বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১

পালপাড়ার কুমাররা শেষ মর্হুতে ব্যস্ত সময় পার 

সৈয়দপুর (নীলফামারী) প্রতিনিধি
  ১৩ এপ্রিল ২০২৪, ১৩:১২
ছবি : যায়যায়দিন

আগামীকাল নববর্ষ। তাই, নীলফামারীর সৈয়দপুরের কাশিরামের চওড়া পালপাড়ায় শেষ মর্হুতে কাজ করতে হিমিশিম খাচ্ছেন কারিগররা। জিনিসপত্র ও খেলনাপাতি তৈরি করে রোদে শুকিয়ে রংয়ের কাজ শেষ করতে ও হাট-বাজারে সরবরাহে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা।

পাইকার ও মেলার আয়োজকরা এখান থেকে সরাসরি নিয়ে যাচ্ছেন মাটির গাছ, ফুলের টব, ফল-মূল, মাটির ব্যাংকসহ নানারকমের খেলনা।

চওড়া পালপাড়া গ্রমের অবস্থান সৈয়দপুর শহর থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে। এ গ্রামটি পড়েছে উপজেলার কাশিরাম বেলপুকুর ইউনিয়নে। এ গ্রামের ৩শ’ পরিবার কুমারের কাজ করেন। মাটি এ কাজের প্রধান উপকরণ। পরিবারগুলো পাশের চিকলী, যমুনেশ্বরী নদীর পলিমাটি সংগ্রহ করে মাটির তৈজষপত্র, হাঁড়ি, কলসি, পিঠা তৈরির সরঞ্জামসহ অনেক কিছু তৈরি করার পাশাপাশি বিভিন্ন খেলনাও তৈরি করেন।

সংবাদকর্মীরা পাল পাড়ায় গেলে কুমাররা জানান-ঈদ, দুর্গাপূজা, মহররম, গ্রামীণ মেলায় খেলনা সামগ্রীর অনেক চাহিদা। পূঁজির অভাবে আমরা চাহিদা অনুযায়ী খেলনা তৈরি করতে পারি না।

কথা হলে হাজারীহাট কলেজের ছাত্রী সরস্বতী পাল সংবাদকর্মীদের জানান, হাতে সময় নেই কাল পহেলা বৈশাখ। তাই, স্বামীকে সহযোগিতা করছি। তাছাড়া সবাই বলে, আমার হাতে রাংগানো রং নাকি খুব সুন্দর হয়। আমি নাকি রংয়ের শিল্পী। সরস্বতীর স্বামী দীপক পাল জানান, বৈশাখী মেলা উপলক্ষে চট্টগ্রাম থেকে অর্ডার পেয়েছি। পাঁচ লাখ টাকার খেলনা নেবে তারা। এজন্য কুমার পাড়ার মানুষের ঘুম নেই। আমরা দু’মাস ধরে কাজ করছি। মাটি দিয়ে খেলনা তৈরি পোড়ানো, রং করা এসব অনেক কষ্টের কাজ। এরই মধ্যেই ট্রাক আসবে। ওই ট্রাকে চেপে চলে যাবে খেলনাগুলো চট্টগ্রামে।

এসময় সংবাদকর্মীরা দেখতে পান পালপাড়ার গোপলা চন্দ্র রায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ জাতীয় নেতাদের প্রতিকৃতি, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিদ্রোহী কবি নজরুল ইসলামের সুন্দর-সুন্দর মুখায়ব ও অবমূর্তি তৈরি করছিলেন। অজয় পাল বলেন, পুঁজি সংকটে আমাদের অনেকেই পেশা ছেড়ে দিয়েছেন। কিন্তু যদি এখানে ব্যাংকগুলো জামানতহীন ঋণ দেয় তা’হলে আমাদের তৈরি এসব খেলনা কেবল দেশে নয় বিদেশেও বাজার পাবে। তিনি বলেন, পালপাড়ার কুমারেরা ভালো কাজ করতে চায়। এবার বৈশাখে আমরা পাঁচ লাখ টাকার খেলনা বিক্রি করবো। প্রতিটি খেলনার পাইকারি দাম নিচে ১০ টাকা থেকে শুরু করে উপরে ২শ’ টাকা পর্যন্ত। এজন্য অবশ্য পূঁজির জোগান দিয়েছে গ্রামীণ ব্যাংকসহ কিছু-কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।

এনিয়ে এলাকার কয়েকজন সূধীজন বলেন, বংশ পরম্পরায় এসব কাজ যারা করে আসছেন যেগুলো সমাজের বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠানে বাঙ্গালি লোকজ সংস্কৃতি বহন করে সেসব পেশার মানুষদের জন্য অবশ্যই সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা প্রয়োজন। এ জন্যে সরকারি সংশ্লিষ্ট বিভাগের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন।

যাযাদি/ এস

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে