শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
যথাযথ উদ্যোগ নিন

পানিতে ডুবে শিশুর মৃতু্য

নতুনধারা
  ২৬ জুলাই ২০২০, ০০:০০

একের পর এক পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছেই। বলার অপেক্ষা রাখে না, এমন ঘটনা যদি ঘটতে থাকে তবে তা আশঙ্কাজনক বাস্তবতাকেই স্পষ্ট করে। যা আমলে নেওয়া জরুরি। সম্প্রতি পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে জানা গেল, জামালপুরের বকশীগঞ্জে বুধবার বন্যার পানিতে ডুবে মাহিন মিয়া নামে এক শিশুর মৃতু্য হয়েছে। তথ্য মতে, মাহিন মিয়া বাড়ির পাশে বন্ধুদের সঙ্গে বন্যার পানিতে গোসল করতে গেলে পানিতে ডুবে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজির পর তাকে পাওয়া না গেলে বকশীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা মাহিনের মরদেহ উদ্ধার করেন। অন্যদিকে একইদিন দুপুর ১২টায় পৌর এলাকার সীমার পাড় এলাকায় ডোবায় জমে থাকা বৃষ্টির পানিতে ডুবে আরও এক শিশুর মৃতু্য হয়।

আমরা মনে করি, যখন একের পর এক শিশুর পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটছে তখন তা অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং বেদনার। প্রসঙ্গত বলতে চাই, এর আগেও বিভিন্নভাবে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই আমলে নেওয়া দরকার, এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা কতটা জরুরি। উলেস্নখ্য, এর আগে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরে এমন জানা গিয়েছিল- নদীপ্রধান বাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে ৩০টি শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এ হিসাবে প্রতি বছর পানিতে ডুবে মারা যায় ১২ হাজার শিশু। এ ছাড়া প্রতি বছর পানিতে ডুবে যারা মারা যায় তাদের ৪০ শতাংশের বয়স ১৫ বছরের নিচে, যার মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সি শিশুদের নিয়েই ঝুঁকিটা বেশি। আমরা মনে করি, পানিতে ডুবে শিশুমৃতু্য বিষয়ক সামগ্রিক চিত্র আমলে নিতে হবে এবং কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণও অপরিহার্য।

লক্ষণীয়, শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর নানা কারণই বিভিন্ন সময়ে আলোচনায় এসেছে। এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধিতে উদ্যোগ গ্রহণ জরুরি। এবারের ঘটনাতেও জানা যাচ্ছে, গোসলে নেমে ডুবে যায়- অর্থাৎ শিশুদের দিকে খেয়াল রাখা তথা অভিভাবকদের সচেতনতা বৃদ্ধি যে কতটা জরুরি তা বলার অপেক্ষা রাখে না। আমরা মনে করি, সচেতনতা বৃদ্ধির কার্যক্রমের অংশ হিসেবে ব্যাপক প্রচার প্রচারণাও আবশ্যক। শিশুর অন্যতম ঘাতক এই পানিতে ডুবে মৃতু্য রোধে সচেতনতা বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রথমেই এগিয়ে আসতে হবে পরিবারকে। শিশুরা জলাধারের কাছে যেন যেতে না পারে সেই খেয়াল রাখা এবং সতর্কতার বিষয়টি অত্যন্ত জরুরি।

আমরা বলতে চাই, এমন বিষয়ও এর আগে সামনে এসেছে, এক থেকে চার বছর বয়সি শিশুদের ৭৫ শতাংশ বাড়ির ২০ মিটারের মধ্যে পানিতে ডুবে মারা যায়। আর এর বড় কারণ হচ্ছে- পরিবারের অসচেতনতা। ফলে শিশুদের পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা আমলে রেখে আমরা বলতে চাই, পরিবারের সচেতনতার বিষয়টি অগ্রগণ্য। এ ছাড়া এটাও বলা দরকার গ্রামীণ নারীরা বিভিন্ন সময় গৃহস্থালি নানা কাজে ব্যস্ত থাকে। তাদের শিশুরা এই সময়ের মধ্যেই চলে যায় বাড়ির পাশে পুকুর বা ডোবার ধারে। তখনও ঘটে দুর্ঘটনা। সংশ্লিষ্টদের এটাও মনে রাখতে হবে, সাঁতার না জানার কারণেও অনেক শিশু পানিতে ডুবে মারা যায়। এমনকি শুধু শিশুরাই নয়- প্রাপ্তবয়স্কদেরও পানিতে ডুবে মৃতু্যর ঘটনা ঘটেছে। সঙ্গত কারণেই সাঁতার শেখার বিষয়টিকেও প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না, আজকের শিশুরাই আগামী দিনের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করবে, তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে দেশ। ফলে শিশুর সুরক্ষা নিশ্চিত করতে হবে।

সর্বোপরি আমরা বলতে চাই, শিশুর সার্বিক সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করার বিকল্প নেই। পানিতে ডুবে মৃতু্যর মতো ঘটনার পুনরাবৃত্তি রোধে অভিভাবক তথা সবারই দায়িত্ব আছে। এ কথা ভুলে যাওয়া যাবে না।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<107096 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1