মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

মাকে গাছে বেঁধে ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা, ব্যাংক কর্মকর্তা আটক

ফেনী প্রতিনিধি
  ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১১:০৯

ফেনীর ছাগলনাইয়ার পাঠান নগরে টাকা চুরির অভিযোগ তুলে মাকে গাছের সঙ্গে বেঁধে নুর মোহাম্মদ (১৮) নামে এক ছেলেকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় মঈন উদ্দিন নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

রোববার (১৪ এপ্রিল) নিহতের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ফেনী ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।এর আগে শনিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে জেলার ছাগলনাইয়া উপজেলার পাঠান নগর ইউনিয়নের বাথানিয়া গ্রামে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটে।

নিহত নুর মোহাম্মদ নোয়াখালী জেলার সুধারাম থানার আন্দার চর গ্রামের নুর ইসলামের ছেলে। সে ওই বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন। গ্রেপ্তারকৃত ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিন বাথানিয়া গ্রামের হাবিবুর রহমানের ছেলে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে মারধরের কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

নিহত নুর মোহাম্মদের মা বিবি খদিজা জানান, অভাবের কারণে চার বছর আগে নূর মোহাম্মদকে ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনের বাড়িতে কেয়ারটেকার হিসেবে দিয়ে যান তিনি। ছেলেটির মাসিক বেতন ধরা হয়েছিল দুই হাজার টাকা। চার বছরে তাকে কখনো ছুটি দিত না ওই পরিবার। সেই ক্ষোভ থেকে গেল ২৭ রমজানে ওই বাসা থেকে ৮০ হাজার টাকা ভর্তি একটি খাম নিয়ে নিজ বাড়ি চলে যান নুর মোহাম্মদ। এরপর থেকে মোবাইল ফোনে হুমকি দিতে থাকেন ব্যাংক কর্মকর্তার পরিবারের সদস্যরা। তাদের অব্যাহত হুমকিতে ঈদের পরদিন ছেলেকে নিয়ে ব্যাংক কর্মকর্তার বাড়িতে হাজির হন তিনি। একইসাথে চুরি করে নেওয়া টাকাগুলোও ফেরত দেন।

বিবি খদিজার অভিযোগ, বাড়ি ঢোকা মাত্রই ব্যাংক কর্মকর্তার চারভাই মিলে তাঁর ছেলেকে মারধর শুরু করেন। বাধা দিলে তাঁকেও মারধর করে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখেন ওই পাষন্ডরা । এরপর সারা রাত দফায় দফায় এবং পরদিনও তাঁর ছেলেকে মারধর করা হয়। তাদের মারধরের একপর্যায়ে শনিবার বিকেলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন নুর মোহাম্মদ।

এদিকে ছেলেকে হারিয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বিবি খদিজা বলেন, ‘আমার ছেলের যদি কোনো অন্যায় থাকতো, তাহলে তারা তাকে পুলিশে দিতো। আমি তাদের কাছে আমার ছেলের জীবন ভিক্ষা চেয়েছি। তবু তাদের মন গলেনি। এভাবে নির্যাতন করে, আমার চোখের সামনেই ছেলেটিকে মেরে ফেললাে। আমি এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার চাই।

বিষয়টি নিশ্চিত করে ছাগলনাইয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি হাসান ইমাম বলেন, নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। মরদেহের পিঠ, কোমর, হাত-পাসহ পুরো শরীরে অসংখ্য আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ঘটনায় ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে নিহতের স্বজনরা। ব্যাংক কর্মকর্তা মঈন উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিরা পলাতক রয়েছে। আজ সোমবার দুপুরের দিকে আসামি মঈন উদ্দিনকে ফেনীর আদালতে তােলা হবে এবং রিমান্ড চাওয়া হবে বলে ওসি জানান।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে