সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র : কাদের

যাযাদি ডেস্ক
  ০২ জুলাই ২০২৩, ০০:০০
ওবায়দুল কাদের

পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় ভারত ও আফ্রিকা ব্রিকস প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা ব্রিকসে যোগ দিচ্ছেন বলেও তিনি জানান। শনিবার ওবায়দুল কাদের এক বিবৃতিতে বিএনপি নেতাদের বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, ব্রিকসের যোগদান নিয়ে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের বক্তব্য অজ্ঞতা ছাড়া কিছু নয়। পাশ্চাত্যের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেও ভারত ও আফ্রিকা ব্রিকস ব্যাংক প্রতিষ্ঠাতাদের অন্যতম। বাংলাদেশ সাম্প্রতিক সময় বিশ্বব্যাংক ও এডিবির কাছ থেকে দেশের জন্য আর্থিক সহায়তা পেয়েছে। অনুরূপভাবে বাংলাদেশের মানুষের কল্যাণের জন্য শেখ হাসিনা সরকার ব্রিকসে যোগদান করছে। বিএনপির

মতো বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট করার জন্য আওয়ামী লীগ বা শেখ হাসিনা রাজনীতি করেন না। দেশের মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য আওয়ামী লীগ রাজনীতি করে।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের আরও বলেন,

বিএনপি জন্মলগ্ন থেকে জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে। ঐতিহ্যগতভাবেই গোলাম আযমের দল জামায়াতে ইসলামী বিএনপির ঘনিষ্ঠ মিত্র। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান পাকিস্তানি নাগরিক গোলাম আযমকে পাকিস্তান থেকে বাংলাদেশে নিয়ে এসেছিল এবং তার স্ত্রী খালেদা জিয়া গোলাম আযমকে বাংলাদেশের নাগরিকত্ব দেন। ২০০১ সালের নির্বাচনের পর বিএনপি জামায়াতের সঙ্গে একাকার হয়ে সরকার গঠন করে এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধূলিসাৎ করে। যুদ্ধাপরাধের বিচারের সময় খালেদা জিয়া জামায়াতে ইসলামীর শীর্ষ নেতা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার প্রক্রিয়া বন্ধ করার জন্য আন্দোলন করেছে। বিএনপির শাসনামলে পাকিস্তানি দর্শনের রাজনীতি বাংলাদেশে জোরদার হয় এবং জামায়াতে ইসলামীর ক্ষমতায়ন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেই সঙ্গে বিএনপির পৃষ্ঠপোষকতায় জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশে ফুলেফেঁপে বিষবৃক্ষে পরিণত হয়েছে। বাংলাদেশের সচেতন মানুষ মাত্রই জানে, জামায়াতে ইসলামী হলো বিএনপির বি-টিম।

বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপিকে ভোট না দেওয়ার অপরাধে সংখ্যালঘুদের বাড়িঘরে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া, হরতালের নামে আগুনসন্ত্রাস ও পেট্রোল বোমা মেরে নিরীহ মানুষকে পুড়িয়ে মারা, গাছ কাটা, ভূমি অফিস পুড়িয়ে দেওয়ার যে ইতিহাস বিএনপি সৃষ্টি করেছিল, সেটা বেশি দিন আগের নয়। বিএনপি নেতারা ভুলে গেলেও দেশের মানুষ বিএনপির সেই সহিংসতার কথা ভুলে যায়নি। আসলে নিজেদের এসব অপকর্ম আড়াল করতেই বিএনপি নেতারা সবসময় অপপ্রচার চালায় এবং সরকারি দলের লোকদের ওপর দোষ চাপিয়ে আত্মতুষ্টিতে ভোগার উপলক্ষ্য খোঁজে।

জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে বিএনপির রাজনীতি

এদিকে শুক্রবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির প্রতিহিংসা ও আক্রোশমূলক রাজনীতি রাজনৈতিক শিষ্টাচারের সীমা অতিক্রম করেছে। তিনি আরও বলেন, বিএনপি নেতাদের এ ধরনের বাস্তবতা বিবর্জিত বক্তব্য তাদের অন্তর্জালার বহিঃপ্রকাশ ছাড়া আর কিছুই নয়।

বিবৃতিতে সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, 'দেশের মানুষ উৎসবমুখর পরিবেশে পবিত্র ঈদুল আজহার আনন্দ উৎসব উদযাপন করছে। বৈরী আবহাওয়ার মধ্যেও মানুষ নিরাপদে নির্বিঘ্নে আত্মীয়-স্বজনের সঙ্গে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে শহর ছেড়ে গ্রামে গিয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূল ও স্বস্তিদায়ক হওয়ায় পদ্মা সেতু এবং বঙ্গবন্ধু সেতুর উপর দিয়ে রেকর্ড সংখ্যক যানবাহন পারাপার হয়েছে। কোনো প্রকার দুর্ভোগ-দুর্যোগ ছাড়া আনন্দ মনে সাধারণ মানুষের ঈদ উদযাপনই বিএনপি নেতাদের মন খারাপের কারণ।'

তিনি আরও বলেন, 'দেশের জনগণ আনন্দে থাকলে বিএনপি নেতাদের গাত্রদাহ হয়। জনগণ আনন্দে থাকুক নিরাপদে থাকুক সেটা তারা চায় না। জনগণ কষ্টে থাকুক আর তারা জনগণের দুর্ভোগ নিয়ে রাজনীতি করবে, এটাই বিএনপি নেতাদের বাসনা। বিএনপি যেনতেন প্রকারে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা দখল করতে এতটাই মরিয়া যে, তারা দেশের কিংবা দেশের জনগণের কোনো প্রকার কল্যাণ চিন্তা করতে পারে না।'

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশে খাদ্য মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে সেইসব দেশের বাজারে খাদ্যদ্রব্য রেশনিং করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, 'বর্তমান সরকার দেশের জনগণের কাছে খাদ্য সরবরাহে স্থিতাবস্থা এবং খাদ্যমূল্য সহনীয় পর্যায়ে রাখতে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করেছে। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের কাছে অত্যন্ত সাশ্রয়ী মূল্যে সরকার নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যদ্রব্যাদি বিতরণ করছে।'

তিনি বলেন, ক্ষমতা দখলে উন্মত্ত হয়ে বিএনপি নেতারা বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নানা ধরনের বিদ্বেষমূলক, বিভ্রান্তিকর ও সম্পূর্ণ বানোয়াট তথ্য দিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের নেতাদের বিরুদ্ধে নানামুখী অপপ্রচার চালাচ্ছে।

ওবায়দুল কাদের বলেন, 'অনুরূপভাবে সাজানো ও সম্পূর্ণ মিথ্যা ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তারা বিদেশি প্রভুদের কাছে তথাকথিত জুলুম-অত্যাচারের কাল্পনিক অভিযোগ উপস্থাপন করছে। বাংলাদেশের জনগণ বরাবরই বিএনপির ধ্বংসাত্মক ও মিথ্যাচারের রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করেছে। আগামীতেও দেশের জনগণ বঙ্গবন্ধুকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সকল দেশবিরোধী শক্তির অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতি প্রতিরোধ করবে।'

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে