পর পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষককে প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ করেন ছাত্র, অভিভাবক ও এলাকাবাসী। খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ অবস্থা থেকে উদ্ধারে পুলিশও ঘটনাস্থলে আসলে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা ও পুলিশের মধ্যে ত্রিমুখী সংঘর্ষ শুরু হয়। গভীর রাত পর্যন্ত ধাওয়া-পালটাধাওয়া, অগ্নিসংযোগ, ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলি ও অস্ত্র খোয়ার ঘটনা ঘটে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহতরা হলেন সিয়াম (১৫), মিনহাজ (১৭), অলি (১৬), আকাশ (১৬), আরিফুল ইসলাম (২৬), সাব্বির (১৮) ও হৃদয় (১৭)। তদের প্রত্যেকেকে দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য বমপেস্নক্সে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে উন্নত চিকিৎসার জন্য কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

দেবিদ্বার থানার ওসি কমল কৃষ্ণ ধর জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ অন্তত ৩০০ রাউন্ড শর্টগানের গুলি ছুুঁড়ে। এ সময় পুলিশের পাঁচ সদস্য আহত হয়েছেন। গুরুতর আহত কনস্টেবল জহির ও সারোয়ারকে কুমিলস্না মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষককে আসামি করে দেবিদ্বার থানায় একটি ও থানার এসআই মুকতার হোসেন মানিক বাদী হয়ে এজাহার নামীয় ১০ জন ও অজ্ঞাতনামা আরও ২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তিনি আরও জানান, খোয়া যাওয়া অস্ত্রটি বৃহস্পতিবার সকালে উদ্ধার করা হয়েছে। গ্রেপ্তার প্রধান শিক্ষকসহ ১১ জনকে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে