তার নাম মোহাম্মদ আব্দুলস্নাহ (২৯), গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে। পাঁচ ভাই-বোনের মধ্যে তিনি সবার ছোট।
স্থানীয় সময় রোববার রাতে ব্রম্নকলিনের ইস্ট ১০৫ ও এভিনিউ ডি-তে এক নারী চালকের গাড়িচাপায় তিনি মারা যান বলে জানায় নিউইয়র্ক পুলিশ।
পুলিশ জানায়, ট্রেজার লগিং (২২) নামের ওই নারী মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছিলেন। এ সময় তার চার বছর বয়সি ছেলে সঙ্গে ছিল। একপর্যায়ে তিনি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে আব্দুলস্নাহর ই-সাইকেলকে চাপা দেন।
ঘটনার পরপরই আব্দুলস্নাহকে স্থানীয় ব্রম্নকডেল হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানে চিকিৎকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ঘটনায় গাড়িচালককে আটক করেছে পুলিশ এবং ৫০ হাজার ডলার বন্ডে জামিন দিয়েছে ব্রম্নকলিনের ক্রিমিনাল কোর্ট। চালক লগিংসের বিরুদ্ধে হত্যা ও মদ্যপ অবস্থায় শিশুর জীবন বিপন্ন করে গাড়ি চালানোর অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
লগিংসের অ্যাটর্নি জামাল জনশন আদালতকে জানান, গাড়ি চালানোর সময় তার মক্কেল মদ্যপ ছিলেন। গাড়িটি তিনি কেনেন মাত্র তিন দিন আগে। গাড়ির ইঞ্জিন বেল্ট ও ব্রেকে সমস্যা ছিল।
ম্যানহাটানের হারলেমে বসবাস করেন আব্দুলস্নাহর চাচা ট্যাক্সিচালক বেলাল হোসেন। তিনি জানান, ব্রম্নকলিনের ইস্ট নিউ ইয়র্কে একটি বাসায় চার বাংলাদেশি বন্ধুর সঙ্গে থাকতেন আব্দুলস্নাহ। উবারের ডেলিভারিম্যান হিসেবে কাজ করতেন তিনি। বেলাল হোসেন বলেন, 'আব্দুলস্নাহ রাজনৈতিক কারণে ২০১৭ সালে মেক্সিকো হয়ে যুক্তরাষ্ট্রে এসেছিলেন। সে সময় টেক্সাসের ডিটেনশন সেন্টারে কাটাতে হয় ৪ মাস। রাজনৈতিক আশ্রয় প্রার্থনা করেছিলেন আব্দুলস্নাহ। ইতোমধ্যে তা মঞ্জুর হয়েছে। শীঘ্র গ্রিনকার্ডের আবেদন করার কথা ছিল।'
আব্দুলস্নাহর রুমমেট আরিফুর রহমান সবুজ ও খোকন উলস্নাহ জানান, তারা নিজেদের অবস্থান জানতে 'জেনলি' নামের একটি অ্যাপস ব্যবহার করেন। রোববার রাতে ওই অ্যাপে তারা দেখেন, আব্দুলস্নাহ একটি স্থানে দুই ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অবস্থান করছেন। এতে তারা চিন্তিত হয়ে পড়েন। এরপর তারা তাকে ফোন করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে তারা সেখানে চলে যান। সেখানে পুলিশ তাদের জানায়, আব্দুলস্নাহ মারা গেছে।
বুধবার বিকালে ব্রম্নকলিনে আব্দুলস্নাহর জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। আব্দুলস্নাহর লাশ শুক্রবার সন্ধ্যায় জন এফ কেনেডি (জেএফকে) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ত্যাগ করেছে ঢাকার উদ্দেশে। নোয়াখালীর গ্রামের বাড়িতে তাকে দাফন করা হবে বলে জানান প্রবাসীরা।