শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

​লকডাউনে দুধ নিয়ে বিপাকে আনোয়ারার চার শতাধিক খামারি

জাহাঙ্গীর আলম, আনোয়ারা (চট্টগ্রাম)
  ২৯ জুলাই ২০২১, ১৯:২৮

চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় কঠোর লকডাউনের কারণে ৪ শতাধিক খামারি দুধ নিয়ে চরম বিপাকে পড়েছেন। একদিকে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি অন্যদিকে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো খামারিদের কাছ থেকে দুধ কেনা কমিয়ে দেওয়ায় অনেক খামারিই এখন ভ্যানে তুলে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা লিটার দরে ফেরি করে দুধ বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে করে লোকসানে পড়েছেন দুধ উৎপাদনকারী খামারিরা।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, আনোয়ারার ১১টি ইউনিয়নে রেজিস্ট্রেশন প্রাপ্ত ৮১ টি এবং রেজিস্ট্রেশন ছাড়া ৩২২টি ছোট-বড় খামার রয়েছে। এসব খামারে প্রতিদিন ৪৫ হাজার লিটারেরও বেশি গরুর দুধ উৎপাদিত হয়। এছাড়া ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেক গৃহস্থ পরিবারও গাভি পালন করে। এতে আরও হাজার হাজার লিটার দুধ উৎপাদিত হয়ে থাকে। এখানে দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা নেই। এই দুধ স্থানীয় ঘোষ বা দুধ ব্যবসায়ীরা নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় নিয়ে যায়। এছাড়া স্থানীয় ঘি, ছানা ও মিষ্টিজাত কারখানাগুলোতেও প্রচুর দুধ প্রয়োজন হয়।

হুদা ডেইরি ফার্মের স্বত্বাধিকারী নুরুল হুদা জানান, তার খামারে প্রতিদিন ৪৫০ লিটার দুধ উৎপাদন হয়, কিন্তু লকডাউনের কারণে বাজারে এত পরিমাণ দুধ বিক্রি সম্ভব না হওয়ায় অধিকাংশই অবিক্রীত থেকে যাচ্ছে। ফ্রিজে দুধ সংরক্ষণ করার চেষ্টা করলেও সংকুলান হচ্ছে না। এতে করে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা লিটার দরে দুধ বিক্রি করে প্রতি লিটারে ১৫ থেকে ২০ টাকা লোকসান দিতে হচ্ছে।

জানা যায়, জুলাই মাস থেকে ধাপে ধাপে কঠোর লকডাউনের ফলে পরিবহণ সংকট, কারখানা ও মিষ্টির দোকানগুলো বন্ধ থাকায় ঘোষেরা খুব বেশি দুধ নিচ্ছে না। এ অবস্থায় দুধ নিয়ে বিপাকে পড়েছেন খামারি ও গাভি পালনকারীরা। অনেক খামারি বাজারে চাহিদা না থাকায় ভ্যানে করে দুধ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করছেন। খামারিরা জানান, এ দামে দুধ বিক্রি করে তাদের লোকসান হচ্ছে।

আনোয়ারা ডেইরি ফার্ম অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান জানান, একদিকে গোখাদ্যের দাম বৃদ্ধি অন্য দিকে লকডাউন এ দুইয়ের কারণে উপজেলার ৪ শতাধিক খামারি লোকসানে। বাধ্য হয়ে খামারিরা ভ্যানে করে দুধ নিয়ে গ্রামে গ্রামে ফেরি করে বিক্রি করছেন। এ অবস্থায় সরকারের প্রয়োজনীয় সহযোগিতা না পেলে খামারিদের দুর্ভোগ আরও বেড়ে যাবে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডাক্তার দেলোয়ার হোসেন জানান, লকডাউনের কারণে খামারিদের এ দুরবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ক্ষতিপূরণে করোনাকালীন খামারিদের সরকারি প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। এছাড়া আনোয়ারায় সরকারি দুগ্ধ প্রক্রিয়াজাতকারী প্রতিষ্ঠান মিল্কভিটা প্রতিষ্ঠার কাজও চলছে।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে