স্বামী পরকিয়ায় আসক্ত এই সন্দেহে ক্ষুব্ধ হয়ে দুই মেয়েসহ ফাতেমা আক্তার সীমা(২৬) নামে এক গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছে। মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদু:খিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামে ঘটে। নিহত দুই শিশু কন্যা হলো আরিফ(৪ বছর) ও আরিয়া (২ বছর)।
আত্মহত্যাকারী ফাতেমা আক্তার সীমা পুটিয়া গ্রামের সদ্য প্রবাস ফেরত আরিফ হোসেন রাঢ়ীর স্ত্রী। সংবাদ পেয়ে থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করেছে।
জানা গেছে, পাশ^বর্তী হাইমচর উপজেলার চরকৃষ্ণপুর গ্রামের মোস্তফা কোতোয়াল এর চর্তুথ সন্তান ফাতেমা আক্তার সীমার সাথে ৭ বছর পূর্বে ফরিদগঞ্জ উপজেলার চরদু:খিয়া পশ্চিম ইউনিয়নের পুটিয়া গ্রামের পুটিয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম রাঢ়ীর ছেলে আরিফ হোসেন রাঢ়ীর সাথে বিয়ে হয়। তাদের ঘরে দুই শিশু কন্যা হলো আরিফ(৪ বছর) ও আরিয়া (২ বছর)। দুবাই প্রবাসী আরিফ হোসেন রাঢ়ী গত ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে আসে। পবিত্র ঈদ উল ফিতরের দুইদিন পর প্রবাসে ফিরে যাওয়ার কথা।
স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী জানায়, মঙ্গলবার (৯ এপ্রিল) সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় তার স্ত্রী ফতেমা আক্তার সীমা তার দুই সন্তানকে খাওয়াচ্ছে। কিন্তু প্রায় দুই ঘন্টা পর চালের বস্তা নিয়ে বাড়ি ফিরে দেখি ঘরের দরজা বন্ধ। পরে ডাকাডাকি করে কোন সাড়াশব্দ না পেয়ে ঘরের পিছন দিক দিয়ে জানালা গিয়ে দেখতে পাই স্ত্রী ও দুই সন্তান ঘরের ফ্যানের সাথে ঝুলে রয়েছে। পরে চিৎকার দিলে মাসহ আশপাশের লোকজন এগিয়ে এসে ঘরের দরজা ভাঙ্গলে আমি নিজেই তিনজর্নে ঝুলন্ত লাশ রশি কেটে খাটের মধ্যে শুইয়ে দেই।
তবে প্রতিবেশিদের ধারনা মা ও দুই মেয়ের এই মৃত্যু রহস্যজনক। পরকিয়া সন্দেহে মা দুই মেয়ের মৃত্যু নিশ্চিতের পর নিজে আত্মহত্যা করেছে, না স্বামী আরিফ হোসেন রাঢ়ী নিজেই এই ঘটনা ঘটিয়েছে। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত ঘটনার রহস্য বের করা উচিত।
লোকজন জানায়, প্রবাসী আরিফ হোসেন রাঢ়ীর সাথে তার স্ত্রী ফাতেমা আক্তার সীমার সাথে সোমবার (৮ এপ্রিল) রাতে কথা কাটাকাটি হয়। এরপরই সকালে এই ঘটনা ঘটে।
ফাতেমা আক্তার সীমার মা শাহিনুর বেগম জানান, মেয়ে ও দুই নাতনীর মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে ছটে এসেছি। সোমবার রাতেও মেয়ের সাথে মুঠো ফোনে কথা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমেই প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে বিশ^াস করি।
এব্যাপারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান মো: শাহজাহান জানান, মঙ্গলবার সকালে আরিফ রাঢ়ীর ঘরের বিছানায় মা ও দুই মেয়ের লাশ পড়ে থাকতে দেখেছি।
এ ছাড়া ঘরের ফ্যানের সাথে একাধিক দড়ি ঝুলন্ত অবস্থায় ছিল। ঘটনা কি এবং কেন ঘটেছে তা তদন্ত সাপেক্ষে রহস্য বের হবে। এছাড়া আত্মহত্যাকারী ফাতেমা আক্তার সীমার বড় বোনও প্রবাসে ইতিপুর্বে আত্মহত্যা করেছে বলে শুনেছি। ওই পরিবারের এই ধরনের মানসকি সমস্যা রয়েছে কিনা তাও তদন্ত করা প্রয়োজন।
ফরিদগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো: সাইদুল ইসলাম জানান, সংবাদ পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসে লাশ উদ্ধার করে পোস্ট মর্টেমের জন্য চাঁদপুর প্রেরণ করা হয়েছে।
যাযাদি/ এস