শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১
নগরবাড়ী নদীবন্দর নির্মাণ প্রকল্প

৫ বছরেও শেষ হয়নি ৩ বছরের প্রকল্প!

মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়ানোর তাগিদ
আরিফ আহমেদ সিদ্দিকী, পাবনা
  ২৩ মার্চ ২০২৩, ০০:০০

পাবনার নগরবাড়ি নদী বন্দর নির্মাণ প্রকল্প ৫ বছরেও শেষ হয়নি। অথচ মেয়াদ ছিল ৩ বছর। আবার নতুন করে ২ বছর বাড়ানোর তাগিদ রয়েছে বিআইডবিস্নউটিএ'র।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নে ২০১৮ সালে ৫১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে যমুনার পাড়ে বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু করে সরকার। ৩ বছর মেয়াদি এই প্রকল্পের শুরুতেই ভূমি অধিগ্রহণে দীর্ঘসূত্রতাসহ নানা জটিলতায় পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে প্রথম দফায় প্রকল্পের মেয়াদ ১ বছর বাড়ানোর পাশাপাশি অতিরিক্ত ৪০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পুনর্র্নির্ধারিত মেয়াদে কাজ শেষ না করতে পারায় এবার প্রকল্পের মেয়াদ আরও ২ বছর বাড়ানোর পাশাপাশি ব্যয় বাড়ানোরও আবেদন করেছে প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিস্নউটিএ)।

প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখা যায়, যমুনার পাড়ে বিশাল এলাকাজুড়ে ইট-লোহা-বালুসহ নানান নির্মাণসামগ্রী ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে। বন্দর সংশ্লিষ্টরা জানান, দীর্ঘদিন ধরে নির্মাণকাজ চলতে থাকায় এখানে আমদানি পণ্যের সরবরাহ কমে গেছে।

নগরবাড়ি ঘাট এলাকার আমদানিকারক নওয়াপাড়া গ্রম্নপের প্রতিনিধি আরমান হোসেন বলেন, 'আমাদের আমদানি করা সার চট্টগ্রাম

বন্দর থেকে উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহের জন্য নগরবাড়ি ঘাটে নিয়ে আসা হয়। এখানে নির্মাণকাজ চলতে থাকায় এবং নদীতে পর্যাপ্ত নাব্য না থাকায় এখন বেশিরভাগ পণ্য যশোরের নওয়াপাড়া ঘাটে আনলোড করা হচ্ছে। কারণ এ বন্দরে বড় জাহাজ নিয়ে এসে পণ্য খালাস করা প্রায় অসম্ভব।'

দেশ ট্রেডিংয়ের প্রতিনিধি রাজিব হোসেন বলেন, 'নগরবাড়ি বন্দর থেকে উত্তরবঙ্গের প্রতিটি জেলায় সার, কয়লা, পাথর ও অন্যান্য আমদানি পণ্য সরবরাহ করা অনেক সহজ। চট্টগ্রাম বন্দর থেকে নিজেদের জাহাজে করে নগরবাড়ি ঘাটে সরাসরি পণ্য নিয়ে আসা যায়। এখান থেকে তা সড়কপথে উত্তরাঞ্চলের জেলাগুলোয় হ পৃষ্ঠা ১৫ কলাম ৪

সহজেই পরিবহণ করা যায়। বর্তমানে আমদানি পণ্যের একটি বড় অংশ দক্ষিণের জেলাগুলোয় খালাস করা হচ্ছে। ফলে উত্তরাঞ্চলে পরিবহণে সময়ের সঙ্গে ট্রাকপ্রতি খরচও বাড়ছে ৮ থেকে ১০ হাজার টাকা' পর্যন্ত।

নগরবাড়ি নদীবন্দর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রফিক উলস্নাহ জানান, 'আগে স্বাভাবিক সময়ে প্রতিদিন বন্দরে প্রায় ২০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হতো। ৮ থেকে ১০টি জাহাজ পণ্য নিয়ে আসত। কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ এখানে করত।'

নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ না হওয়ার ব্যাখ্যায় প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী নাজিম উদ্দিন পাঠান বলেন, 'করোনা মহামারির কারণে কাজে ধীরগতি আর প্রকল্প এলাকায় দীর্ঘমেয়াদে বর্ষার পানি জমে থাকায় সময়মতো কাজ শেষ করা যায়নি। তাই আবারও প্রকল্পের সময় বাড়ানোর আবেদন করা হয়েছে। এছাড়া বর্তমান বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রকল্পের ব্যয় পুনর্র্নির্ধারণের জন্য কারিগরি কমিটি কাজ করছে।' তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের ৬০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে।'

বন্দর কর্মকর্তা ওয়াকিল হোসাইন বলেন, 'এই প্রকল্পের মাধ্যমে একটি সর্বাধুনিক সুযোগ-সুবিধা সংবলিত নদীবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে বিআইডবিস্নউটিএ। ইতোমধ্যে নদীপাড়ের বিভিন্ন স্থাপনার কাজ শেষ হয়েছে। তবে জেটি নির্মাণের কাজ এখনো বাকি। তিনি বলেন, 'পুরো কাজ শেষ হলে নগরবাড়িতে একসঙ্গে ১০টি জাহাজ পণ্য খালাস করতে পারবে। এখানে অটোমেশন সুবিধা থাকবে। ফলে পণ্য খালাসে গতি বাড়বে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে