শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১

বাজারে দুর্বল কোম্পানির দাপট

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০০:০০

টানা ঊর্ধ্বমুখী ধারা দেখা দিয়েছে দেশের শেয়ারবাজারে। গত সপ্তাহজুড়ে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা থাকায় টানা ১২ সপ্তাহ শেয়ারবাজারে উত্থান হয়েছে। শেয়ারবাজারের এমন উত্থান প্রবণতার মধ্যে গত সপ্তাহে দাম বাড়ার ক্ষেত্রে একচেটিয়ে দাপট দেখিয়েছে দুর্বল কোম্পানি।

গত সপ্তাহে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ প্রতিষ্ঠানের তালিকায় 'এ' গ্রম্নপের একটি কোম্পানিও স্থান পায়নি। সবকটি স্থান দখল করেছে 'বি' ও 'জেড' গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান। এর মধ্যে পচা কোম্পানি হিসেবে পরিচিত জেড গ্রম্নপের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। আর বি গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান রয়েছে সাতটি।

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর পারফরমেন্সের ওপর ভিত্তি করে তিন ভাগে ভাগ করা হয়। শেয়ারহোল্ডারদের জন্য ঘোষণা করা লভ্যাংশের ওপর মূল্যায়ন হয় এই পারফরমেন্স। ১০ শতাংশের ওপরে লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানি ভালো বা 'এ' গ্রম্নপে রাখা হয়।

১০ শতাংশের কম লভ্যাংশ দেওয়া কোম্পানিকে মধ্যম বা বি গ্রম্নপে রাখা হয়। আর লভ্যাংশ না দেয়া কোম্পানির স্থান হয় জেড গ্রম্নপে। জেড গ্রম্নপে থাকা কোম্পানিকে পচা কোম্পানি হিসেবে বিবেচনা করা হয় এবং বি গ্রম্নপের কোম্পানিগুলোকে দুর্বল কোম্পানি হিসেবে ধরা হয়।

গত সপ্তাহজুড়ে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় শীর্ষ স্থানটি দখল করে জেড গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফাইন্যান্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫০ শতাংশ। টাকার অংকে বেড়েছে ২ টাকা। সপ্তাহের শেষ কার্যদিবস শেষে কোম্পানিটির প্রতিটি শেয়ারের দাম দাঁড়িয়েছে ৬ টাকা, যা আগের সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে ছিল ৪ টাকা।

হঠাৎ শেয়ারের এমন দাম বাড়লেও কোম্পানিটির লভ্যাংশের ইতিহাস খুব একটা ভালো না। সর্বশেষ ২০১৩ সালে কোম্পানিটি শেয়ারহোল্ডারদের ৫ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ হিসেবে দেয়। এরপর কোম্পানিটি থেকে বিনিয়োগকারীরা আর কোনো লভ্যাংশ পায়নি।

এদিকে নিয়ম অনুযায়ী, তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রতি তিন মাস পরপর আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করতে হয়। কিন্তু ডিএসইর মাধ্যমে কোম্পানিটি সর্বশেষ ২০১৯ সালের জুলাই-সেপ্টেম্বরের আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। ২০২০ সালের কোনো প্রান্তিকের আর্থিক প্রতিবেদন কোম্পানিটি এখনো প্রকাশ করেনি।

২০১৯ সালে প্রকাশ করা প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, জুলাই-সেপ্টেম্বরে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ১ টাকা ১ পয়সা। আর ২০১৯ জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নয় মাসে শেয়ারপ্রতি লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৭৯ পয়সা। এছাড়া শেয়ারের বিপরীতে কোম্পানিটির কোনো সম্পদ তো নেই-ই, উল্টো প্রতিটি শেয়ারের বিপরীতে সম্পদ মূল্য দাঁড়িয়েছে ঋণাত্মক ৮৪ টাকা ২৪ পয়সা। অর্থাৎ কোম্পানিটির সব সম্পদ বিক্রি করলেও দায় তো পরিশোধ হবেই না উল্টো আরও ঘাটতি থেকে যাবে।

দাম বাড়ার দ্বিতীয় স্থানটি দখল করেছে পচা জেড গ্রম্নপের আরেকটি প্রতিষ্ঠান ইনটেক লিমিটেড। ২০১৮ সালে ১১ শতাংশ বোনাস শেয়ার লভ্যাংশ দিলেও এরপর কোম্পানিটি আর লভ্যাংশ দেয়নি। অথচ এ কোম্পানিটির শেয়ার দাম গত সপ্তাহজুড়ে বেড়েছে ৪৬ দশমিক ৬৯ শতাংশ।

দাম বাড়ার তালিকায় পরের স্থানে রয়েছে বি গ্রম্নপের প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং। সপ্তাহজুড়ে এই কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৪৫ দশমিক ২৮ শতাংশ। এর পরেই রয়েছে জেড গ্রম্নপের আরেক প্রতিষ্ঠান ফারইষ্ট ফাইন্যান্স। সপ্তাহজুড়ে কোম্পানিটির শেয়ার দাম বেড়েছে ৩৭ দশমিক ১৪ শতাংশ।

এছাড়া গত সপ্তাহে দাম বাড়ার শীর্ষ ১০ কোম্পানির তালিকায় থাকা কেয়া কসমেটিকসের ৩১ দশমিক ২৫ শতাংশ, ফাইন ফুডসের ২৮ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ফ্যাস ফাইন্যান্সের ২৮ দশমিক ১৩ শতাংশ, ইনফরমেশন সার্ভিসেসের ২৭ দশমিক ২৪ শতাংশ, ফু-ওয়াং সিরামিকের ২৬ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং প্রাইম ফাইন্যান্সের ২৫ শতাংশ দাম বেড়েছে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<111708 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1