মঙ্গলবার, ৩০ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১

বোয়ালমারীতে রমজান জুড়ে সুমন রাফির দৃষ্টান্তমূলক সমাজসেবা

বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধি
  ১৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫:১২

ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার ছোলনা গ্রামের বাসিন্দা হেদায়েতুর রাফি সুমন। তিনি বোয়ালমারী পৌর সদরে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী জর্জ একাডেমির সাবেক সহকারী শিক্ষক মো. শওকত হোসেন মিয়ার ছেলে। মা রাবেয়া বেগম একজন গৃহিণী। বড় বোন শারমিন সুলতানা আমেরিকা প্রবাসী। বড় ভাই হায়াতুর রাফি নয়ন একজন স্বর্ণ ব্যবসায়ী। ঢাকার বায়তুল মোকাররমের দ্বিতীয় তলায় 'রোজা জুয়েলার্স' নামের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি পরিচালনা করেন তারা দুই ভাই। অবিবাহিত সুমন ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে উপার্জিত অর্থের সবটাই মানব কল্যাণে ব্যয় করেন।

এবারের পুরো রমজান মাস জুড়ে দরিদ্রদের মধ্যে প্রায় তিন লাখ টাকা তিনি ব্যয় করেছেন বলে জানান। দুই শতাধিক নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষের মধ্যে নগদ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে প্রদান করেছেন। ঈদ উপলক্ষে ৮০ জনকে শাড়ি এবং ১০০ জনকে লুঙ্গি উপহার দিয়েছেন। তীব্র গরম থেকে পরিত্রাণের জন্য বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় ৬টি ফ্যান প্রদান করেছেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন নিম্ন আয়ের পরিবারের মধ্যে ঈদ উপলক্ষে খাদ্যসামগ্রী, চাল, সেমাই বণ্টন করেছেন। উপজেলার ১৫ টি এতিমখানায় এতিমদের ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকা করে দিয়েছেন। এছাড়া বিভিন্ন এতিমখানার ৩০ জন এতিমকে পাঞ্জাবী কিনে দিয়েছেন।

তবে রমজান মাস জুড়ে বিভিন্ন দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত অসুস্থ রোগীর জন্য তার রক্ত সংগ্রহের প্রাণান্তকর চেষ্টা ছিলো উল্লেখ করার মতো। তিনি বিভিন্ন রোগীর জন্য দুষ্প্রাপ্য নেগেটিভ রক্তসহ ২৭ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এর মধ্যে গণমাধ্যমকর্মী লিটু সিকদারের কিডনিরোগে আক্রান্ত এক আত্মীয়ের জন্য ৬ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। ঈদের আগের দিন সংবাদপত্র বিক্রয়কর্মীদেরও তিনি নগদ অর্থ সহায়তা দিয়েছেন।

জানতে চাইলে সুমন রাফি বলেন, শেষ রমজান পর্যন্ত বোয়ালমারীর বিভিন্ন রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে কোন দিন খিচুড়ি, কোনদিন বিরানি কোন দিন চপ-ছোলা-পিঁয়াজু-ফলমূল দেই। দুই শতাধিক নিম্ন আয়ের দরিদ্র মানুষের মধ্যে নগদ অর্থ ৫০০ থেকে ১০০০ টাকা করে দিয়েছি। তিনি আরো বলেন, ঈদ উপলক্ষে ৮০ জনকে শাড়ি এবং ১০০ জনকে লুঙ্গি উপহার দিয়েছি। বিভিন্ন রোগীর জন্য দুষ্প্রাপ্য নেগেটিভ রক্তসহ ২৭ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।

ঈদ উপহার পাওয়া এতিম শিশু পাঞ্জেরী মডেল মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ইয়াসিন মোল্যা (১১) বলেন, ঈদে সুমন রাফি ভাইয়ের দেয়া পাঞ্জাবী পেয়ে খুব খুশি হয়েছি।

উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের কমলেশ্বরদী গ্রামের বাসিন্দা রক্ত গ্রহীতা মামুন শেখ বলেন, আমি কিডনি রোগে আক্রান্ত। সুমন রাফি ভাই আমাকে রমজান মাসে ৬ ব্যাগ রক্তের ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। এজন্য আমি তার নিকট কৃতজ্ঞ।

বেসরকারি স্কুল শিক্ষক মো. নাজমুল হক বলেন, রমজান মাসে রাস্তার মোড়ে মোড়ে দাঁড়িয়ে সুমন রাফিকে দেখেছি দরিদ্রদের ইফতার দিতে। তার এ কাজের প্রশংসা করতেই হয়।

মানবিক এ সমাজকর্মীর কাজের মূল্যায়ন প্রসঙ্গে বোয়ালমারী প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুল সিকদার বলেন, সুমন রাফির এ ধরনের কাজ খুবই প্রশংসনীয়। তার মানবিক কাজের পরিধি দিন দিন বৃদ্ধি পাক- এ প্রত্যাশা করছি।

যাযাদি/ এসএম

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে