শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যুক্তরাজ্যে নির্বাচন

নিজ আসনেই চ্যালেঞ্জের মুখে বরিস

লেবার পার্টি ওই আসনে মুসলমান অভিবাসী আলি মিলানিকে মনোনয়ন দিয়েছে এরই মধ্যে তার প্রচার ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে
যাযাদি ডেস্ক
  ০৮ নভেম্বর ২০১৯, ০০:০০
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন

যুক্তরাজ্যের আসন্ন সাধারণ নির্বাচনে নিজের সংসদীয় আসনেই জোর প্রতিদ্বন্দ্বিতার মুখোমুখি ক্ষমতাসীন কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ নেতা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। উক্সব্রিজের ওই আসনে বিরোধীদল লেবার পার্টি মুসলমান এক অভিবাসী যুবককে মনোনয়ন দিয়েছে। ২৫ বছর বয়সী ইরানি বংশোদ্ভূত আলি মিলানির প্রচার এরই মধ্যে ভোটারদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে বলে দেশটির গণমাধ্যম জানিয়েছে। সংবাদসূত্র : বিবিসি, ওয়াশিংটন পোস্ট

উত্তর-পশ্চিম লন্ডনের উক্সব্রিজ এক দশক আগেও টোরিদের (কনজারভেটিভ পার্টি) নিরাপদ আসন হিসেবেই পরিচিত ছিল। কিন্তু গত এক দশকে এই চিত্র অনেকখানিই বদলে গেছে। ২০১৭ সালের শেষ সাধারণ নির্বাচনে বরিস এখানে মাত্র পাঁচ হাজার ৩৪ ভোটের ব্যবধানে জিতেছিলেন। লেবার পার্টি যদি এবার আগের ভোটের সঙ্গে অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ যোগ করতে পারে, তাহলেই ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রী বিপদে পড়বেন।

ব্রিটিশ আইন অনুযায়ী, পার্লামেন্টকে তার আসনের বাসিন্দা হতে হয় না। বরিস জনসন উক্সব্রিজে বসবাস না করলেও মাঝে মাঝেই তাকে ওই এলাকার ভোটারদের সঙ্গে দেখা ও শুভেচ্ছা বিনিময় করতে দেখা গেছে। এই সুযোগকেই কাজে লাগাতে চান নিজেকে স্থানীয় হিসেবে পরিচয় দেয়া আলি মিলানি। উক্সব্রিজের বাসিন্দা মিলানি ব্রম্ননেল বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় সেখানকার ছাত্রনেতা হিসেবেও পরিচিত ছিলেন।

হিথ্রো বিমানবন্দরের তৃতীয় রানওয়ে নির্মাণ বন্ধে জনসনের ব্যর্থতাকেও ভোটাররা বিবেচনায় নেবে বলে আশা এই মুসলমান অভিবাসীর। কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ নেতা বরিস কয়েক বছর আগে প্রয়োজনে বুলডোজারের সামনে শুয়ে হলেও ওই রানওয়ের নির্মাণকাজ বন্ধ করবেন বলে প্রতিশ্রম্নতি দিয়েছিলেন। ব্রিটিশ এই প্রধানমন্ত্রী বুধবার থেকে টোরিদের আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রচারণা শুরু করেছেন; যদিও অনেকে তার জয় নিয়েই শঙ্কিত।

উক্সব্রিজ আসনে লেবারদের প্রার্থী মিলানি মা ও বোনের সঙ্গে পাঁচ বছর বয়সে তেহরান থেকে লন্ডনে যান। সরকারি আবাসনে থাকার পাশাপাশি তিনি 'আংশিক বৃত্তি'র সুবিধা নিয়ে পড়াশোনা করেন। অন্যদিকে, ৫৫ বছর বয়সী বরিস জনসনের জন্ম নিউইয়র্কে। তার বাবা সাবেক কূটনীতিক, যিনি ব্রাসেলসে দীর্ঘদিন দায়িত্ব পালন করেছিলেন। তার মা ছিলেন চিত্রশিল্পী। কনজারভেটিভ পার্টির শীর্ষ এই নেতা পড়াশোনা করেছেন ইটন ও অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়; রাজনীতিতে ঢোকার আগে সাংবাদিক হিসেবেও তার ব্যাপক জনপ্রিয়তা ছিল।

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর আশা, ১২ ডিসেম্বরের ভোটে জনগণ তাকে ব্যাপকভাবে সমর্থন দেবে, যেন সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়েই তার দল যুক্তরাজ্যকে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে। তবে, এর উল্টোটা হলে, অর্থাৎ লেবার পার্টি ক্ষমতায় গেলে, সেটা ব্রেক্সিটকে ঝুলিয়ে দেবে ও যুক্তরাজ্যের জন্য ভীতিকর পরিস্থিতি নিয়ে আসবে বলেও সতর্ক করেছেন তিনি।

'ডেইলি টেলিগ্রাফে' লেখা এক কলামে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুধবার লেবার নেতা জেরেমি করবিনের বিভিন্ন নীতির সমালোচনা করে তাকে সোভিয়েত শাসক জোসেফ স্টালিনের সঙ্গেও তুলনা করেছেন। বরিসের মতে, করবিন যেভাবে যুক্তরাজ্যের ধনীদের আক্রমণ করছেন, ১৯৩০-এর দশকে সোভিয়েত ইউনিয়নে ধনী চাষিদের ওপর স্টালিনের দমন নীতির কথা মনে করিয়ে দেয়। এদিন তিনি করবিনের বিরুদ্ধে বর্তমান রুশ প্রেসিডেন্ট ভস্নাদিমির পুতিনের পক্ষ নেয়ারও অভিযোগ করেন। তার এই মন্তব্য অবশ্য দলের ভেতরেও তুমুল সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।

লেবার নেতা করবিনও কম যাননি। তিনিও তীব্র ভাষায় বরিস জনসনের সমালোচনা করেছেন। তার মতে, বরিস সাবেক প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচারের (লৌহমানবী নামে খ্যাত) মুক্তবাজার ও সরকারি ব্যয় কমানোর বিতর্কিত নীতিকে আরও মারাত্মক রূপে কার্যকর করতে চান।

এদিকে, নির্বাচনের ঠিক আগে দলের মধ্যে একের পর এক সংকটের ফলে বরিস কিছুটা অস্বস্তিতে পড়েছেন। এক কেলেঙ্কারির জের ধরে বুধবারই তার মন্ত্রিসভার এক সদস্যকে পদত্যাগ করতে হয়েছে। অন্যদিকে, বিরোধী নেতা হিসেবে করবিনও খুব বেশি ভালো নেই, কারণ অনেকেই তার কড়া সমাজতান্ত্রিক বুলি এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন সম্পর্কে অস্পষ্ট অবস্থান মেনে নিচ্ছে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<74659 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1