শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১
বুয়েটে আবরার হত্যা

কর্তৃপক্ষের সতর্কতার ঘাটতিকে দোষারোপ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর

যাযাদি রিপোর্ট
  ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:০০
আপডেট  : ১২ অক্টোবর ২০১৯, ০০:২২
শুক্রবার রাজধানীর তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল -যাযাদি

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, বুয়েট প্রশাসনের আরেকটু কেয়ারফুল (সতর্ক) থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো আবরার হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা নাও ঘটতে পারত। শুক্রবার দুপুরে তেজগাঁওয়ে বাংলাদেশ টেক্সটাইল বিশ্ববিদ্যালয়ের নবনির্মিত প্রধান ফটক উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা বলেন তিনি। আর কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে যাতে আবরার হত্যার মতো কোনো ঘটনা না ঘটে সেজন্য প্রশাসনের প্রতি কী নির্দেশনা দেবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন না ডাক দিলে পুলিশ ভেতরে ঢোকে না, আপনারা সেটা জানেন। এ জায়গাটিতে বুয়েট কর্তৃপক্ষের আরেকটু সতর্ক থাকার দরকার ছিল। আরেকটু সতর্ক থাকলে হয়তো এ ধরনের ঘটনা নাও ঘটতে পারত। ভবিষ্যতে প্রশাসন ছাত্রদের প্রতি আরও নজর দেবে, দায়িত্ববান হবে বলে মনে করি।' মন্ত্রী বলেন, 'আবরার হত্যাকান্ড যারা সংঘটিত করেছিল এদের প্রায় সবাইকে আমরা ধরে ফেলেছি। এ পর্যন্ত ১৭ জনকে আটক করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ১ জন ১৬৪ ধারায় (স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন)। আমি আগেও বলেছি আজও বলছি, অত্যন্ত দ্রম্নততার সঙ্গে এ মামলার চার্জশিট দেয়া হবে, আশা করছি তদন্ত সংশ্লিষ্ট সংস্থা দ্রম্নততম সময়ের মধ্যে মামলা তদন্ত সম্পন্ন করবে।' 'সাথে সাথে আমি আহ্বান রাখব, এ ধরনের হত্যাকান্ড, এ ধরনের মেধাবী ছাত্র যারা কি-না আমাদের ভবিষ্যৎ, যে প্রজন্মকে নিয়ে আমরা অহঙ্কার করি, এ ধরনের ঘটনায় যাতে তারা হারিয়ে না যায়, যারা এ কাজটি করেছেন, এর মতো খারাপ কাজ, এর মতো গর্হিত কাজ এর আগে আর ঘটেনি।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'এর আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে আরও অনেক ঘটনাই ঘটেছে, আমরা সানি হত্যাও দেখেছি। কিন্তু এ হত্যাকান্ডটি সবার হৃদয়ে দাগ কেটেছে। আমি আশা করব আমাদের ছাত্রসমাজ এ ধরনের ঘটনা আর দেখবে না। যাতে না ঘটে সেজন্য তারাও সজাগ থাকবে।' আবরার হত্যার পেছনে মূল কারণ কী জানতে চাইলে বলেন, 'এ খুনের পেছনে কারণটা কী এটা আমাদের দেখতে হচ্ছে। যারা ধরা পড়ছে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তদন্ত চলছে, এর পেছনে মোটিভটা কী জানার চেষ্টা চলছে। এমনি এমনি একজন আরেকজনকে হত্যা করবে এটা যেমন বিশ্বাসযোগ্য নয়, এর পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে, আরও কিছু উদ্দেশ্য আছে। এর সবই আমরা খতিয়ে দেখছি।' স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'আমরা মনে করি, বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা পড়াশোনা করতে এসেছে, তারা সবাই মেধাবী। এ ধরনের মেধাবীরাই এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। তার ভেতরে নিশ্চয়ই কোনো কারণ রয়েছে। সে কারণগুলো উদঘাটন করে নিখুঁত ও তথ্যসমৃদ্ধ চার্জশিট দিতে চাই।' উলেস্নখ্য, ভারতের সঙ্গে সাম্প্রতিক কয়েকটি চুক্তি নিয়ে ফেসবুকে মন্তব্যের সূত্র ধরে শিবির সন্দেহে আবরারকে ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে বুয়েট ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ৬ অক্টোবর রাতে আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন বলে বুয়েটের শেরে বাংলা হলের শিক্ষার্থীদের অভিযোগ। ওই ঘটনায় বুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেলসহ গ্রেফতার ১৩ জনকে রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সাংগঠনিক তদন্তের ভিত্তিতে বুয়েট ছাত্রলীগের ১১ জনকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করার কথা জানিয়েছে। ঘটনার পর সোমবার থেকেই আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। হত্যার ঘটনার প্রায় ৪০ ঘণ্টা পর উপাচার্য অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম প্রকাশ্যে আসেন। উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সামনে না আসায় ক্ষোভ জানান শিক্ষার্থীরা। পরে মঙ্গলবার বিকেল ৫টার মধ্যে উপাচার্য সশরীরে এসে এ বিষয়ে জবাবদিহি না করলে কঠোর কর্মসূচি দেয়ার হুশিয়ারি দেন তারা। এরপর সন্ধ্যা ৬টার পর উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সামনে আসেন। শিক্ষার্থীদের সামনে এসে তোপের মুখে পড়েন উপাচার্য। শিক্ষার্থীরা ভিসিকে বলেন, 'এটা একটা খুন, আপনাকে স্বীকার করতে হবে'।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

উপরে