শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বান্দরবানে ম্রো সম্প্রদায়ের ভূমি দখলের প্রতিবাদ

যাযাদি রিপোর্ট
  ০৩ মার্চ ২০২১, ০০:০০
মঙ্গলবার রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরসংলগ্ন এলাকায় সমাবেশ করে চিম্বুক পাহাড় ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন -স্টার মেইল

বান্দরবান জেলার চিম্বুকের নাইতং পাহাড়ে বিলাসবহুল হোটেল ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণের নামে ম্রো আবাসভূমি দখলের প্রতিবাদে রাজধানীতে সংহতি সমাবেশ ও মিছিল করছে চিম্বুক পাহাড় ম্রো ভূমি রক্ষা আন্দোলন। এতে সংহতি জানিয়েছে বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরাম ও কাপেং ফাউন্ডেশন।

মঙ্গলবার সকাল ১০টায় রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরসংলগ্ন এলাকায় সমবেত হন আদিবাসীরা। তাদের হাতে ছিল 'নাইতং পাহাড় বাঁচাও', 'প্রকৃতি বাঁচাও', 'প্রকৃতি ধ্বংসকারী প্রকল্প বাতিল কর', 'পর্যটন ও উন্নয়ন এক বিষয় নয়', 'আমাদের জীবিকার উৎসে হস্তক্ষেপ চাই না', 'বন-ছড়া না বাঁচলে প্রকৃতি বাঁচবে না', 'তোমাদের পর্যটন ব্যবসা আমাদের মরণদশা' ইত্যাদি লেখা পস্ন্যাকার্ড।

সমাবেশে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক ও আদিবাসী বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, 'এই দেশ কোনো বিজনেস বা করপোরেট গ্রম্নপের লুটপাটের লীলাভূমি নয়। বান্দরবানের চিম্বুক পাহাড়ে সিকদার গ্রম্নপের মতো একটি দুর্বৃত্ত ব্যবসায়িক গ্রম্নপকে হোটেল নির্মাণের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই দুর্বৃত্ত ব্যক্তিরা আজকে রাষ্ট্রের মালিক বনে গেছেন।

'পাকিস্তানের যে ২২ পরিবার বাংলাদেশ লুট করেছিল, তাদের আমরা রাজাকার বলেছিলাম। আজকে নতুন রাজাকারদের হাতে আমরা দেশকে ছেড়ে দিতে চাই, যারা অর্থনৈতিকভাবে বাংলাদেশকে লুট করতে চায়। সংসদ থেকে যদি এক, পাঁচ বা ১০ জনও হয়, তারা ক্ষুদ্র জাতিসত্তার মানুষের সঙ্গে আছেন। সংসদ সিদ্ধান্ত নিতে না পারলে তারা রাজপথে নামবেন। বাংলাদেশ কারও জমিদারি হয়ে যায়নি।'

সমাবেশে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'বান্দরবান নিজেই পাঁচ তারকা হোটেল, পুরো বান্দরবানই একটা ইকো রিসোর্ট। সেখানে আবার ইকো রিসোর্ট বানাতে হবে কেন? সংবিধানে বলা আছে, পরিবেশ-প্রতিবেশ রক্ষা করা রাষ্ট্রের অঙ্গীকার। একের পর এক বনে যদি ইকো রিসোর্ট-পাঁচ তারকা হোটেল হতে থাকে, তাহলে পরবর্তী প্রজন্মের জন্য পাহাড় আর বন কীভাবে থাকবে?'

মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম বলেন, 'উন্নয়নের নামে মানুষকে উচ্ছেদ করে এতগুলো মানুষের জীবন বিপন্ন করা কোনো গণতান্ত্রিক জনদরদি সরকার মেনে নিতে পারে না। স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তির প্রাক্কালে দেশে নাগরিকেরা উচ্ছেদ হবেন, এটি কোনোভাবেই হতে পারে না।'

সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক কমিটির সভাপতি গৌতম দেওয়ান। বাংলাদেশ আদিবাসী ফোরামের সাধারণ সম্পাদক সঞ্জীব দ্রংয়ের সঞ্চালনায় সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক রেহনুমা আহমেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রোবায়েত ফেরদৌস ও জোবাইদা নাসরীন, নাট্যব্যক্তিত্ব মামুনুর রশীদ, সিপিবি নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্স, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সাবেক সদস্য নিরূপা দেওয়ান, নারীমুক্তি কেন্দ্রের ঢাকা মহানগর শাখার সভাপতি সীমা দত্ত বক্তব্য দেন।

সমাবেশ শেষে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি দিয়ে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি টিএসসি ঘুরে ফের শাহবাগে গিয়ে শেষ হয়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে