সারাদেশের মতো রাজশাহীতেও বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা দ্বিতীয় দিনের মতো কলম বিরতি কর্মসূচি পালন করেছেন। বুধবার (২৮ মে) সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত রাজশাহীর বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে কর্মরত এই কর্মকর্তারা কর্মবিরতিতে অংশ নেন।
‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’-এর আহ্বানে দেশব্যাপী এই কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। প্রশাসন ক্যাডারের পক্ষপাতমূলক আচরণ, বিশেষ করে অন্যান্য ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্ত ও তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের প্রতিবাদে এ কর্মসূচি পালিত হয়।
পরিষদ জানিয়েছে, জরুরি বিভাগ, যেমন হাসপাতালের জরুরি সেবা, এই কর্মসূচির আওতার বাইরে রাখা হয়েছে যাতে সাধারণ জনগণের দুর্ভোগ না হয়।
সম্প্রতি প্রশাসন ক্যাডারের কিছু সদস্যের মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরে মারামারি, মিছিল ও জনপ্রশাসনে শোডাউনের ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় ওঠে। এসব ঘটনায় প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে অন্যান্য ২৫টি ক্যাডারের কয়েকজন সদস্য সামাজিক মাধ্যমে মতামত দেন। এরপরই তাদের ১২ জনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়, যা পরিষদের মতে চরম বৈষম্যমূলক পদক্ষেপ।
পরিষদ অভিযোগ করে, প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তারা সরকারি বিধিবিধান ভঙ্গ করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। অপরদিকে, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত জনসেবা নিশ্চিত করার সুস্পষ্ট পরিকল্পনার অভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ তুলে পরিষদ।
পরিষদের দাবি, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে উপসচিব পুলে প্রশাসন ক্যাডারের জন্য ৫০% কোটা বরাদ্দ এবং বাকি ৫০% অন্যান্য ক্যাডারের জন্য প্রতিযোগিতার ভিত্তিতে নির্ধারণ করার প্রস্তাব একটি ‘জুলাই বিপ্লবের’ চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক।
‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ’ দীর্ঘদিন ধরে জবাবদিহিমূলক ও পেশাভিত্তিক জনপ্রশাসন গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে আসছে। তারা কৃত্যভিত্তিক মন্ত্রণালয় গঠন, ডিএস পুলের কোটা বাতিল এবং সকল ক্যাডারের সমতা নিশ্চিতের দাবি জানিয়ে আসছে।
গত ২০ মে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে বিকেল ৫টা ১০ মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করে পরিষদভুক্ত ২৫টি ক্যাডারের কর্মকর্তারা।
পরিষদের পক্ষ থেকে জানানো হয়, কোনো রকম আলোচনার উদ্যোগ ছাড়াই একতরফাভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, যা কর্মকর্তাদের মধ্যে গভীর অসন্তোষের জন্ম দিয়েছে। তাই কর্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থেকেও এ কর্মসূচির মাধ্যমে তারা বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন।