শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

শিবচর বাসির কৃতজ্ঞতার জোয়ারে ভাসছেন চীপ হুইপ

শিবচর (মাদারীপুর) প্রতিনিধি
  ১৩ জুলাই ২০২১, ১২:২৩

স্বাস্থ্য সেবা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে ২০১৮ সালের শেষের দিকে জাতীয় সংসদের চীপ হুইপ ও মাদারীপুর-১ (শিবচর) আসনের ছয়বারের সংসদ সদস্য নূর-ই- আলম চৈাধুরী লিটন মাদারীপুর জেলার শিবচরের বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নে গড়ে তুলেন হাজী আবুল কাসেম উকিল মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্র। প্রতিষ্ঠার মাত্র এক সপ্তাহ পরেই দেখা দেয় করোনা মহামারী। এর পর করোনার ভয়াবহতার কথা ভেবে শিবচর বাসির জন্য দ্রুত সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেন তিনি। ঘোষণঅ দেন হাসপাতালটিকে বিশেষায়িত করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার।

হাসপাতালটিকে দ্রুত করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চীপ হুইপ তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে সরবরাহ করেন আধুনিক যন্ত্রপাতি ও প্রয়োজনীয় মেডিকেল সামগ্রী।

একটি পরিপূর্ণ করোনা আইসোলেশন সেন্টারে যা কিছু প্রয়োজন তা নিশ্চিত করে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্টাফ পদায়ন করে গত বছরের ৯ জুলাই হাজী আবুল কাসেম উকিল মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রটিকে ২০ শয্যা বিশিষ্ট করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে উদ্বোধন করেন চীপ হুইপ।

জেলা প্রশাসক ড. রহিমা খাতুন চীপ হুইপকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, প্রত্যন্ত গ্রাম অঞ্চলে এতো সুন্দর একটি নিরিবিলি পরিবেশে ২০ শয্যা বিশিষ্ট এই করোনা আইসোলেশন সেন্টারটি করোনা রোগীদের দ্রুত সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এই হাসপাতালটির পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম চার দিকে খোলা মেলা ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। এই পরিবেশে একজন রোগী সহজেই প্রাকৃতিক ভাবে বিশুদ্ধ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারবে যা একজন করোনার রোগীর জন্য খুব প্রয়োজন।

তার কথা বাস্তবায়িত হতে শুরু করে যখন কভিড-১৯ এর প্রথম ধাপে বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক রোগী আসতে থাকে এবং প্রত্যেকেই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যায়।

এ বিষয়ে মরহুম হাজী আবুল কাসেম উকিলের ছেলে চীপ হুইপের একান্ত সহকারী সচিব মোঃ ওয়াদুদ উকিলের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, এ হাসপাতালটির প্রতি চীপ হুইপ সরাসরি সার্বক্ষণিক মনিটরিং করেছেন যার সুফল আমরা ইতোমধ্যে পেয়েছি। করোনার প্রথম ধাপে বিভিন্ন জায়গা থেকে এ হাসপাতালে অনেক রোগী আসে, আলহামদুলিল্লাহ সবাই সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে গেছেন।

তিনি আরো বলেন, রোগীরা যাতে ভালো থাকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায় এ জন্য মাননীয় চীপ হুইপের নির্দেশে প্রতিদিন রোগীদের বিভিন্ন ফলমূল কিনে দিয়েছি, গরিব রোগীদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করেছি, ডাক্তার ও নার্সদের জন্যও প্রতিদিন সাধ্যমত নাস্তার ব্যবস্থা করেছি যাতে করে তারা নিরবচ্ছিন্ন ভাবে সেবা দিতে পারেন।

এ বিষয়ে কর্মরত একজন ডাক্তারের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, হাজী আবুল কাসেম উকিল বিশেষায়িত করোনা আইসোলেশন সেন্টারটির পরিবেশ অত্যন্ত মনোরম। এখানে রোগিদের দ্রুত সুস্থতার পিছনে এই মনোরম পরিবেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখে।

তিনি আরও বলেন এখানে রোগীদের জন্য রয়েছে আইসিইউ, ০৩ টি হাই ফ্লো নেজাল কেনোলা থেরাপি সিস্টেম, ৭ টি অক্সিজেন কনসেনট্রেটর মেশিন(অক্সিজেন উৎপাদ কারী জেনারেটর), ১২ টি পার্লস অক্সিমিটার, ইনফ্রাডার থার্মোমিটার, ৪০টি অক্সিজেন সিলিন্ডার, ৫টি থার্মাল স্কানারসহ বিভিন্ন আধুনিক যন্ত্রপাতি। এগুলো ক্রয়ের সামগ্রিক অর্থ চীপ হুইপ তার ব্যক্তিগত তহবিল থেকে দিয়েছেন। তাই এতো দ্রুত এই হাসপাতালটিকে একটি বিশেষায়িত করোনা আইসোলেশন সেন্টার হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় কয়েজন মানুষের সাথে কথা বললে তারা বলেন, চীপ হুইপ আমাদের জন্য যা করেছে তার এ অবদান সারাজীবন শিবচর বাসি মনে রাখবে। তার জন্যই আমরা আজ একটি করোনা আইসোলেশন সেন্টার পেয়েছি। আমরা এখন এলাকায় বসেই উন্নত চিকিৎসা সেবা পাচ্ছি এর থেকে আর বড় পাওয়া কি হতে পারে। দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা আসছে আমাদের এখানে চিকিৎসা সেবা নিতে। আমরা চীপ হুইপকে মন থেকে দোয়া করি তিনি যেন দীর্ঘজীবি হোন এবং এভাবেই আমাদের বিপদে আপদে পাশে থাকেন।

এ বিষয়ে চীপ হুইপ বলেন, আপনারা শিবচর বাসী করোনার প্রথম ধাপে যেভাবে আমার কথা রেখেছেন, সরকারের বিধিনিষেধ মেনে চলেছেন এখনো সেভাবে মেনে চলবেন এটা আপনাদের প্রতি আমার অনুরোধ। এখন করোনার ২য় ও ৩য় ঠেউ চলছে সবাই সাবধানে থাকবেন প্রয়োজন ছাড়া কেউ ঘরের বাহিরে যাবেন না। কেউ করোনায় আক্রান্ত হলে সংকোচ করে ঘরে বসে থাকবেন না। দ্রুত বহেরাতলা দক্ষিণ ইউনিয়নের হাজী আবুল কাসেম উকিল ২০ শয্যা বিশিষ্ট বিশেষায়িত আইসোলেশন সেন্টারে ভর্তি হবেন। এখানে আশে পাশের জেলার লোকজনও চিকিৎসা নিতে পারবেন। করোনা রোগীদের চিকিৎসার জন্য এখানে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার, নার্স ও স্টাফদের পদায়ন করা হয়েছে, খাওয়া দাওয়াসহ প্রয়োজনীয় ও জরুরি মেডিকেল সামগ্রী প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

সরেজমিনে খোজ নিয়ে জানা গেছে, করোনা হাসপাতাল হিসেবে এই বিশেষায়িত আইসোলেশন সেন্টারটির সুনাম দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার কারণে করোনার ২য় ও ৩য় ঠেউ শুরু হলে এ হাসপাতালে দূরদূরান্ত থেকে রোগীরা আসতে শুরু করেছে এবং প্রতিদিনই একাধিক রোগী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যাচ্ছে।

যাযাদি/ এমডি

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে