শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১

খান ও রানী বাহাদুরের সংসারে নতুন অতিথি

চকরিয়া (কক্সবাজার ) সংবাদদাতা
  ০২ জুলাই ২০১৮, ০০:০০
বাচ্চার সঙ্গে রানী বাহাদুর

কক্সবাজারের চকরিয়ার ডুলাহাজারাস্থ শেখ মুজিব সাফারি পাকের্ বনগরু দম্পতি খান বাহাদুর ও রানী বাহাদুরের সংসার আলোকিত করে জন্ম নিয়েছে একটি পুরুষ বাচ্চা। বাংলাদেশে সম্পূণর্ভাবে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে যাওয়া এই স্তন্যপায়ী প্রাণীর একটি বাচ্চা বদ্ধ পরিবেশে জন্ম নেওয়ায় পাকর্ কতৃর্পক্ষ বেশ খুশি। দেশে বনগরু সংরক্ষণে এটিকে তারা মাইলফলক বলছে। এ নিয়ে পাকের্ বনগরুর সংখ্যা দঁাড়াল তিনটিতে।

বনগরুরা গৌর নামে পরিচিত এই প্রাণীটিকে ভারতীয় বাইসনও বলা হয়। বাংলাদেশে অনেকে এটিকে গয়াল বলে ভুল করলেও গয়াল আলাদা প্রাণী। বনগরুর বৈজ্ঞানিক নাম ‘বস গোরাস’। এর আদিনিবাস বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণপূবর্ এশিয়ার গভীর বনে। বাংলাদেশে এটি অতি বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। আন্তজাির্তক প্রকৃতি সংরক্ষণ ইউনিয়ন (আইইউসিএন) ১৯৮৬ সালে বিশ্বজুড়ে এটিকে ‘লাল তালিকার’ (বিপন্ন প্রাণীর তালিকা) অন্তভুর্ক্ত করে।

ডুলাহাজারা শেখ মুজিব সাফারি পাকর্ কতৃর্পক্ষ জানিয়েছে, খান বাহাদুর ও রানী বাহাদুরের সংসারে জন্ম নেয়া বাচ্চাটি পাকের্র দশর্নাথীের্দর জন্য বাড়তি আনন্দের খোরাক হবে। শাবকটিকে লালন-পালনে বিশেষ যতœ নেয়া হচ্ছে। একসপ্তাহ হয়েছে এটি জন্ম নেয়। জানা গেছে, পঁাচ বছর আগে রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলা থেকে পাচারের সময় সেনাবাহিনীর একটি দল বনগরু পুরুষ প্রজাতির একটি বাচ্চা উদ্ধার করে। এরপর আইনি প্রক্রিয়া শেষে এটি হস্তান্তর করা হয় চকরিয়ার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পাকের্। এখানে অতিথি হিসেবে আসার পর পাকর্ কতৃর্পক্ষ এটির নামকরণ করে খান বাহাদুর হিসেবে। কয়েক বছর একাকী সময় পার করার পর গত বছর খান বাহাদুরের সঙ্গী হিসেবে স্থান করে নেয় স্ত্রী প্রজাতির আরেকটি বনগরু। এটির নাম দেয়া হয় রানী বাহাদুর হিসেবে। স্ত্রী লিঙ্গের এই বনগরু পাকের্ হস্তান্তর করেছিলেন বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা। মূলত তিনি লালনপালন করার জন্য এটি সংগ্রহ করেছিলেন। পরে তিনি এটিকে হস্তান্তর করেন পাকের্।

পাকের্র বন্যপ্রাণী পরিতোষক মো. দিদারুল আলম কলেন, ‘পাকের্ আসার পর থেকে সঙ্গীবিহীন পুরুষ বনগরু খান বাহাদুরের একেবারেই মনমরা অবস্থায় দিন কাটত। চার বছরের মাথায় যখন বিপরীত লিঙ্গের একজন সঙ্গী পায় তখন থেকেই ফুরফুরে মেজাজি হয়ে ওঠে খান বাহাদুর। এরপর প্রজননে আসে সফলতা।

পাকের্র বন্যপ্রাণী চিকিৎসক মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বনগরু দম্পতি খান বাহাদুর ও রানী বাহাদুরের সংসারে জন্ম নেয়া বাচ্চাটি সম্পূণর্ সুস্থ ও সবল রয়েছে। বাচ্চাটিকে নিয়মিত পরিচযার্ করা হচ্ছে। বাচ্চাটি মায়ের দুধ খেয়েই বেড়ে উঠছে এবং এভাবেই প্রায় সাত মাস পযর্ন্ত মায়ের দুধেই বেড়ে উঠবে বাচ্চাটি।

শেখ মুজিব সাফারি পাকের্র সহকারী তত্ত¡াবধায়ক মো. মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমাদের দেশ থেকে এই বন্যপ্রাণী সম্পূণর্ভাবে বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে চলে গেছে।

বলতে গেলে বনের মধ্যে এখন আর এই বনগরুর তেমন দেখা মেলে না।

এই অবস্থায় পাকের্র আবদ্ধ পরিবেশে বিলুপ্ত প্রায় বনগরুর প্রজনন একটি মাইলফলক।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে