সোমবার, ২৯ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজস্থলীতে ড্র সমিতির নামে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা নিয়ে প্রতারক লাপাত্তা

রাজস্থলী, রাঙামাটি
  ১৮ মার্চ ২০২৪, ১৩:৩৪
প্রতারক যীষু সাহা

রাঙ্গামাটি জেলার রাজস্থলী উপজেলার ব্যবসায়ী পরিচয়ে রাজস্থলী বাজারের বিভিন্ন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়ে যীশু নামের এক প্রতারক গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তার প্রতারণার খপ্পরে পরে ৬/৭জন ব্যবসায়ী সর্বসান্ত হয়ে পড়েছেন।

গত ১/২/২৪ তারিখে ব্যবসায়ী, সঞ্জয় বণিক, সাজু বনিক,দেবাশিষ দাশ, সুজনঘোষ, নয়নদাশ, সুব্রত নাথ ও খান ফার্মেসীর মালিক ইউসুফ খান এমন অভিযোগ করেন রাজস্থলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমার বরাবরে। দ্রুত প্রতারক যীষু কে টাকা আদায় সহ দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।

জানা গেছে, চট্রগ্রাম জেলার রাঙুনিয়া উপজেলার শান্তি নিকেতন এলাকার মৃত সনাতন সাহার ছেলে কাঠ ব্যবসায়ী হিসেবে এলাকায় পরিচয় দেয়। ওই পরিচয়ে তিনি গত দুই বছরে ধরে এলাকার বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছ থেকে ড্র সমিতি নামক প্রতিষ্টান খুলার কথা বলে অন্তত ২০ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়।ব্যবসায়ীরা তার কাছে টাকা চাইলে সে আজ দেব কাল দেব আগামী মাসে দেব বলে ফাকি দিয়ে আসছে, এমন কি কয়েকজন ব্যবসায়ী কে চেক প্রদান করেন যীষু। এতে ব্যবসায়ীরা নিরুপায় হয়ে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বরাবরে গত ১/২/২৪ সালে লিখিত অভিযোগ করেন।

অভিযোগের প্রেক্ষিতে চেয়ারম্যান তাকে হাজির হওয়ার জন্য নোটিশ দিলেও সে উপস্থিত হতে গরিমসি করে। পরবর্তীতে এক পর্যায়ে যীষুর পাশ্ববর্তী অংসাইনু মারমার মারফতে ডাকা হলে তিনি এসে হাজির হয়ে উল্ডা পাল্টা আচরণ শুরু করে। এবং অভিযোগ কারীদের পাওনা টাকার কথা সম্পর্কে শিকার করে। পরবর্তীতে টাকা পরিশোধ করবে বলে একটি তিনশত টাকার ষ্ট্যাম্পে মুচেলেখা দেন। এ বিষয় নিয়ে কিছু দিন যেতে না যেতে যীষু সাহা বিচারক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান উবাচ মারমা, ২ নং গাইন্দ্যা ইউপি চেয়ারম্যান পুচিংমং মারমা, ৩২৮ নং পৌয়তু মৌজার হেডম্যান ও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান উথিনসিন মারমা ও ব্যবসায়ী সজ্ঞয় বনিকের বিরুদ্ধে রাঙামাটি আদালতে মারধরের মামলা করেন বলে জানাগেছে। তবে অভিযোগ কারিরা একই সম্প্রদায়ের তারা ঘটনার সত্য তা যাচাই বাচাই করে প্রতারক যীষু কে আইনের আওতায় এনে টাকা আদায়ের ব্যবস্থা গ্রহনে জোর দাবী জানান। ভূক্তভুগি ব্যবসায়ী দেবাশীস দাশ বলেন, যীষু আমার নিকট হতে ৮৮ হাজার ৫০০ শত টাকা নিয়ে টাকা চাইলে তিনি একই কথা বলে এবং আমাকে দুইটি ফাস্ট সিকিউরিটি ইসলামী চন্দ্রঘোনা শাখার ব্যাংকের চেক দেন। আমি সময় অনুযায়ী ব্যাংকে যোগাযোগ করিলে তার একাউন্টে কোন টাকা না থাকায় আমি তার প্রতারণার শিকার হয়েছি। কোন উপায় না দেখে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে একটি লিখিত আবেদন করি।

ইমা জুয়েলাসের মালিক সাজু বনিক বলেন,আমার থেকে ৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রতারক যীষু সাহা। এখন সে লাপাত্তা। ফোন দিলেও রিসিভ করে না। কোন উপায় না পেয়ে আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের নিকট আবেদন করি।

আরেক ফার্মেসীর মালিক সুজন ঘোষ বলেন, ড্র সমিতির কথা বলে নিয়েছে। এখন তাকে খুঁজে পাচ্ছি না। তাকে না পাওয়াতে আমরা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ করি টাকা আদায়ের জন্য।

দিন মজুর নয়ন দাশ বলেন, ড্র সমিতি দেওয়ার কথা বলে আমার কাছ থেকে ৬৯ হাজার টাকা নিয়েছে। মানুষের কাছ থেকে ধার এনে টাকা দিয়েছি। এখন কী করব বুঝতে পারছি না।আমি প্রতিদিন লেবারের কাজ করি কিভাবে টাকা শোধ করিব। এ বিষয়ে যীষুর সাথে মোবাইলে কথা হলে তিনি টাকার বিষয়টি এড়িয়ে চলে এবং এটি সমিতির বিষয় অপর দিকে ইউসুফ খান টাকা পাবে কিনা জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি বলেন, ইউসুফ খানের সাথে আমার কথা হয়ছে।

এ বিষয়ে ভূক্তভোগীরা আরো জানান, আমরা উপজেলা চেয়ারম্যানের বিচারের আশায় গেলে তিনি আরো মামলার শিকার হন। ফলে কোন সুরহা না পেয়ে রাজস্থলী থানায় মামলা করতে গেলে অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইকবাল হোসেন তাদের বলেন এটা চেক প্রতারনা মামলা তাই আদালতের মাধ্যমে মামলা দায়ের করতে হয়। তিনি আমাদের কে আদালতে অভিযোগ দাখিল করতে বলেন। বিষয়টি নিয়ে ওসির সাথে কথা হলে তিনি বলেন কিছু ব্যবসায়ী আমার নিকট মামলা করার জন্য আসছিলো আমি তাদের আদালতে মামলা দায়ের করার জন্য বলি কেন না এটা চেক প্রতারণা মামলা।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে