সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
সক্ষমতার চেয়ে তিনগুণ রোগী

খুমেক হাসপাতালে তিল ধারণের ঠাঁই নেই

খুলনা অফিস
  ০২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সবচেয়ে বৃহৎ হাসপাতাল খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতালটি ৫০০ শয্যার। অথচ বুধবার পর্যন্ত এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১ হাজার ৬২২ রোগী। এছাড়া গড়ে প্রতিদিন প্রায় দেড় হাজার রোগী হাসপাতালের বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়ে থাকেন। কিন্তু জনবল সংকটে ধুঁকতে থাকা খুমেকের চিকিৎসকেরা ধারণ ক্ষমতার চেয়ে তিনগুণের বেশি রোগী নিয়ে পড়েছেন বেকায়দায়। এতে হাসপাতালটির চিকিৎসাসেবা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, হাসপাতালের দোতলায় পুরো বারান্দাজুড়ে রোগীর শয্যা। শুধু এই বারান্দা নয়, প্রতিটি ওয়ার্ড, বারান্দা, বাথরুমের পাশে, প্রশাসনিক ভবনে যাওয়ার পথে মেঝেতেও মাদুর বিছিয়ে শয্যা বানিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগীরা। হাসপাতালে যেন তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

রূপসা উপজেলা

থেকে বৃদ্ধ বাবাকে চিকিৎসা করাতে আসা জাহাঙ্গীর আলম জানান, এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে হাসপাতালের বারান্দায় থেকেও শয্যা মেলেনি। তার বাবার শ্বাসকষ্ট। বারান্দায় ফ্যান নেই, প্রচন্ড গরম। চিকিৎসক এসে দেখলেও কষ্ট আর ভোগান্তি যেন পিছু ছাড়ছে না। এখানে হাঁটারও জায়গা নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্সে সব রোগের চিকিৎসক না থাকায় ও উন্নত চিকিৎসার জন্য তার বাবাকে নিয়ে খুমেক হাসপাতালে এসেছেন তিনি।

রোগীরা জানান, খুমেক হাসপাতালে সিট নেই। চিকিৎসকদের বারবার বলেছি, সিট না থাকলে তারাও বা দেবে কোথা থেকে। তাই কষ্ট হলেও বারান্দায়সহ যে যেখানে ফাঁকা জায়গা পাচ্ছেন সেখানেই শয্যা বানিয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন।

সূত্র জানায়, খুমেক হাসপাতালের ১৬টি বিভাগের অধীনে ৩১টি ওয়ার্ডে ২৬৮ চিকিৎসক থাকার কথা। সেখানে ৮১টি পদ শূন্য। হাসপাতালের অন্য জনবলেরও এক তৃতীয়াংশের বেশি সংকট রয়েছে। স্বল্প জনবল নিয়ে রোগী সামলাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসকদের। হাসপাতালের স্বাস্থ্যসেবার মান ধরে রাখতে জনবল বাড়ানোর পাশাপাশি দ্রম্নত ভবন সম্প্রসারণ প্রয়োজন বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

হাসপাতালের আরএমও ডা. সুমন রায় বলেন, 'এই হাসপাতালে প্রায়ই ধারণ ক্ষমতার তিনগুণ রোগী ভর্তি থাকছেন। রোগীর চাপের কারণে চিকিৎসকদের কষ্ট তো হয়ই। তারপরেও আমরা কখনো কোনো রোগীকে অবহেলা করি না। কোনো রোগী আসলেই ভর্তির প্রয়োজন হলে হাসপাতালে রোগী ভর্তি হচ্ছেন। এছাড়া খুলনাসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলা থেকে হাসপাতালটির বহির্বিভাগেও দীর্ঘসময় লাইনে দাঁড়িয়ে গড়ে প্রতিদিন দেড় হাজার রোগী চিকিৎসা নেন।

উপজেলা হাসপাতালগুলোর সক্ষমতা আরও বাড়ানো গেলে এখানে রোগীর চাপ কিছুটা কমতো বলেও তিনি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে