সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য রাজনৈতিক কৌশল :মির্জা ফখরুল

যাযাদি রিপোর্ট
  ২৩ জুন ২০২৩, ০০:০০

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, 'সেন্ট মার্টিন দ্বীপ নিয়ে বিএনপিকে জড়িয়ে প্রধানমন্ত্রী যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ভিত্তিহীন। এই বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক কৌশল। চুক্তি বিরোধী দলের সঙ্গে হয় না। এক দেশের সঙ্গে অন্য দেশের চুক্তি হয়। এসব বলে প্রধানমন্ত্রী কিছু সুবিধা পেতে চান।'

বৃহস্পতিবার দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিএনপি সেন্ট মার্টিন দ্বীপ বা বাংলাদেশকে বিদেশিদের কাছে লিজ (বন্ধক) দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায় কি না? ২০০১ সালে বিএনপি গ্যাস বিক্রির মুচলেকা দিয়ে ক্ষমতায় এসেছিল।

প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, 'এটা সম্পূর্ণভাবে বানোয়াট, ভিত্তিহীন, সর্বৈব মিথ্যা কথা। এই কথাগুলো বলে তিনি কিছু সুবিধা পেতে চান। সেই সুবিধা যদি উল্টো হয়... এটা তিনি বুঝেন না। তাহলে প্রধানমন্ত্রী কী নিশ্চিত হয়ে গেছেন যে তিনি আর ক্ষমতায় থাকতে পারছেন না।'

বিএনপি মহাসচিব প্রশ্ন রেখে বলেন, 'প্রধানমন্ত্রী বিএনপির বিরুদ্ধে যে "মিথ্যা" অভিযোগ করেছেন তা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইনের আওতায় পড়ে না? তার বিরুদ্ধে এই আইনের আওতায় মামলা কি করার এখন সময় এসেছে।'

তিনি বলেন, 'সরকার একটি দেশকে সেন্ট

মার্টিনকে দেওয়ার কথা বলেন। ওই দেশ সেন্ট মার্টিন চাচ্ছেন। আপনি চিন্তা করতে পারেন যে, সেই দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কটা কোন জায়গায় গিয়ে দাঁড়াবে। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে বিবৃতি দিয়ে বলেছে যে তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিশ্বাস করে, তারা এভাবে কথা বলতে পারে না।'

মির্জা ফখরুল বলেন, 'বিএনপি দেশ বিক্রি করেছে বা দেশের কোনো জিনিস দিয়ে দিয়েছে এমন কোনো নজির নেই। কিন্তু আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে এ ধরনের বহু অভিযোগ আছে। প্রধানমন্ত্রী নিজেও বলেছেন, আমরা তো সব দিয়ে দিয়েছি... বলেনি? কাকে দিয়েছেন? পররাষ্ট্রমন্ত্রী ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র গিয়ে বিএনপিকে নির্বাচনে আনতে সাহায্য চেয়েছেন। যাতে তারা আবার ক্ষমতায় থাকতে দেওয়া হয়।'

সরকার ভূ-রাজনীতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'কী রকম মরিয়া হয়ে গেছে যে, দেশের ক্ষতি করতেও তারা দ্বিধা করছে না। আজকে অন্যান্য দেশ সম্পর্কে তারা যে মন্তব্য করছে, যে কথাগুলো বলছে এটা আমাদের দেশের ভূ-রাজনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এবং আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি ইতোমধ্যে।'

মির্জা ফখরুল ইসলাম অভিযোগ করে বলেন, 'দলীয় সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে নির্বাচনে যেতে সক্রিয় নেতাদের গোয়েন্দারা হুমকি দিচ্ছে। আমরা কোন দেশে বাস করছি? এটা একটা মধ্য যুগীয় বর্বর যুগে আমরা বাস করছি। এই সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য এমন কোনো অন্যায় নেই যে করছে না।'

বিএনপি মহাসচিব বলেন, 'রাষ্ট্র যন্ত্রের যে সব প্রতিষ্ঠান আছে, যারা আইনশৃঙ্খলার সঙ্গে জড়িত তাদের কর্মকর্তাদের আমরা অনুরোধ জানাতে চাই যে, দয়া করে সাংবিধানিক কাজের সঙ্গে নিজেদের জড়িত করবেন না এবং জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড়াবেন না। প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তা, প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী যাদের দায়িত্বশীলতা শুধু জনগণের প্রতি, সেই জনগণের প্রতি দায়িত্বশীলতা পালন করবেন। এই ধরনের অন্যায়-বেআইনি নির্দেশের ফলে আপনারা এ ধরনের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াগুলোকে ব্যাহত করবেন না। এটা সম্পূর্ণভাবে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করা।'

সংবাদ সম্মেলনে মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম, যুগ্ম আহ্বায়ক মোশাররফ হোসেন খোকন, লিটন মাহমুদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে