শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা

ঐতিহাসিক সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে ডাক দিয়েছিলেন, সেই ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার সাহসী সন্তানরা। তার নির্দেশে পাল্টে গিয়েছিল পুরো দেশের চিত্র। বিদ্রোহ-সংগ্রামের তরঙ্গ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। মানুষের মধ্যে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠেছিল।
সালাম সালেহ উদদীন
  ২০ মার্চ ২০১৯, ০০:০০

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা, জাতির জনক, স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বাঙালি ও বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। জেল-জুলুম, নির্যাতন, হুলিয়া বহন করেছেন তিনি। পূর্ববাংলার শোষিত-বঞ্চিত-নিপীড়িত জনগণকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখিয়েছেন তিনিই এবং প্রতিষ্ঠাও করেছেন তিনি। তিনি না হলে তো এ দেশ স্বাধীনই হতো না।

যুগে যুগে কিছু মহাপুরুষ পৃথিবীতে আসেন কোনো কোনো জাতির ত্রাণকর্তা হিসেবে। বঙ্গবন্ধুও তেমনি একজন। মহাপুরুষদের মধ্যে মানবিকতা ও সরলতা এ দুটি গুণ অতিমাত্রায় থাকে। যার কারণে দেশ এবং দেশের মানুষের প্রতি থাকে তাদের সীমাহীন আস্থা ও ভালোবাসা। বঙ্গবন্ধুরও তেমনটা ছিল। এই আস্থা ও ভালোবাসাই তার জন্য কাল হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সাধারণ মানুষকে কাছে টানা ও সম্মোহন করার ক্ষমতা ছিল তার অসীম। এমন অসীম ক্ষমতার অধিকারী মানুষ বাংলাদেশে আর একজনও জন্মগ্রহণ করেননি।

অথচ আমরা বাঙালি জাতি এতটাই অকৃতজ্ঞ, যিনি আমাদের স্বাধীনতা ও জাতিরাষ্ট্রের স্বীকৃতি এনে দিলেন ও প্রতিষ্ঠা করলেন আর আমরা তাকেই সপরিবারে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে খুন করলাম। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতির রক্তে রঞ্জিত লাশ সিঁড়ির ওপর পড়ে রইল। আর খুনিরা উলস্নাসে মেতে উঠল। রাষ্ট্রীয় উচ্চপর্যায়ের কিছু লোকের অন্যায়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা দেয়ার কারণেই খুনিদের এই উলস্নাস ছিল বহু বছর। অবাক ব্যাপার, পাকিস্তানিরা যেখানে তাকে হত্যা করতে সাহস পায়নি, বন্দি করে নিয়ে যাওয়ার পরও- সেখানে স্বাধীন দেশের মাটিতে তাকে নিষ্ঠুরভাবে খুন হতে হলো। জাতি হিসেবে এর চেয়ে লজ্জা আর ঘৃণার আর কী থাকতে পারে?

বাংলাদেশ সৃষ্টির পূর্বাপর দুটি ঘটনা কোনোভাবেই সাধারণ চোখে দেখার সুযোগ নেই। একটি একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ এবং অন্যটি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যা করা। জীবনের মায়া ত্যাগ করে মুক্তিযুদ্ধে আপামর বাঙালির স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং মরণপণ লড়াই করে স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনা। এই সমষ্টিগত অসাধ্য কাজটি দ্বিতীয়বার করা বাঙালি জাতির পক্ষে আর সম্ভব নয়। সেই দেশপ্রেম আর আবেগের সংমিশ্রণ ঘটানোও সম্ভব নয় আর। আজ একুশ শতকে এসে আরও একটি মুক্তিযুদ্ধ করাও আর আমাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই মুক্তিযুদ্ধকে সাধারণ চোখে দেখা ও বিবেচনা করা অন্যায়। ঠিক তেমনি পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টকেও সাধারণ চোখে দেখা অন্যায়। বাঙালি কতখানি নিষ্ঠুর ও ক্ষমতান্ধ হলে এমন ঘটনা ঘটাতে পারে তা ভাবতেও গা শিউরে ওঠে।

রাজনীতিতে দূরদর্শিতা ও রাষ্ট্রনায়কোচিত গুণাবলির অধিকারী না হলে কেউ সফল রাজনীতিবিদ ও রাষ্ট্রনায়ক হতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে শেখ মুজিবের ছিল বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গভীর জ্ঞান। তিনি স্পষ্টতই বুঝতে পেরেছিলেন পাকিস্তানি সেনাবাহিনী হয়তো তাকে গ্রেপ্তার করবে। এ কারণেই জাতিকে প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য তিনি বজ্রকণ্ঠে বলেন, আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি, যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রম্নর মোকাবেলা করতে হবে। প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। ঢাকায় ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে বঙ্গবন্ধুর বজ্রনির্ঘোষ ঘোষণা 'এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম'। তিনি আরও বলেন, 'যার যা আছে তাই নিয়ে শত্রম্নকে প্রতিহত করে ছাড়বা।' বঙ্গবন্ধু স্পষ্ট ভাষায় বলেন, 'আমি প্রধানমন্ত্রিত্ব চাই না-বাংলার মানুষের অধিকার চাই।' বঙ্গবন্ধু ছয় দফাকে এক দফায় পরিণত করতে এ ভাষণেই তিনি বাঙালির স্বাধীনতার দিকনির্দেশনা দেন। এ ভাষণেই ছিল একটি রাষ্ট্রের অভু্যদয়ের কথা। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ ছিল অন্যতম শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক ভাষণ।

ঐতিহাসিক সেই ভাষণে বঙ্গবন্ধু আত্মবিশ্বাসী কণ্ঠে স্বাধীনতা সংগ্রামের যে ডাক দিয়েছিলেন, সেই ডাকে সাড়া দিয়ে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েছিল বাংলার সাহসী সন্তানরা। তার নির্দেশে পাল্টে গিয়েছিল পুরো দেশের চিত্র। বিদ্রোহ-সংগ্রামের তরঙ্গ টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া ছড়িয়ে পড়েছিল। মানুষের মধ্যে মুক্তির আকাঙ্ক্ষা প্রবল থেকে প্রবলতর হয়ে উঠেছিল।

একাত্তরের সাত মার্চ বাঙালির জাতীয় জীবনে একটি অবিস্মরণীয় ও ঐতিহাসিক দিন।

\হ১৯৭১ সালে বিপুল আত্মত্যাগ ও রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের জন্ম। মূলত একাত্তরের সূচনাই হয়েছিল বায়ান্নতে। একাত্তরের ২৫ মার্চ 'অপারেশন সার্চলাইট'-এর নামে বর্বর পাকিস্তানি সেনাবাহিনী নিরস্ত্র ঘুমন্ত বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করে। বাঙালি জাতির স্বাধীনতার ইতিহাসে ২৫ মার্চ একটি বেদনাবিধুর অধ্যায়। পূর্ববাংলার নিয়ন্ত্রণকারী তৎকালীন পাকিস্তানি সামরিক জান্তার লক্ষ্য ছিল যতদিন বাঙালিকে তারা পূর্ণ বশীভূত করতে না পারছে, ততদিন একের পর এক 'গণহত্যা'র মধ্যদিয়ে পুরো বাঙালিকে নিশ্চিহ্ন করে যাওয়া। তাই কসাইখ্যাত তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান অত্যন্ত দম্ভভরে উচ্চারণ করেছিলেন, সব মানুষের মৃতু্য হলেও, বাংলার মাটি চাই। অপারেশন সার্চলাইট পরিচালনার রাতেই বঙ্গবন্ধুকে গ্রেপ্তার করে পাকিস্তানে নিয়ে যাওয়া হয়। গ্রেপ্তারের আগে ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। এই ঘোষণায় তিনি পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে সর্বাত্মক সংগ্রামের জন্য বাংলার জনগণকে আহ্বান জানান।

বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ছিল নিম্নরূপ:

'এটিই সম্ভবত আমার শেষ বার্তা : আজ থেকে বাংলাদেশ স্বাধীন। বাংলাদেশের জনগণের কাছে আমার আহ্বান, আপনারা যে যেখানেই থাকুন এবং আপনাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে হানাদার বাহিনীকে প্রতিরোধ করুন। যতদিন পাক হানাদার বাহিনীর শেষ সৈন্যটি বাংলাদেশের মাটি থেকে বিতাড়িত না হয় এবং যতদিন আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জিত না হয় ততদিন সংগ্রাম চালিয়ে যাবেন।'

শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনতা ঘোষণার বার্তাটি পূর্ব পাকিস্তান রাইফেলসের ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে সারা বাংলাদেশে প্রচারের জন্য মধ্যরাতের কিছুক্ষণ পরে চট্টগ্রামে প্রেরণ করা হয়। ২৬ মার্চ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণাকে অবলম্বন করে চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগ নেতা এম এ হান্নান স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন মেজর জিয়াউর রহমানও। যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার দলিলপত্রে উলেস্নখ আছে। উলেস্নখ আছে ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্রেও। গণপরিষদ ও প্রাদেশিক পরিষদের যে সব সদস্য ১০ এপ্রিলের মধ্যে কলকাতায় মিলিত হন তারা একটি প্রবাসী আইন পরিষদ গঠন করে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের খসড়া প্রণয়ন করেন। ১৭ এপ্রিল মেহেরপুর জেলার সীমান্তবর্তী বৈদ্যনাথতলায় (পরবর্তী নাম মুজিবনগর) এক অনাড়ম্বর অনুষ্ঠানে গণপরিষদ সদস্য অধ্যাপক এম ইউসুফ আলী আনুষ্ঠানিকভাবে স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। এ ঘোষণার মাধ্যমে নবগঠিত আইন পরিষদ বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঘোষণা করে। এ ঘোষণায় ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু কর্তৃক স্বাধীনতার ঘোষণাকে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুমোদন করা হয়। ঘোষণাপত্রে ২৬ মার্চ থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা কার্যকর বলে ঘোষণা করা হয়। এ ঘোষণাবলে প্রবাসী মুজিবনগর সরকার বৈধ বলে বিবেচিত হয় এবং এ ঘোষণায় মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী সবার মধ্যে চেইন অব কমান্ড স্থাপনের নির্দেশ দেয়া হয়। কোনো রকম ত্যাগ, সংগ্রাম, রাজনৈতিক আদর্শ এবং পূর্ববাংলার মানুষকে ভালোবাসা ছাড়া হঠাৎ করে কারও ঘোষণায় দেশ স্বাধীন হয়ে যায় না। এই ঐতিহাসিক সত্যকে মেনে নিতে হবে। তা ছাড়া তার ৭ মার্চের ভাষণেই স্বাধীনতা ঘোষণার সব কথা বলা হয়েছে। ওই ভাষণে অনুপ্রাণিত হয়েই বাঙালি যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে।

\হ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজারবাগে অতর্কিত আক্রমণ চালিয়ে বাঙালির রক্তে রঞ্জিত করা হয় বাংলার মাটি। এরপর সারা দেশে শুরু হয় প্রতিরোধযুদ্ধ। পাকিস্তানের শোষণ-শাসন আর বৈষম্যে অতিষ্ঠ বাঙালি জাতি এ প্রতিরোধের জন্যই উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছিল। স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার জন্য বঙ্গবন্ধুকে ২৩ বছর নিরবচ্ছিন্ন প্রতিরোধ সংগ্রাম পরিচালিত করতে হয়েছিল। আগরতলা মামলার এক নাম্বার আসামি না হলে এবং '৬৬-তে ছয় দফা ঘোষণা না করলে '৬৯-এ গণঅভু্যত্থান ও '৭০-এ নির্বাচন সম্ভব হতো না। '৭০-এর নির্বাচনে একচ্ছত্র বিজয়ী হয়ে তিনি বাংলাদেশের একমাত্র মুখপাত্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। তাই '৭০-এর নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর পাকিস্তান সরকার জাতীয় অধিবেশন ডেকেও তা বাতিল করে এবং ২৫ মার্চের কালরাতে বাঙালির বিরুদ্ধে সর্বাত্মক আক্রমণ শুরু করে। পাকবাহিনীর এ গণহত্যার হিংস্র উৎসবের মধ্যেই পরিষ্কার, তারা বাংলাকে বন্দুকের নলের জোরেই নিয়ন্ত্রণ করতে চেয়েছিল। 'জনগণের দ্বারা জনগণের সরকার পরিচালিত হবে' এ তত্ত্বে তারা মোটেও শ্রদ্ধাশীল ছিল না। কিন্তু পৃথিবীর কোনো ইতিহাসেই আজ পর্যন্ত এ রকম ভয়ঙ্কর হত্যালীলার মধ্য দিয়ে কারও কোনো একক আধিপত্য যে কায়েম করা যায় না, তা তারা বুঝেছিল বীর বাঙালির সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধের মুখোমুখি হয়ে। প্রকৃত প্রস্তাবে মার্চ মাসের সূচনায়ই শুরু হয়েছিল তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানকে একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করার চূড়ান্ত ফয়সালা। ২৫ মার্চের ওই কালরাতের ঘটনার আগেই টানা কয়েকটি তারিখ তার যুগ চিহ্নায়ক সাক্ষী হয়ে আছে।

বাঙালির সংঘবদ্ধতা রুখে দিতেই ২৫ মার্চের লোমহর্ষক ও মর্মান্তিক ঘটনা ঘটায় পাকিস্তানি সামরিক জান্তা। আর এ বেদনাবিধুর ঘটনার মধ্যদিয়ে বাঙালি আরও দ্বিগুণ শক্তি অর্জন করে। কালরাতের শোক ও ক্রোধ থেকেই বাঙালি একযোগে জেগে ওঠার প্রেরণা পায়। ফলে তৎক্ষণাৎ দেশের জনগণের মধ্যে অখন্ড পাকিস্তানের প্রতি পূর্ণ অনাস্থার প্রকাশ ঘটায়। কালরাতের পরদিন ২৬ মার্চ থেকেই স্বাধীনতার লড়াইয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে বাংলার যুবা-তরুণ এবং আবালবৃদ্ধবনিতা। শাপেবর হওয়া ২৫ মার্চের একটি কালরাতের অধ্যায়ই মোড় ঘুরিয়ে দিল বাংলার স্বাধীনতা সংগ্রামের। শোককে শক্তিতে পরিণত করে বাংলার আপামর জনগণই সূচনা করল যুদ্ধজয়ের এক ইতিহাসের। যে ইতিহাস বাঙালি জাতির ত্যাগ সংগ্রাম আর গৌরবের ইতিহাস।

এটা সর্বজন বিদিত, বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধু আমরণ সংগ্রাম করে গেছেন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশের। এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই, বঙ্গবন্ধুর জন্ম না হলে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেতাম না। কারণ বাঙালির স্বাধিকার ও স্বায়ত্তশাসন প্রশ্নে নেতৃত্ব দেয়ার মতো যোগ্য লোক পূর্ববাংলায় দ্বিতীয়জন ছিলেন না। আমাদের আজ পশ্চিম পাকিস্তানিদের গোলামি করতে হতো। আজ যে বাঙালিরা স্বাধীন দেশে রাষ্ট্রীয় উচ্চপদে আসীন আছেন, স্বাধীনভাবে কাজ করছেন, মুক্ত বাতাসে ইচ্ছামতো ঘুরে বেড়াচ্ছেন- এর কোনো সুযোগ ছিল না।

জাতির পিতাকে ছোট করা মানে নিজেকে ছোট করা দেশকে ছোট ও অমর্যাদা করা। যারা বিরুদ্ধবাদী বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ তাদেরও উচিত বঙ্গবন্ধুকে সঠিক মূল্যায়ন করা। স্বাধীনতার ৪৮ বছর তো পার হলো আর কত বিভেদ অনৈক্য। অন্তত জাতির জনককে নিয়ে সম্মিলিত কণ্ঠে একই সুর ধ্বনিত হোক। তা হলেই দেশ আরও এগিয়ে যাবে। একটি উন্নত জাতি হিসেবে আমরা বিশ্বের বুকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারব।

সালাম সালেহ উদদীন : কবি, কথাসাহিত্যিক, সাংবাদিক ও কলাম লেখক

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
Error!: SQLSTATE[42000]: Syntax error or access violation: 1064 You have an error in your SQL syntax; check the manual that corresponds to your MariaDB server version for the right syntax to use near 'and id<41742 and publish = 1 order by id desc limit 3' at line 1