মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

হোসেনপুরে ঈদের কেনাকাটায় উপচেপড়া ভীড়

হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি
  ০২ এপ্রিল ২০২৪, ২০:১৮

কিশোরগঞ্জের হোসেনপুরে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে এখন সরগরম প্রতিটি বিপণিবিতান। তবে পণ্যের দাম বেশি থাকায় সাধারণ ক্রেতাদের নাভিশ্বাস উঠেছে।

সরেজমিনে দেখা যায়,উপজেলা সদরের বিভিন্ন মার্কেট,বিপণিবিতান, জুতার শোরুমে ক্রেতাদের উপচেপড়া ভিড়। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতারা দর-কষাকষি করে ঈদের কেনাকাটা করছেন।

স্থানীয় ব্যবসায়িদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলতঃ প্রথম রোজার পর থেকেই ঈদের কেনাকাটা করতে বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষজন বিপণিবিতানগুলোতে আসছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত সব দোকানেই বিরামহীন কেনাকাটার চলছে।ফলে ঈদের আরো এক সপ্তাহ বাকি থাকলেও পুরোপুরি জমে উঠেছে ঈদের বাজারগুলো।

দোকানিরা জানান, এবার প্রতিটি দোকানে গড়ে ৮০ হাজার থেকে একলাখ টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। ঈদ ঘনিয়ে আসলে বেচাকেনার চাপ আরও কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। সবচেয়ে বেশি ভিড় দেখা যায় নারী ও ছোট শিশুদের জামাকাপড়ের দোকানে।

স্থানীয় দিদার গার্মেন্টসের স্বত্বাধীকারি মোঃ আব্দুল করিম জানান, এবার পণ্যের দাম কিছুটা বেশি হওয়ায় ক্রেতারা দেখেশোনে, কিছুটা সময় নিয়ে কেনাকাটা করছেন। অন্য সময়ে যেখানে আমাদের প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪০ হাজার টাকা বিক্রি হতো।

এবার প্রতিদিন গড়ে ৯০ হাজার থেকে ১লাখ টাকার বেশি বিক্রি হচ্ছে। ক্রেতা মনজুরুল হকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিনি প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে থেকে হোসেনপুরে এসেছেন ঈদের কেনাকাটা করতে। ছেলে-মেয়েসহ পরিবারের সবার জন্য ঈদের কেনাকাটা শেষ করলেও সব জিনিসের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে।

এসময় কথা হয় রাশেদ ভূঁইয়া নামের আরেক ক্রেতার সঙ্গে। তিনি বলেন, আমার নিজের ও দুই ছেলে-মেয়ের কেনাকাটা করতে ১৭ হাজার টাকা নিয়ে এসেছিলাম। জামা-কাপড়, জুতার এতটাই দাম যে,বাচ্চাদের কেনাকাটা করতেই সব টাকা শেষ হয়ে গেছে। তাই নিজের জন্য কোনো কিছু না কিনেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন তিনি।

আদর্শ গার্মেন্টসে কেনাকাটা করতে এসে পলি আক্তার বলেন,গত দুই মাস আগে যে কাপড় ১২০০-১৫০০ টাকায় কিনেছি, এখন সেগুলোর দাম ২৫০০-৩০০০ টাকা । একটি থ্রি পিছ আগে ৩ হাজার ৫০০টাকায় কিনেছিলাম এখন সেটি ৫ হাজার টাকার বেশি দাম চাচ্ছেন।

এমন বেশি দাম হলে কীভাবে ঈদের কেনাকাটা করবে সাধারণ মানুষ বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। বাটা শোরুমের বিক্রেতা মোঃ রফিকুল ইসলাম জানান, নারী ক্রেতারা তাঁদের পোশাকের সঙ্গে মিল রেখে স্যান্ডেল, নাগরা, পেনসিল হিল ও স্লিপার কিনছেন।

ছেলেরা পাঞ্জাবি, প্যান্ট ও টি-শার্টের সঙ্গে মিলিয়ে ক্যাজুয়াল ও ফ্ল্যাট জুতা নিচ্ছেন। রকমারি জুতার দোকানি মতিন মিয়া বলেন, গতবারের তুলনায় এবার বিকিনির পরিমাণ কিছুটা কম।

কেননা সব ধরনের জিনিসপত্রের দাম অনেক বেশি। গত তিন মাস আগে যে জুতা ৬০০-৮০০ টাকায় পাইকারি কিনেছি, সেগুলো ঈদ উপলক্ষে ৯০০-১২০০ টাকায় কিনেছি। এতে বাধ্য হয়েই বেশি দামে জুতা বিক্রি করতে হচ্ছে তাদের।

এছাড়া পোশাকের রং ও ধরনের সঙ্গে মিল রেখে তরুণী ও নারীরা কিনছেন বিভিন্ন গয়না, গলার সেট, হাতঘড়ি, পায়েল, ব্রেসলেট, মাথার টিকলি, সানগ্লাস ও বাহারি রঙের চুড়ি। হোসেনপুর বাজারের বিশিষ্ট কসমেটিকস ব্যবসায়ী মাসুদ মৃধা জানান, গত কয়েক বছর করোনাসহ নানা কারণে বিপণিবিতান গুলোতে বিক্রির পরিমাণ একটু কম ছিল।

এ বছর রমজানের শুরু থেকেই বেচাকেনার ধুম পড়েছে। আশা করছি এবার ঈদে দোকানগুলোতে বিক্রির পরিমাণ দ্বিগুণেরও বেশি ছাড়িয়ে যাবে।

যাযাদি/ এম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে