আজকের যায়যায়দিন

চট্টগ্রাম নগরের যত্রতত্র ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার হচ্ছেন পথচারীরা। অনেক স্থানে ফুটওভার ব্রিজ থাকলেও সে পথে চলাচলে আগ্রহ নেই কারও। আবার অনেক স্থানে ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ব্যস্ত সড়কে ঝুঁকি নিয়েই পার হচ্ছে মানুষ।

দুই নম্বর গেট থেকে জিইসি, লালখান বাজার, টাইগারপাস, দেওয়ানহাট, চৌমুহনী, আগ্রাবাদ-বাদামতল, বনানী এলাকায় ফুটওভার ব্রিজ না থাকায় ব্যস্ত সড়কে রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা।

ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার, বাড়ছে দুর্ঘটনা। একই অবস্থা নগরের বহদ্দারহাট-চান্দগাঁওসহ বিভিন্ন এলাকার। আর এভাবে রাস্তা পার হতে গিয়ে গত তিন মাসে ছোট-বড় ২০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে।

নগরের ব্যস্ততম এলাকা জিইসি মোড়ে প্রতিদিন অসংখ্য মানুষকে রাস্তা পার হতে হয় চতুর্মুখী সড়কের ওপর দিয়ে। জিইসি এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক, হোটেল-রেস্টুরেন্ট, ব্যাংক-বিমা কার্যালয় রয়েছে।

ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠক / দুই কার্গো এলএনজি, সার ও ডাল কিনবে সরকার

পাহাড়তলি চক্ষু হাসপাতাল, ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়, ইউএসটিসি, বাংলাদেশ টেলিভিশন চট্টগ্রাম কেন্দ্র, ফয়'স লেক ও অলংকার মোড় যেতে যানবাহনগুলো এই সড়ক ব্যবহার করে। কিন্তু এখানে সড়ক পারাপারে নেই ফুটওভার ব্রিজ কিংবা আন্ডারপাস। জেব্রা ক্রসিং থাকলেও তা দৃশ্যমান নয়।

সিডিএ এভিনিউর জিইসি মোড়ের মতো নগরের অনেক এলাকাতেই ঝুঁকি নিয়ে মানুষকে রাস্তা পারাপার হতে দেখা যায়। নগর পরিকল্পনাবিদদের বিভিন্ন সময়ের জরিপে দেওয়া হয়েছে বহু প্রস্তাবনা। কিন্তু তার অধিকাংশই বাস্তবায়ন হয়নি।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চট্টগ্রামজুড়ে ওয়াসা, সড়ক ও জনপথ এবং গ্যাস, বিদু্যৎ, টেলিযোগাযোগ প্রভৃতি বিভাগ কাজ করে থাকে। কিন্তু কাজ করা হয় নিজস্ব বিভাগীয় মর্জিমাফিক। ব্যস্ততম সড়কে ফুটওভার ব্রিজ থাকাটা জরুরি।

বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির জরিপ অনুযায়ী, বিদায়ী ২০১৯ সালে ৫ হাজার ৫১৬টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৮৫৫ জন নিহত হয়েছে এবং আহত হয়েছে ১৩ হাজার ৩৩০ জন। দুর্ঘটনার পরিমাণ ২০১৮ সালের সমপরিমাণ হলেও প্রাণহানি ৮.০৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

সড়কে দুর্ঘটনায় আক্রান্ত ৯৮৯ জন চালক, ৮৪৪ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৮০৯ জন শিক্ষার্থী, ১১৫ জন শিক্ষক, ২১৬ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, ৮৯৪ জন নারী, ৫৪৩ জন শিশু, ৩৬ জন সাংবাদিক, ২৬ জন চিকিৎসক, ১৬ জন আইনজীবী ও প্রকৌশলী এবং ১৫৩ জন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর পরিচয় মিলেছে।

এর মধ্যে নিহত হয়েছে ২৪ জন সেনাসদস্য, ৫৩ জন পুলিশ ওর্ যাব সদস্য, ৩ জন বিজিবি সদস্য, ১ জন ফায়ার সার্ভিস কর্মী, ১ জন নৌ-বাহিনীর সদস্য, ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা, ৬ জন সাংবাদিক, ৫৮২ জন নারী, ৪৪৭ জন শিশু, ৪৭৪ জন শিক্ষার্থী, ৮১ জন শিক্ষক, ৬৯১ জন চালক, ৩৫৭ জন পরিবহণ শ্রমিক, ৯ জন প্রকৌশলী, ৫ জন আইনজীবী, ১১৫ জন বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী, ২৫ জন চিকিৎসক ছিল।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সড়ক নিরাপত্তা বিষয়ক বৈশ্বিক প্রতিবেদন বলছে, সড়ক দুর্ঘটনার অন্যতম কারণ হিসেবে দেখানো হয়েছে-মূল সড়কের ওপর দিয়ে পথচারীদের যাওয়া-আসাকে।

ঝুঁকিপূর্ণ পারাপার, বাড়ছে দুর্ঘটনা। এ ছাড়া বাসগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা এবং চালকের বেপরোয়া মনোভাব শহরে সড়ক দুর্ঘটনার একটি বড় কারণ বলে চিহ্নিত করেছেন সড়ক পরিবহণ বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি যানবাহন চলাচলে শৃঙ্খলা ও গতিশীলতা আনতে নগরীতে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে তৈরি করলে, দুর্ঘটনা অনেকটাই কমবে বলে মনে করেন তারা।