শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

সিলেটে ধর্মঘটে জনদুর্ভোগ চরমে, প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক বুধবার

সিলেট অফিস
  ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:২১
আপডেট  : ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৯:২৩

সিলেটে পরিবহন ধর্মঘটে সিলেটের জনসাধারণ চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। জরুরি কাজে সাধারণ মানুষ সড়কে বের হলে গাড়ি আটকে দিচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকরা। সড়কের মোড়ে মোড়ে গাড়ির জন্য অপেক্ষমাণ যাত্রীরা। কেউ রিকশা-টমটম গাড়ি নিয়েও যাতায়াত করছেন। কিন্তু ভাড়া গুনতে হচ্ছে দিগুণ।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে এসব চিত্র দেখা দেখা গেছে। এদিকে, সিলেটে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখে প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পরিবহন শ্রমিক নেতারা। আগামীকাল (বুধবার) দুপুরে সিলেট বিভাগীয় কমিশনার ড. মুহাম্মদ মোশাররফ হোসেনের আহ্বানে তাঁর কার্যালয়ে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর রাজন বলেন, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার মহোদয়ের আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা আগামীকাল (বুধবার) দুপুর ১২টায় তাঁর কার্যালয়ে বৈঠকে বসবো। তবে আমাদের কর্মবিরতি অব্যাহত থাকবে। বৈঠকে বসে আমরা আমাদের দাবিগুলো আবারও উত্থাপন করবো। যদি তাৎক্ষণিক মেনে নিয়ে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এগুলো পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয় তবে বৈঠক শেষে নতুন সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

পাঁচ দফা দাবিতে আজ ভোর থেকে সিলেট জেলায় কর্মবিরতি পালন শুরু করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। ‘সিলেট জেলা সড়ক পরিবহন শ্রমিক সমন্বয় পরিষদ’র ডাকে চলছে এই আন্দোলন কর্মসূচি।

সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত লাঠি হাতে সিলেটের বিভিন্ন রাস্তায় ‘পিকেটিং’ করেছেন পরিবহন শ্রমিকরা। তারা কোনো ধরণের গণপরিবহন বা পণ্যবাহী গাড়িতে চলতে দিচ্ছেন না। এতে স্কুল, কলেজ ও মাদরাসাগামী শিক্ষার্থীরা এবং চাকরিজীবিরা বেশ ভোগান্তিতে পড়েন।

এদিকে, সোমবার রাতে পরিবহন শ্রমিক নেতাদের ধর্মঘট প্রত্যাহারের অনুরোধ জানিয়েছিলো প্রশাসন। তবে সে অনুরোধকে প্রত্যাখান করে আজ ভোর থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য পরিবহন কর্মবিরতি পালনে নিজেদের অবস্থানে অটল রয়েছেন সিলেটের পরিবহন শ্রমিক নেতারা।

পরিবহন শ্রমিকরা জানান, বেশ কিছুদিন ধরে ৫ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে কর্মবিরতি পালনসহ মিছিল-সভা করে আসছেন। তাদের দাবিগুলো হচ্ছে- সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের (এসএমপি) কমিশনার ও উপ-কমিশনারের (ট্রাফিক) অপসারণ, ট্রাফিক পুলিশের হয়রানি ও রেকার বাণিজ্যসহ মাত্রাতিরিক্ত জরিমানা বন্ধ, সিলেটে শ্রম আদালতের প্রতিনিধি শ্রমিক লীগের নাম ব্যবহার করে প্রভাব বিস্তারকারী নাজমুল আলম রোমেনকে প্রত্যাহার, উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে পাথর কোয়ারি খুলে দেওয়া, ভাঙাচোরা রাস্তাগুলোর দ্রুত সংস্কার এবং নতুন সিএনজিচালিত অটোরিকশা বিক্রি বন্ধ ও বিক্রয়কৃত গাড়ির রেজিস্ট্রেশন দেওয়া। এছাড়াও অনুমোদনহীন গাড়ি যেমন- অটোবাইক, ব্যাটারিচালিত রিকশা ও ডাম্পিংকৃত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখার দাবি জানিয়ে আসছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

পরিবহন শ্রমিকদের অভিযোগ- দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলনের পথে হাঁটলেও শুধু আশ্বাসের মধ্যেই তাদের বার বার আটকে রাখে প্রশাসন। তাদের কোনো একটি দাবিও আজ পর্যন্ত বাস্তবায়ন করা হয়নি। ফলে তারা কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হচ্ছেন। মঙ্গলবার সিলেট জেলায় এবং বুধবার থেকে পুরো বিভাগে অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতি শুরু করবেন পরিবহন শ্রমিকরা।

এ আন্দোলনে একাত্মতা পোষণ করেছেন পরিবহন শ্রমিকদের ৬টি রেজিস্ট্রার্ড সংগঠন। সংগঠনগুলো হচ্ছে- সিলেট জেলা বাস মিনিবাস কোচ মাইক্রোবাস শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা ট্রাক পিকাপ কভার্ড ভ্যান শ্রমিক ইউনিয়ন, ইমা লেগুনা হিউম্যান হুলার শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা অটো টেম্পু অটোরিকশা শ্রমিক জোট, সিলেট জেলা ট্যাংক-লরি শ্রমিক ইউনিয়ন, সিলেট জেলা সিএনজি অটোরিকশা শ্রমিক ইউনিয়ন।

যাযাদি/এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে