ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা চালিয়ে ২৪ জনকে হত্যার ঘটনায় বিএনপি নেতা তারেক রহমানসহ ৪৯ আসামির সাজা হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত জানা যাবে ১০ অক্টোবর।
হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দায়ের করা আলোচিত এ দুই মামলায় যুক্তিতকর্ শুনানি শেষে ঢাকার এক নম্বর দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন রায়ের এই দিন ঠিক করে দেন।
রায়ের তারিখ ঘোষণার সময় আদালত বলেন, ‘দীঘির্দন পর এ মামলার বিচারের শেষদিকে আমরা এসেছি। এ মামলার বিচারে কোনো ফঁাক রাখার চেষ্টা করিনি। কখনো কারও অধিকারবঞ্চিত করিনি। বিচারকাজ শেষ হচ্ছে। আমাকে একটা সিদ্ধান্তে আসতে হবে।’
আদালত বলেন, ‘এত দিন ধরে এখানে বিচারকাজ পরিচালনা করে এ আদালত বড় আপন হয়ে গেছে। এ আদালতের জানালা, ফ্যান সবকিছু বড় চেনা। আরেকদিন এখানে আসতে হবে। সেদিন আমি রায় ঘোষণা করব। আসামিরাও বিচারকাজে সহায়তা করেছেন।’
আসামিদের মধ্যে কারাগারে থাকা বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সাবেক উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু, এনএসআইর সাবেক মহাপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরীসহ ২৩ জনকে যুক্তিতকের্র শুনানির শেষ দিনে ঢাকার নাজিমুদ্দিন রোডে দ্রæত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিশেষ এজলাসে হাজির করা হয়।
শুনানি শেষে রায়ের দিন ঠিক করে দিয়ে সাবেক তিন আইজিপি আশরাফুল হুদা, শহুদুল হক ও খোদাবক্স, খালেদা জিয়ার ভাগ্নে সাইফুল ইসলাম ডিউকসহ জামিনে থাকা আট আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নিদের্শ দেন বিচারক।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান, বিএনপির চেয়ারপারসনের সাবেক রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জনকে পলাতক দেখিয়েই এ মামলার বিচারকাজ চলে।
রাষ্ট্রপক্ষের ৫১১ সাক্ষীর মধ্যে মোট ২২৫ জন এ মামলায় আদালতে সাক্ষ্য দেন। ১২১
কাযির্দবস যুক্তিতকর্ শুনানি শেষে মামলা দুটি রায়ের পযাের্য় এল।
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে দলীয় কাযার্লয়ের সামনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা হয়েছিল।
হামলায় আওয়ামী লীগের তৎকালীন মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জন নিহত এবং কয়েকশ জন আহত হন।
সন্ত্রাসবিরোধী ওই সমাবেশে প্রধান অতিথি শেখ হাসিনার বক্তব্য শেষ হওয়ামাত্র গ্রেনেড হামলা ও গুলিবষর্ণ শুরু হয়। এতে অল্পের জন্য শেখ হাসিনা প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচÐ শব্দে তার শ্রবণশক্তি নষ্ট হয়।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার আমলে এই মামলার তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার নজির পরে তদন্তে উঠে আসে।
বিগত তত্ত¡াবধায়ক সরকার আমলে এই মামলার অভিযোগপত্রে জঙ্গি নেতা মুফতি আব্দুল হান্নানসহ ২২ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় সিআইডি।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাসীন হওয়ার পর রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনে অধিকতর তদন্তে আসামির তালিকায় যোগ হন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমানসহ আরও ৩০ জন।
আওয়ামী লীগ নেতারা বলে আসছেন, শেখ হাসিনাকে হত্যা করে দলকে নেতৃত্বশূন্য করতেই এই হামলা হয়েছিল এবং তাতে প্রত্যক্ষ মদদ ছিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত জোটের শীষর্ নেতাদের।
অন্যদিকে বিএনপির অভিযোগ, অধিকতর তদন্তে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তাদের দলের জ্যেষ্ঠ ভাইস চেয়ারম্যান তারেককে মামলাটিতে জড়ানো হয়েছে।