সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১
যাত্রী কল্যাণের প্রতিবেদন

এক মাসে সড়কে ঝরল ৪২৬ প্রাণ

দুর্ঘটনার ৩৮.৭৭ শতাংশ মোটর সাইকেলে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০

সারা দেশে গত আগস্ট মাসে ৪৪১টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৪২৬ জন নিহত এবং ৭৯৩ জন আহত হয়েছেন। এর মধ্যে মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৭১টি। এতে ১৬৮ জন নিহত এবং ১৪৯ জন আহত হয়েছে। মোটর সাইকেল দুর্ঘটনা মোট দুর্ঘটনার ৩৮ দশমিক ৭৭ শতাংশ। গত মাসে সবচেয়ে বেশি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা বিভাগে, ১২৫টি সড়ক দুর্ঘটনায় ১২৬ জন নিহত হয়েছে।

বুধবার বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা মনিটরিং সেলের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে।

এদিকে, আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় ৬৩৫টি যানবাহনের পরিচয় মিলেছে। এতে দেখা যায়, ২৮.৩৪ শতাংশ মোটর সাইকেল, ২২.২০ শতাংশ ট্রাক-পিকআপ-কাভার্ড ভ্যান ও লরি, ১৫.১১ শতাংশ বাস, ১৭ শতাংশ ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ইজিবাইক, ৫.৯৮ শতাংশ সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ৪.৫৬ শতাংশ নছিমন-করিমন-মাহিন্দ্রা-ট্রাক্টর ও লেগুনা, ৬.৭৭ শতাংশ কার-জিপ-মাইক্রোবাস সড়কে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে।

সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৬১.৪৫ শতাংশ গাড়ি চাপা দেওয়ার ঘটনা, ২১.৯৯ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ১২.৯২ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে, ২.৭২ শতাংশ বিবিধ কারণে এবং ০.৯০ শতাংশ ট্রেন-যানবাহন সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণে দেখা যায়, এ মাসে মোট দুর্ঘটনার ৩৮.৫৪ শতাংশ জাতীয় মহাসড়কে, ২১.০৮ শতাংশ আঞ্চলিক মহাসড়কে, ৩১.০৬ শতাংশ ফিডার রোডে সংঘটিত হয়েছে। এছাড়াও সারা দেশে সংঘটিত মোট দুর্ঘটনার ৭.২৫ শতাংশ ঢাকা মহানগরীতে, ১.১৩ শতাংশ চট্টগ্রাম মহানগরে এবং ০.৯০ শতাংশ রেল ক্রসিংয়ে সংঘটিত হয়েছে।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণ মতে, আগস্ট মাসে সড়ক দুর্ঘটনার উলেস্নখযোগ্য কারণসমূহ হচ্ছে- ১. দেশের সড়ক-মহাসড়কে মোটর সাইকেল ও ইজিবাইক অবাধ চলাচল। ২. মোটর সাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও তিন চাকার যানের ব্যাপক বৃদ্ধি। ৩. সড়ক-মহাসড়কে রোড সাইন বা রোড মার্কিং, সড়কে বাতি না থাকা। ৪. মহাসড়কের নির্মাণ ত্রম্নটি, যানবাহনের ত্রম্নটি, ট্রাফিক আইন অমান্য করার প্রবণতা। ৫. উল্টোপথে যানবাহন চালানো, সড়কে চাঁদাবাজি, পণ্যবাহী যানে যাত্রী পরিবহণ। ৬. অদক্ষ চালক, ফিটনেসবিহীন যানবাহন, বেপরোয়াভাবে যানবাহন চালানো। ৭. রেল ক্রসিংয়ে দায়িত্বরত ব্যক্তির গাফিলতি। ফিডার রোড এবং আঞ্চলিক রোড থেকে হঠাৎ যানবাহন উঠে আসা।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সুপারিশে বলা হয়েছে- ১. মোটর সাইকেল ও ইজিবাইকের মতো ছোট ছোট যানবাহন আমদানি ও নিবন্ধন বন্ধ করা। ২. দক্ষ চালক তৈরির উদ্যোগ গ্রহণ, ডিজিটাল পদ্ধতিতে যানবাহনের ফিটনেস প্রদান। ৩. ধীরগতির যান ও দ্রম্নতগতির যানের জন্য আলাদা লেনের ব্যবস্থা করা। ৪. সড়কে চাঁদাবাজি বন্ধ করা, চালকদের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনিশ্চিত করা। ৫. সড়কে রোড সাইন, রোড মার্কিং অঙ্কন ও স্থাপন করা। ৬. সড়ক পরিবহণ আইন যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করা। ডিজিটাল পদ্ধতিতে ট্রাফিক আইন প্রয়োগ করা। ৭. গণপরিবহণ বিকশিত করা, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএর সক্ষমতা বৃদ্ধি করা। মানসম্মত সড়ক নির্মাণ ও মেরামত সুনিশ্চিত করা, নিয়মিত রোড সেইফটি অডিট করা।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে